প্রতিবেদন: চিনের মতো বৃহৎ আয়তনের ভূখণ্ডও অচিরে ধ্বংস হতে পারে। সংকটের মুখে বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ। পরিবেশ দূষণের জেরে হারিয়ে যাচ্ছে পায়ের তলার মাটি, পানের যোগ্য জল থেকে খাদ্যশস্য। হাতে সময় মাত্র দশ বছর। বাঁচার উপায় খুঁজছে গোটা বিশ্ব। এই বিপদের কথা মাথায় রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ১০০ কোটি হেক্টর জমি বাঁচানোর উদ্যোগ নিল রাষ্ট্রসংঘ (United Nations)। ঠিক হয়েছে, এই কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে মরুভূমির দেশ সৌদি আরব। ২০২৪ সালের শুরুতে প্রবল বন্যায় বিধ্বস্ত হয় বিশ্বের অন্যতম তেল উৎপাদনকারী এই দেশ। সেই দুর্যোগের ধাক্কা লাগে সৌদির জিডিপি-তে। বন্যার ঘটনা প্রমাণ করে দেয়, আধুনিকীকরণ, বিপুল অর্থের জোগান থাকা সত্ত্বেও প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়। একমাত্র পথ প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থান করে পরিবেশ রক্ষা। ২০২৪ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এমন একটি বিষয়কে বেছে নেওয়া হয়েছে যার উপর দাঁড়িয়ে পরিবেশের ভিত। বরাবর জলস্তর বেড়ে যাওয়া, বায়ুদূষণ, অরণ্য রক্ষা নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম এবার যে মাটির উপর অরণ্য দাঁড়িয়ে, যে মাটির উপর জলভাগ রয়েছে, সর্বোপরি যার উপর দাঁড়িয়ে মানব সভ্যতা, সেই মাটি সংরক্ষণেই প্রাধান্য দিয়েছে। ২০২৪ পরিবেশ দিবসের থিম ভূমি সংরক্ষণ এবং মরুভূমিকরণ ও খরা প্রতিরোধ। রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাটিতে এত পরিমাণ বিষ বিভিন্ন ভাবে মিশছে যাতে ধ্বংস হচ্ছে গাছপালা, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে চাষের জমি। এমনকী মাটি থেকে ধুয়ে গিয়ে সেই বিষ মিশছে সমস্ত জলভাগে। এর পরিণতি ব্যাপক পরিমাণ জলজ প্রাণীর মৃত্যু থেকে একটা বড় অংশের জল হয়ে পড়ছে পানের অযোগ্য। ঘাটতি পড়তে চলেছে পানীয় জলে। সেই সঙ্গে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে ব্যাপক খাদ্য সংকটের। যার সরাসরি প্রভাব তৃতীয় বিশ্বের দেশের উপর পড়তে চলেছে। পরিসংখ্যান বলছে প্রায় ১০০ কোটি হেক্টর মাটি ইতিমধ্যেই দূষিত হয়ে গিয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়তে চলেছে প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের উপর।
আরও পড়ুন- মোদি ও বিজেপির বিরুদ্ধে জনাদেশ, ২৭ দলের বৈঠক নয়াদিল্লিতে
রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ কর্মীদের মতে, এই মুহূর্ত থেকে সেই মাটি শোধনের কাজ শুরু করলে আগামী কয়েক বছরে দূষণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে আটকানো যাবে। তারপরেও কাজ থাকবে দূষিত মাটিকে পুনরায় তার নিজের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া। এই লক্ষ্যে সবার আগে এগিয়ে এসেছে সৌদি আরব, যারা সম্প্রতি মাটি দূষণের প্রত্যক্ষ প্রভাবে কতটা অর্থনৈতিক ক্ষতি, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত বিভাগ ২০২১ সাল থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর পরিবেশ পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে।