প্রতিবেদন: লোকসভা ভোট মিটতেই এবার দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে বাবরি মসজিদের ইতিহাস মুছে ফেলার অভিযোগ উঠল কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং-এর দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইতে অযোধ্যার ইতিহাস সংক্রান্ত তথ্যে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। আর সেই ইতিহাস পরিবর্তন করতে গিয়েই একেবারে বাবরি মসজিদের নাম বই থেকে বাদ দিয়ে দিল মোদি সরকার। সূত্রের খবর, আগে যেখানে অযোধ্যার ইতিহাস চার পাতা জুড়ে লিপিবদ্ধ ছিল, সেখানে চার পাতায় বর্তমানে এনসিইআরটি সেই বিষয়কে লিপিবদ্ধ করেছে দুটি পাতায়। মোদি সরকারের এমন ইতিহাস-বিকৃতির বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা।
আরও পড়ুন-যৌন হেনস্থার অভিযোগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে দায়ের হল জিরো এফআইআর
বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের মুখে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করলেও লোকসভার ফলাফলে চোখ রাখলে দেখা যায় অযোধ্যাতেই লজ্জার ফল হয়েছে বিজেপির। স্থানীয় ফৈজাবাদ আসনে গোহারা হেরেছেন মোদি-যোগীর দলের প্রার্থী। এই নিয়ে ঘরে- বাইরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বিজেপিকে। আর ভোট মিটতেই এবার অযোধ্যার ইতিহাস থেকে সোজা বাদ দিয়ে দেওয়া হল বাবরি মসজিদ পর্বই। সম্প্রতি এনসিইআরটি দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ের নয়া সংস্করণ সামনে এসেছে। সেখানে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, বইয়ের যে অযোধ্যার বিবাদের অংশ রয়েছে সেখানে এক লাইনও উল্লেখ করা হয়নি বাবরি মসজিদের নাম। অন্যদিকে আগের থেকে অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে অযোধ্যার ইতিহাসের এই অংশ। কাটছাঁট করে মাত্র দুই পাতার মধ্যে অযোধ্যার ইতিহাস তুলে ধরে দায় ঝেড়েছে গেরুয়া শিবির। পাঠ্যবইতে শুধুমাত্র বাবরি মসজিদকে ‘তিন গম্বুজ সম্বলিত নির্মাণ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-আবাস যোজনায় ১১ লক্ষ মানুষকে বাড়ি দেবে রাজ্য
শুধুমাত্র অযোধ্যার ইতিহাসই নয়, গুজরাতের সোমনাথ থেকে অযোধ্যার উদ্দেশে বিজেপি যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রথযাত্রা করেছিল সেই কথাও উল্লেখ করা হয়নি পাঠ্যবইয়ে। এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে করসেবকদের তাণ্ডবের কথাও। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ধ্বংস হয়েছিল বাবরি মসজিদ। তারপর যে সংঘর্ষ বেধেছিল তাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সেই সময় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলি উল্লেখ করা হয়নি পাঠ্যবইতে। আগেই খবর মিলেছিল, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে কিছু সংশোধন করতে চলেছে এনসিইআরটি। তবে কী সংশোধন করা হচ্ছে সেই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি তখন। কিন্তু নয়া সংস্করণ সামনে আসার পর অযোধ্যার ইতিহাস সংশোধন করতে গিয়ে একেবারে বাবরি মসজিদের প্রসঙ্গ ও ধ্বংসের কলঙ্কিত অধ্যায় বাদ দিয়ে দেওয়া হল পাঠ্যবই থেকে।