সৌমালি বন্দ্যোপাধ্যায়: দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে শারদোৎসবের প্রস্তুতি তুঙ্গে। এরই মধ্যে হাওড়ার হাওড়ার সংখ্যালঘু পরিবারের শিল্পীদের হাতে সেজে উঠছেন দেবী দুর্গা। প্রতিমার কেশসজ্জা কাজে নিযুক্ত রয়েছেন হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের পার্বতীপুর ও কমলাপুর গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশের মানুষ। শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, সারা দেশেই দেবীর কেশসজ্জার একটা বড় অংশ আসে এই দুই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রাম থেকে।
আরও পড়ুন-বয়কট করলেন সাত সাংসদ, গেরুয়া প্রশিক্ষণ শিবির
এখানকার সংখ্যালঘু মানুষদের হাতেই দেবীর কেশসজ্জা তৈরি হয়। বলাই বাহুল্য, মায়ের মূর্তির অন্যতম আকর্ষণ হল কেশবিন্যাস। আর যা মূলত জগৎবল্লভপুরের পার্বতীপুর ও কমলাপুরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরাই তৈরি করে থাকেন। তাঁদের হাতে তৈরি রং-বেরঙের কোঁকড়ানো সুন্দর কেশবিন্যাসে সেজে ওঠেন উমা। বহু বছর ধরেই এই ট্র্যাডিশন সমানে চলে আসছে। এবছরও যার অন্যথা হয়নি। এই দুই গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের অধিকাংশ মানুষই বছরের পর বছর ধরে তৈরি করে আসছেন প্রতিমার কেশ। এই মুহূর্তে এখানকার শিল্পীদের কর্মব্যস্ততা তুঙ্গে। সাদা, কালো, মেরুন প্রভৃতি রঙের পরচুলা এখন এখানে ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে। এখান থেকেই পরচুলা কুমোরটুলিতেও যায়।
আরও পড়ুন-ব্যাপক বিক্ষোভে অভিযোগের আঙুল কর্তৃপক্ষের দিকেই, মেট্রোয় এসি বিভ্রাটে নাকাল যাত্রীরা
এখানকার শিল্পীরা জানালেন, কুমোরটুলি সহ শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতি বছরই পুজোর আগে পাড়ি দেয় তাঁদের তৈরি পরচুলা। প্রাচীন পদ্ধতিতেই ৪৫-৫০ বছর ধরে এখানকার মানুষরা বংশপরম্পরায় পরচুলা তৈরি করে আসছেন। ধর্ম যার যার। উৎসব সবার। তার প্রকৃত ছবি এই শারদোৎসব। কারণ শারদোৎসবে দেবী দুর্গার কেশসজ্জার মূল কারিগরই হলেন জগৎবল্লভপুরের দুই গ্রামের প্রায় ৩০০ সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অবদান না থাকলে শারদোৎসবই কার্যত অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।