প্রতিবেদন: ভয়ঙ্কর কাণ্ড! পুণের সেই বিলাসবহুল পোর্শে গাড়ির নাবালক চালককে বাঁচাতে তার রক্তের নমুনাই পরিবর্তন করে দেওয়া হাসপাতালে। আর এই অপকীর্তির ২ নায়ক হলেন ওই হাসপাতালেরই দুই চিকিৎসক। নাবালক চালক দুর্ঘটনার সময় মত্ত অবস্থায় ছিল না— তা প্রমাণ করতেই সাসুন হাসপাতালের ২ চিকিৎসক এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে তদন্তে। এমন একজনের রক্ত ওই নাবালকের রক্তের নমুনা বলে চালানো হয়, যিনি আদৌ মদ্যপ নন। আর অভিযুক্ত কিশোরের রক্তের নমুনা ফেলে দেওয়া হয় ডাস্টবিনে। কীর্তিমান ২ চিকিৎসককেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জেনেছে, চিকিৎসকদের দিয়ে রক্তের নমুনা বদলের নেপথ্যে কিশোরের প্রভাবশালী পরিবারই।
আরও পড়ুন-মোদি সরকারের রোষানলে দেশের গর্ব সেই পায়েল
আসলে মদ্যপ অবস্থায় ১৬০ কিমিরও বেশি গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে ২ তরুণ-তরুণী ইঞ্জিনিয়ারকে পিষে মেরে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত নাবালককে নির্দোষ প্রমাণ করতে একের পর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তার ব্যবসায়ী বাবা এবং দাদু। সাজানো হচ্ছে বিভিন্ন প্লট। দিনকয়েক আগেই চাপ দিয়ে পরিবারের এক গাড়ি চালককে দিয়ে পুলিশের সামনে বলতে বাধ্য করা হয়েছিল— ওই কিশোর নয়, দুর্ঘটনার সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন ওই চালকই। কিন্তু জালিয়াতি ধরা পড়ে যাওয়ায় নাবালকের দাদুকে গ্রেফতার করে পুলিস। পোর্শে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন না থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল নাবালকের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী বাবাকেও। গ্রেফতার করা হয়েছিল দুর্ঘটনার আগে ওই নাবালক যে দু’টি বারে বসে আকণ্ঠ মদ্যপান করেছিল তার মালিক এবং কর্মচারীকেও। এবার পুলিশের জারে দুই চিকিৎসক। ধৃতরা হলেন চিকিৎসক অজয় টাওয়ারে ও শ্রীহরি হারলার। অজয় ফরেনসিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান। তাঁর নির্দেশেই এই অপকর্ম করেন শ্রীহরি।
আরও পড়ুন-জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি কেজরিওয়ালের
গত ১৯ মে পুণেতে ওই নাবালকের বেপরোয়া পোর্শে গাড়ির ধাক্কায় ২ বাইক আরোহী আনিস দুদিয়া এবং তাঁর বান্ধবী অশ্বিনী কস্তারের মৃত্যু হয়। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে ২ ইঞ্জিনিয়ারকে। গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে ছিল মদ্যপ ওই কিশোর। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও শুধুমাত্র নাবালক হওয়ার অভিযোগে তাকে কয়েকঘণ্টার মধ্যেই জামিন দিয়ে দেয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড। মহারাষ্ট্রের গেরুয়া শাসকগোষ্ঠীর এক বিধায়কের নির্দেশে থানায় তাকে বিরিয়ানি এবং পিৎজা খাইয়ে জামাই আদর করা হয় বলেও অভিযোগ। নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সর্বত্র। কিশোরের দাদুর সঙ্গে অন্ধকার জগতের যোগাযোগও এখন প্রাধান্য পাচ্ছে তদন্তে। অভিযুক্ত কিশোরের দাদুর বিরুদ্ধে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ছোট রাজনের সঙ্গে যোগসাজশ করে খুনের অভিযোগ রয়েছে।