প্রতিবেদন : ২৬ ফেব্রুয়ারি ইতালির (Italy) ক্রোটন উপকূলে ডুবে গিয়েছিল একটি নৌকা। ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৭০ জন মানুষের। ওই নৌকারই যাত্রী ছিলেন মেদা হোসাইনি নামে আফগানিস্তানের ১৭ বছরের এক তরুণী। মেদার স্বপ্ন ছিল নভোচারী হবে। এক আফগান তরুণীর কাছে মহাকাশ যাওয়ার কথা ভাবা হয়তো অনেকের কাছেই দিবাস্বপ্ন বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মেদার কাছে এটা নিতান্তই স্বপ্ন ছিল না। মেদা ছিল লক্ষ্য পূরণে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
২০২১ সালে তালিবান আফগানিস্তানের (Afghanistan) দখল নেওয়ার পর মেদার পরিবার পালিয়ে গিয়েছিল ইরানে। দেশ ছাড়লেও মেদা তার নভোচারী হওয়ার স্বপ্ন ছাড়েনি। মহাকাশ যেতে গেলে প্রয়োজন পড়াশোনা করা। সেজন্য সে ইউরোপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তাই মেদা ইরান থেকে স্থলপথে তুরস্কে গিয়ে পৌঁছয়। ইরান থেকে তুরস্কে যাওয়ার সময় মেদার পায়ে গুলি লেগেছিল। ১০ দিন তার পায়ের ভিতর আটকে ছিল ওই গুলি। অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে মেদা পৌঁছেছিল তুরস্কে। সেখান থেকেই সে ইউরোপ যাবে বলে ঠিক করে। মেদার এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার মাকে উদ্বেগে ফেলেছিল। অনেক চেষ্টা করেও তিনি মেয়েকে আটকাতে পারেননি। বরং মেদাই তার মাকে বুঝিয়ে রাজি করেছিল। আত্মবিশ্বাসী মেদাকে শেষ পর্যন্ত আর বাধা দেননি মা মাহতাব ফরোগ। আরও প্রায় ২০০ জন মানুষের সঙ্গে ২২ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক থেকে এক নৌকায় ইতালির (Italy) উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল মেদা। চারদিন পর নৌকা পৌঁছয় ইতালির উপকূলে। চারদিন পর মেদা ফোনে তার মাকে জানায়, আর আধ ঘণ্টার মধ্যেই তারা তীরে পৌছবে। সে ভালই আছে। এটাই ছিল মেদার সঙ্গে তার মায়ের শেষ কথা।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্তরে পুরষ্কার পেল বাংলার এই দুই হাসপাতাল
মেদার মা জানিয়েছেন, মেয়ে যখন ফোন করছিল তখন নৌকার ইঞ্জিন এবং সাগরের ঢেউয়ের শব্দও তিনি শুনেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই নৌকাটি ইতালির ক্রোটন উপকূলে ডুবে যায়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মেদার দেহের এখনও খোঁজ মেলেনি। এই মুহূর্তে মেদার মা অপেক্ষা করছেন অলৌকিক কোনও খবর শোনার আশায়।