মনমোহন সিংয়ের প্রয়াণে নীরব রুপোলি দুনিয়ার একাংশ, সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

ইতিমধ্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে কংগ্রেসের রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই এক্স হ্যান্ডেলে এবার সরব তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

Must read

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং (Manmohan Singh)। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে কংগ্রেসের রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই এক্স হ্যান্ডেলে এবার সরব তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। নাম না নিয়েই এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ক্রীড়া এবং চলচ্চিত্র দুনিয়ার ব্যক্তিত্বদের এমন মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি এইমসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মনমোহন সিং। দেশে অর্থনৈতিক সংস্কার এবং উদারনীতির পথকে প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে দলমত নির্বিশেষে ভারতের সব রাজনীতিকের থেকে ও আন্তর্জাতিক মহল থেকেও শোকবার্তা এসেছে। তবে নীরব দেশের কিছু তথাকথিত ‘আইকন।

আরও পড়ুন-মধ্যপ্রদেশে ১৪০ ফুট গভীর কুয়োয় পড়ে যাওয়া দশ বছরের শিশু উদ্ধার

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে এদিন লিখেছেন, “তথাকথিত ‘আইকন’দের অনেকেরই জাতীয় স্তরের কোনও প্রসঙ্গ চুপ থাকা রেওয়াজ হয়ে গিয়েছে। ভারত তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক ডঃ মনমোহন সিংকে হারিয়েছে, যার অগাধ জ্ঞান এবং দূরদর্শীতা দেশের অর্থনীতিকে নতুন আকার দিয়েছে। ১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক সংস্কারের স্থপতি হিসাবে, তার অবদানগুলি ভারতকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতির পথে নিয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক স্পেকট্রাম জুড়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। কিন্তু স্পোর্টস এবং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিশিষ্ট ব্যক্তি যারা প্রায়শই ‘রোল মডেল’ হিসাবে গণ্য হয় তাদের সম্পূর্ণ নীরবতা দেখে আমি মর্মাহত। এই আচরণ নির্দ্বিধায় তাদের অগ্রাধিকার, দায়িত্ব এবং সততা সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করে। মনে হচ্ছে এই নীরবতা সরকারী প্রতিক্রিয়ার ভয়ে, কারণ জাতীয় ইস্যুতে নীরব থাকা এই তথাকথিত ‘আইকনস’-এর অনেকের আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

তিনি আরও লেখেন, ”উদাসীনতার এই ধরণ নতুন নয়। কৃষক বিক্ষোভ, সিএএ-এনআরসি আন্দোলন এবং মণিপুরে সংকটের সময় এই একই ব্যক্তিরা নীরব ছিলেন। এই ধরনের সমালোচনামূলক সমস্যার মুখে তাদের নীরবতা সাধারণ নাগরিকদের সংগ্রাম থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। তারা জনসাধারণের প্রশংসা লাভ করে তাদের সম্পদ এবং খ্যাতি গড়ে তুলেছে, তবুও যখন জাতির তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তখন তারা ক্ষুদ্রতম নৈতিক অবস্থান নিতেও কুন্ঠা বোধ করে।”

আরও পড়ুন-”কাশ্মীরের জঙ্গিকে দু’দিন ধরে ট্র্যাক করেছি আমরা”, সাংবাদিক বৈঠকে ডিজি

নতুন বছরের প্রসঙ্গ তুলে তিনি লেখেন, ”আমরা একটি নতুন বছরে প্রবেশ করছি। এবার আমরা রোল মডেল হিসাবে কাকে দেখব সেটা পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। আসুন আমরা তাদের প্রাধান্য দেওয়া বন্ধ করি যারা তাদের সাহস ও দায়বদ্ধতা এড়িয়ে নিজেদের কেরিয়ারকে প্রাধান্য দেয়। পরিবর্তে, আসুন আমরা তাদের সম্মান করি এবং সমর্থন করি যারা সত্যিই আমাদের জাতি ও সমাজে অবদান রাখে – আমাদের মুক্তিযোদ্ধা, সৈনিক এবং ব্যক্তি যারা বৃহত্তর ভালোর জন্য আত্মত্যাগ করে। আসুন আমাদের শক্তি এবং সংস্থানগুলিকে অর্থপূর্ণ কার্যকলাপে চালিত করি, একটি শিশুর শিক্ষাকে সমর্থন করা, একটি অভাবী পরিবারকে খাওয়ানো, বা সংগ্রামরত কাউকে উন্নীত করার দিকে মনোনিবেশ করি। ১৪০ কোটি ভারতীয়ের শক্তি অপরিসীম। আমরা যাদের আইকন হিসাবে উন্নীত করি তাদের কাছ থেকে আমাদের সততা এবং জবাবদিহি দাবি করার সময় এসেছে। এই নববর্ষ ২০২৫ আমাদের সম্মিলিত চেতনায় একটি পরিবর্তন চিহ্নিত করুক- যারা ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র এবং জাতির কল্যাণের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন তাদের মূল্যায়নের দিকে অগ্রসর হতে হবে। জয় হিন্দ।”

 

Latest article