প্রতিবেদন : চিকিৎসকেরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে নিজেদের কর্তব্য ভুলে আন্দোলন সংঘটিত করেছিল। ডাক্তারদের সেই কাজে এবার রাশ টানল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। চিকিৎসকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে তারা জারি করল একগুচ্ছ নির্দেশিকা।
কমিশন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে এমন ধরনের প্রচার চালাচ্ছেন চিকিৎসকেরা যা আদতে চিকিৎসা-নীতি-বিরোধী। ফলে সেই কাজে রাশ টানা দরকার। এই মর্মে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে খর্ব করা হল চিকিৎসকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের হাত। সম্প্রতি বাংলায় আরজি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকেরা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেই মূলত আন্দোলন সংগঠিত করার কাজ করেছেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে কমিটি গঠন করেছেন। নিরাপত্তা-সংক্রান্ত মামলাতেই চিকিৎসকদের একাধিক বেনিয়মও উঠে এসেছে। এবার সেইসব ক্ষেত্রেও সচেতন মেডিক্যাল কমিশন।
আরও পড়ুন-কুলতলিতে ধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত ১, পকসো আদালতে কাল সাজা ঘোষণা
কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে কোনও চিকিৎসকই কোনও রোগীর থেকে প্রশংসা আদায় করে ভিডিও প্রকাশ করতে পারবেন না। রোগীর অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে ভিডিও পাবলিশ করাকে চরম অনৈতিক বলে দাবি করেছে কমিশন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে চিকিৎসক হিসাবে নিজেদের প্রচার করতে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে নিজেদের পেজের রিচ বাড়িয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। এবার সেই অভ্যাসে লাগাম টানল মেডিক্যাল কমিশন। এই রাজ্যে আরজি কর নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়েও অনেক ক্ষেত্রেই এ-ধরনের উদাহরণ উঠে এসেছে যেখানে নতুন পেজ তৈরি করে আন্দোলনের প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন চিকিৎসকেরাই।
আরও পড়ুন-ইউরোপের ভরসা ইসরোতে! সৌরপর্যবেক্ষণকারী প্রোবা-৩ পাড়ি দিল মহাকাশে
সরাসরি চিকিৎসকদের বাণিজ্যিক মঞ্চ হিসাবে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারের উপরও রাশ টেনেছে কমিশন। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে চিকিৎসক হিসাবে রেজিস্ট্রেশন যাঁদের রয়েছে তাঁরা সরাসরি কোনও চিকিৎসা-সংক্রান্ত জিনিস, ওষুধ বা চিকিৎসা পরিষেবার বিজ্ঞাপন করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে কোনও বিশেষ চিকিৎসা যেমন, সিটি স্ক্যান বা পেট সিটি স্ক্যানের মতো চিকিৎসার প্রচার করতে পারবেন না। সেই সঙ্গে রোগীদের সরাসরি বা ঘুরপথে কোনওভাবে পরামর্শ দেওয়ার কাজও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারে এমন কোনও কাজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে যা চিকিৎসকদের নৈতিকতা-বিরোধী। অর্থাৎ ন্যাশানাল মেডিক্যাল কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী রাষ্ট্র যেমন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দিকটির দায়িত্ব নেবে, তেমনই চিকিৎসকদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।