ধর্মকে (Religion) হাতিয়ার করেই বিনা অনুমতিতে সকলের অজান্তে সরকারি জমিতে তৈরী হয়ে গেল গোটা একটি মন্দির। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হতভম্ব সরকারি আধিকারিকেরা। স্বপ্নাদেশ পেয়েই উত্তরাখণ্ডের (UttaraKhand) হিমাবহের কাছে সরকারি জমিতে একটি মন্দির নির্মাণ করে ফেললেন স্বঘোষিত এক ধর্মগুরু। সকলের নজর এড়িয়ে অবৈধ ভাবে সরকারি জায়গায় এমন বড়সড় এক মন্দির কীভাবে তিনি নির্মাণ করে ফেললেন এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। স্বঘোষিত ধর্মগুরু যোগী চৈতন্য আকাশ এর বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরে ১৬,৫০০ ফুট উচ্চতায় সুন্দেরধুঙ্গা হিমবাহের কাছে সরকারি জমি দখল করে একটি মন্দির নির্মাণের অভিযোগ নিয়ে কৌতূহল তুঙ্গে।
আরও পড়ুন-গেরুয়া রাজ্যে পুলিশি হেফাজতে আদিবাসী ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে নগ্ন প্রতিবাদ
যোগী চৈতন্য আকাশের যদিও দাবি তিনি নাকি ভগবানের থেকে পাহাড়ের মধ্যে কোলাহল মুক্ত এক পরিবেশে মন্দির তৈরির আদেশ পেয়েছিলেন। সূত্রের খবর, মন্দির নির্মাণ করার পরিকল্পনা করে বাবা গ্রামের বাসিন্দাদেরও রাজি করিয়েছিল। স্বপ্নে দেবী ভগবতী আবির্ভূত হয়েছেন এবং তিনি তাঁকে দেবীকুণ্ডে মন্দির তৈরির আদেশ দিয়েছেন বলে গ্রামবাসীদের বোঝানো হয়। বিশ্বাসের ভিত্তিতেই সেই কুণ্ড এখন স্থানীয় বাসিন্দা ও ভক্তদের কাছে এক পবিত্রস্থান। কিন্তু দেখা গিয়েছে এই পবিত্র স্থানকে নিয়মিত স্নানের জায়গা বানিয়ে ফেলেছিলেন এই ধর্মগুরু। মাঝেমধ্যেই তাঁকে স্নান করতে দেখা যেত। সকলের অলক্ষ্যে অবৈধ ভাবে কীভাবে মন্দির নির্মাণ হল সেই নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কাপকোটের সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট অনুরাগ আর্য এই বিষয়ে জানান খুব তাড়াতাড়ি বনবিভাগের আধিকারিক, পুলিশ ও রেভেনিউ অফিসাররা দেবী কুণ্ড পরিদর্শনে যাবেন ও বেআইনিভাবে অধিকৃত এই জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যোগী চৈতন্যের বিরুদ্ধেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্লেসিয়ার রেঞ্জের রেঞ্জার এনডি পাণ্ডে জানান বেআইনিভাবে জমি দখল করে মন্দির তৈরির বিষয়টি কিছুদিন হল তারা জানতে পেরেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছে একটি দল। স্বাভাবিকভাবেই জমি দখল করে মন্দির নির্মাণের ঘটনায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নজরদারির অভাব নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন-বন্ধ রংপো থেকে আন্ধেরি যাওয়ার রাস্তা, বিপাকে পর্যটকেরা
প্রসঙ্গত, ওই অঞ্চলের মানুষের কাছে তিনি রীতিমত শ্রদ্ধেয় এবং গণ্যমান্য এক ব্যক্তিত্ব। স্থানীয়দের কাছে ‘বাবা’ হিসেবে পরিচিত। স্থানীয়রা জানিয়েছে তিনি সকলকে জানান ঈশ্বরের স্বপ্নাদেশ পেয়ে উত্তরাখণ্ডে মন্দির তৈরি করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, প্রতি ১২ বছরে পূণ্যার্থীরা কুণ্ড দর্শনে যান। কিন্তু এই ‘বাবা’ গ্রামবাসীদের ভুল বুঝিয়ে এখানে মন্দির নির্মাণ করে পুরোনো ঐতিহ্যের অপমান করেছেন বলেই মনে করছেন সকলে।