বারবার ট্রেন দুর্ঘটনা। মৃত্যুমিছিল। সিগনালিংয়ের সমস্যা আর নয়তো মৃত চালকদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বারবার দুর্ঘটনার দায় এড়াচ্ছে রেল। রেল ব্যবস্থার সর্বনাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। রেলের যাত্রী নিরাপত্তা বলে কিছুই নেই। একেরপর এক ট্রেন দুর্ঘটনায় এবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগের দাবি তুললেন বিরোধীরা। ফাঁসিদেওয়ায় রাঙাপানির কাছে সোমবার সকালে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন (Kangchenjunga Express Accident) দাঁড়িয়ে থাকার সময় পিছন থেকে একটি মালবাহী ট্রেন এসে ধাক্কা মারে। অসমর্থিত সূত্রে খবর, মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫।
এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র রিজু দত্ত কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, অশ্বিনী বৈষ্ণবকে পদত্যাগ করতে হবে!! ২০২১৬ সালে মোদির বিজেপি দ্বারা পৃথক রেল বাজেট বাতিল করা হয়েছিল এবং যে কোনও রেল বিপর্যয়ের জবাবদিহিতা হ্রাস টানা হয়েছিল…বছরের পর বছর, একের পর এক রেল দুর্ঘটনা (Kangchenjunga Express Accident), বহু মৃত এবং আহত, তবুও জবাবদিহি নেই…অযোগ্য অশ্বিনী বৈষ্ণব রেলমন্ত্রী হিসাবে গদিতে বসে রয়েছেন।”
রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে লিখেছেন,”১৯২৪ সালে সাধারণ বাজেট থেকে রেলওয়ে বাজেট আলাদা করা হয়। এটি বাতিল করার পর ২০১৬ সালে সংসদে জবাবদিহিতা কমানো হয়। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাজেট আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। কিন্তু এটি আলোচনার বিষয় হিসাবে অবহেলিত। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তার জন্য আমার প্রার্থনা রইল।”
আরও পড়ুন- কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ১৫, আহত ৬০, চালু হেল্পলাইন নম্বর
প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ভয়াবহ দুর্ঘটনা। দ্রুত উদ্ধারকাজ চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি দেখছেন। রাজ্য সরকার, প্রশাসন যার যা করার তা সব করছে। পাশাপাশি যথাযথ তদন্ত দরকার। রেল বলছে, মালগাড়ির চালক নাকি দেখতে পাননি। কিন্তু মালগাড়ির চালকের তো চরম পরিণতি হয়েছে। তিনি কী সাক্ষী দেবেন, কোত্থেকে এসে সাক্ষী দেবেন ? ফলে এটা সিগনালিং ব্যবস্থার ত্রুটি নাকি অন্যকিছু তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। রেল ব্যবস্থার সর্বনাশ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। রেলে যাত্রী সুরক্ষা বলে আর কিছুই নেই। এই সব নিয়ে তৃণমূল সরব হবে। তবে এখনও উদ্ধারকাজ চলছে।”
রাজ্যসভার আরও এক সাংসদ সাগরিকা ঘোষ কেন্দ্রকে তুলোধনা করে লিখেছেন, “আরেকটি ট্রেন দুর্ঘটনা। মোদির মন্ত্রীদের ব্যর্থতার জন্য নাগরিকরা তাদের জীবন দিয়ে মূল্য দিচ্ছেন। রেল যাত্রীদের জন্য মৌলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়ে এখনও বুলেট ট্রেন এবং অন্যান্য কল্পনার প্রতিশ্রুতি। অনেক বেশি প্রাণ যাচ্ছে, যথেষ্ট হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে তার জমা দিতে হবে।”
তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য জানিয়েছেন “ফুটো মেঝে ঢাকতে রঙিন কার্পেট আর কতদিন? গরিব, মধ্যবিত্তের ভরসা সাধারণ ট্রেনগুলি ক্রমশ মৃত্যুপুরী হয়ে উঠছে! নিরাপত্তা শিকেয়.. এদিকে ফুটো ঢাকতে রোজ বন্দে ভারত দেখানো হচ্ছে! স্টেশনে বানানো হচ্ছে শপিং মল। অপদার্থ কেন্দ্রীয় সরকারের বদান্যতায় সাধারণ রেলযাত্রী হিসেবে খুবই আতঙ্কিত বোধ করছি।”