প্রতিবেদন: বিশ্বজুড়ে যুদ্ধবিরতির দাবি উঠলেও তা মানতে নারাজ ইজরায়েল। প্যালেস্টাইন থেকে হামাসকে নির্মূল না করে যুদ্ধবিরতি সম্ভব নয় বলে জেদ ধরে আছে নেতানিয়াহুর দেশ। আর এই সংঘাতের আবহে গাজা ভূখণ্ড কার্যত জনশূন্য হয়ে যাওয়ার পথে। ইজরায়েলি সেনার দাপটে ইতিমধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। মুহুর্মুহু হামলা চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘর থেকে স্কুল- হাসপাতাল। অসামরিক মানুষের মৃত্যু ও বিরামহীন ক্ষয়ক্ষতির পরিস্থিতিতে এবার ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে আনল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সংস্থার তরফে সাফ জানানো হয়েছে, গাজা ভূখণ্ডে বিনা চিকিৎসায় এবং অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে কমপক্ষে ৮ হাজার প্যালেস্টাইনি শিশু।
আরও পড়ুন-ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন মাইকিংয়ে সতর্কতা খোলা হয়েছে শিবির
এদের সকলেরই বয়স পাঁচ বছর বা তারও কম। এই অমানবিক তথ্য সামনে আসতেই নতুন করে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। মুমূর্ষু শিশুরা সংকটাপন্ন অবস্থাতেও প্রয়োজনীয় খাদ্য-ওষুধ ও চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। অসংখ্য শিশু শুধুমাত্র দু’দেশের যুদ্ধের কারণে অকালে প্রাণ হারাতে চলেছে। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আবেদন জানিয়েছে, অবিলম্বে অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিতে হবে। তেল আভিভের কাছে আবেদন জানিয়ে হু বলেছে, মানবিক ত্রাণ পাঠানোর কাজে যেন বাধা তৈরি করা না হয়। হু-র সতর্কবার্তা, একেবারে বিপর্যয়ের কিনারায় পৌঁছে গিয়েছে গাজা। দ্রুত যুদ্ধবিরতি না করলে শিশুমৃত্যুর মিছিল দীর্ঘতর হবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও ইজরায়েলের টনক নড়বে কি না তা নিয়ে সন্দেহ।
সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের এক পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেখানে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত চার বছরে সারা পৃথিবীতে যত শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে এবছর গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েলি সেনার হামলায় নিহত প্যালেস্টাইনি শিশুর সংখ্যা। এর পাশাপাশি অনাহার এবং অপুষ্টিজনিত কারণেও বহু শিশুর মৃত্যু হয়েছে সেখানে। ইতিমধ্যে সেই সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজারে পৌঁছে গিয়েছে। দুই রাষ্ট্রের সংঘাতে অসহায়ের মতো মৃত্যু উপত্যকায় অপেক্ষমাণ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।