প্রতিবেদন: অল্প লোক দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নেওয়ার প্রবণতাই কি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেকে আনছে রেল দুর্ঘটনা। তেমনই মনে করছেন অনেক ট্রেন চালক। চাকরিরত অবস্থায় তাঁরা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে না পারলেও অবসরের পরে কিন্তু অনেকেই খোলাখুলিভাবেই সামনে আনছেন সমস্যাটা। প্রশ্ন তুলেছেন রেলের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে ৬-৭ ঘণ্টা অতিরিক্ত কাজ অনেক চালকই শারীরিক এবং মানসিকভাবে নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ। শুধু চালকদেরই নয়, অন্যান্য টেকনিকাল কর্মীদেরও একই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন-জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দায়সারা কাজ, দু বছরেই অচল আহিরণ সেতু
স্বাভাবিকভাবেই যাত্রী-সুরক্ষায় তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে এই সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজধানী এক্সপ্রেসের অবসরপ্রাপ্ত লোকো পাইলট বিজয় বাহাদুর সিং। নিয়ম অনুযায়ী, আট থেকে দশ ঘণ্টা কাজ করবেন মালগাড়ির লোকো পাইলটরা। অভিযোগ উঠছে, তাঁদের দিয়ে ১৬-১৭ ঘণ্টা রেক চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে। শীতের সময় কোনওভাবে ধকলটা চালকরা সামলে নিলেও, গরমকালে রীতিমতো শরীর ভেঙে পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে রেল মন্ত্রক এবং রেল বোর্ডের বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও, লোকো পাইলট নিয়োগের বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। ফলে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সোমবার বিজয়বাবু বলেন, ওভার ডিউটি করার কারণ অন্য। আট ঘণ্টার বেশি কাজ করানো উচিত নয়, এটাই নিয়ম। কিন্তু চাপে পড়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১০ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টা ট্রেন চালিয়ে যেতে হচ্ছে। বারবার আর্জি জানানো হয়েছে লোক নিতে। কিন্তু নিয়োগ হচ্ছে না। স্টাফের সংখ্যা সেফটি ক্যাডারে লোকো পাইলট, গার্ড, স্টেশন মাস্টার, কেবিন মাস্টার অনেক কম আছে। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে হইহই। তারপর আর কিছু হয় না। রেল অবিলম্বে এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ না করলে বেড়েই চলবে দুর্ঘটনার প্রবণতা।