প্রতিবেদন : আজ একুশে ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আক্ষরিক অর্থে এই দিনটি হল ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্বের বহুভাষিকতাকে উন্নয়নের দিশা দেখানো। এই লক্ষ্যেই বিশ্ব জুড়ে আজ পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো প্রথম এই দিনটি পালনের কথা জানায়। ২০০২ সালে জাতিসংঘে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাসের পর তাদের সাধারণ পরিষদ একুশে ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবসের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ১৬ মে ২০০৭ তারিখে।
আরও পড়ুন-সুপ্রিম কোর্টে থাপ্পড় খেল বিজেপি, চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচনে জয়ী আপ প্রার্থীই
তার পর থেকেই যদিও বিশ্বের প্রতিটি মানুষের ব্যবহৃত মুখের বা মায়ের ভাষার সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় এই দিনটি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের মর্যাদা পেয়ে আসছে তবে মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের এই ধারণাটি আসলে বাংলাদেশের উদ্যোগেই প্রথম সামনে আসে। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাভাষার স্বীকৃতির জন্য বাংলাদেশের মানুষের অনন্য মরণপণ লড়াই বিশ্বের ইতিহাসে শ্রদ্ধায় স্মরণীয়। সেই সূত্রেই এই দিনটির ভাষা দিবসের মর্যাদালাভের প্রসঙ্গ ওঠে বাংলাদেশ থেকেই এবং তা কার্যত মেনে নেওয়ায় বাংলাভাষারই সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। এর ফলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বিভিন্ন কূটনৈতিক নীতির ক্ষেত্রে প্রাচীর তুললেও বাঙালির মাতৃভাষা দিবস পালনে কখনওই তা বাধা হয়ে উঠতে পারেনি। সীমান্তের এপারে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও এ দেশের অসম, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা এবং কেন্দ্রশাসিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ভারতীয় বাঙালিরাও পরম ভালবাসায় এই দিনটিকে বাংলাভাষার জন্য মন থেকে উৎসর্গ করেন। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে থাকা বাঙালি এই দিনে তাদের প্রাণের বাংলায় গান গায়, বাংলার মুখ দেখে তাদের কথায়, আলাপে, চলনে-বলনে। এই দিনটি বিশেষ করে আপামর বাঙালির কাছে ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি। বুধবার সকাল থেকে দুই বাংলার সীমান্তে নো ম্যানস ল্যান্ডে তাই দেখা যাবে বাঙালির ভাষা উৎসব। রাজ্যের সর্বত্র নানা বর্ণময় অনুষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়বে বাংলাভাষার মিঠে সুর- গানে, কবিতায়, আলাপচারিতা ও বন্দনায়।