প্রতিবেদন: অদ্ভুত বৈপরিত্য। বিহার, ওড়িশা, রাজস্থান, গুজরাত-সহ বিভিন্ন রাজ্যে তীব্র দাবদাহের দাপটে যখন একের পর এক মৃত্যুর খবর আসছে তখন ভয়াবহ বন্যার কবলে অসম। প্রবল বন্যায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। বর্ষার শুরুতেই কার্যত জলের তলায় রাজ্যের ১১ জেলা। চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬০টি গ্রাম। গৃহহারা ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। বন্যা প্রতিরোধ এবং ত্রাণে রাজ্যের গেরুয়া সরকারের ভূমিকায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। সমালোচনায় মুখর বিরোধী শিবিরও। প্রশ্ন একটাই, প্রথম বর্ষাতেই যদি এমন বাঁধভাঙা বন্যার কবলে চলে যায় রাজ্যের একটা বড় অংশ, তাহলে ঘোর বর্ষায় কী অবস্থা হবে রাজ্যের? জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনেই রাজ্যের নদী ও উপনদীগুলোর জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্রুত। বিভিন্ন জেলা ও নতুন এলাকা প্লাবিত করছে। সবচেয়ে ভয়াবহ বরাক ও মধ্য অসমের পরিস্থিতি।
আরও পড়ুন-ফের ভাইজান সলমনকে খুনের চক্রান্ত! খামারবাড়ির কাছে ধৃত ৪ বন্দুকবাজ
অসমের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের তথ্যের দাবি, এই মুহূর্তে রাজ্যের ১১টি জেলায় বন্যার ব্যাপক দাপট চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৩ লক্ষ মানুষ। কপিলি নদী, বরাক নদী, কাটাখাল ও কুশিয়ারা নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে কাছাড়ে। করিমগঞ্জ জেলার বন্যায় শিশু-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। হাইলাকান্দি জেলায় শিশু-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিম কার্বি আংলং জেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে হাইলাকান্দি জেলার একজন এবং শিলচর জেলার রামকৃষ্ণ নগরে একজনের মৃত্যু হয়। কার্বি আংলং, ধেমাজি, হোজাই, কাছাড়, করিমগঞ্জ, ডিব্রুগড়, নগাঁও, হাইলাকান্দি, গোলাঘাট, পশ্চিম কার্বি আংলং এবং ডিমা-হাসাও জেলাগুলি ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। শুধু গ্রাম নয়, শহরাঞ্চলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন্যায়। তিনটি জেলা শহর বন্যারও কবলে পড়েছে। কামরূপ, কাছাড় ও জোড়হাট জেলা শহর বন্যার কবলে। কামরূপের উত্তর গুয়াহাটি, কাছাড়ের শিলচর এবং জোড়হাটের পূর্ব জোড়হাট বন্যার কবলে পড়েছে। শহরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা প্রায় ১০,০০০। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিলচর শহর। অসমের মানুষের অভিযোগ, রাজ্যের বিজেপি সরকারের অপদার্থতার মূল্য চোকাতে হচ্ছে তাঁদের।