শিয়ালদহে দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, রেলের সুরক্ষা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ফিরহাদের

Must read

মৃত্যুকে ছুঁয়ে অবশেষে রাত তিনটে কুড়ি মিনিটে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস (Kanchenjunga Express)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো সোমবার রাতে স্টেশনে যাত্রীদের সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং স্নেহাশিস চক্রবর্তী। স্টেশনে আসার পর যাতে নির্বিঘ্নে যাত্রীরা বাড়ি ফিরতে পারেন তার সব ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের অধীনস্থ রেল কী করছে? রেল ব্যবস্থা ভারতবর্ষের লাইফ লাইন। মোদি সরকারের ১০ বছর হয়ে গেল। অথচ রেল এখনও অভিভাবকহীন। ১০ বছর লাগে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস লাগাতে? প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

রাঙাপানি স্টেশনের কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস (Kanchenjunga Express) এবং মালগাড়ির দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০। সোমবার রাত সাড়ে আটটার কিছু সময় পরে ওই লাইনে আপ ট্রেন চালানো শুরু হয়। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই উত্তরবঙ্গে রওনা দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তোলেন ‘কবচ’ নিয়ে। তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই রেলের তরফ যেভাবে মৃত চালকের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছে তাতে পরিষেবার গাফিলতি আর কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতার ছবিটা স্পষ্ট। মাঝরাতেই শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছে যান ফিরহাদ হাকিম ও স্নেহাশিস চক্রবর্তী। এরপর রাত ৩টে ২০ নাগাদ শিয়ালদহে ঢোকে সেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। তাঁদের আশ্বস্ত করেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। যাত্রীদের গাড়িতে এবং বাসে করে নির্বিঘ্নে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। শুধু শিয়ালদহ স্টেশনেই নয়, স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাসে ওঠার পরও সেখানে গিয়ে প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেন দুই মন্ত্রী। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাসে এবং গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। ১৫০ থেকে ২০০ জনকে বাসে করে পাঠানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মেয়র বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যখন নিজে রেলমন্ত্রী ছিলেন, রেলের একটা আলাদা বাজেট হতো, রেলের আলাদা গুরুত্ব ছিল। রেল ভারতবর্ষের লাইফ লাইন। সারা ভারতকে জুড়ে রেখেছে রেল। এখন রেল মনে হচ্ছে অভিভাবকহীন, ছন্নছাড়া।” অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস কেন লাগানো হচ্ছে না তাই নিয়েও সরব মন্ত্রী। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই স্টেশন চত্বরের বাইরে যেখানে বাস টার্মিনাস রয়েছে সেখানে ছোট গাড়ি, মাঝারি গাড়ি, পর্যাপ্ত বাস রাখা হয়েছে। যাঁরা ট্রেনে আসছেন, তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্য সরকার নিজে নিয়েছে। শুধু সরকারি গাড়ি নয়, বেসরকারি অপারেটর্সদের সঙ্গেও কথা বলা আছে। যা যা লাগবে সবটাই করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন-শেয়ার বাজারে দুর্নীতি! সেবি বিজেপিকে রক্ষা করে, তদন্ত চাই, দাবি বিরোধীদের

দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। বুধবার থেকে, মোটরম্যান এবং রাঙাপানি স্টেশনের এসএমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হবে। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ডাউন লাইনে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে বলে খবর মিলেছে। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে আরপিএফ ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সকালে নির্ধারিত সময় থেকে মিনিট দশ দেরিতে ছেড়েছে আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস।

Latest article