বিহারের (Bihar) নালন্দা থেকে রাজস্থানে (Rajasthan) পড়তে যান সতেরো বছরের হর্ষরাজ শঙ্কর৷ ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কোটার একটি কোচিং ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন। তবে মঙ্গলবার রুমের বাইরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ হস্টেলের কেয়ারটেকার একটি লোহার রডে তাঁর মৃতদেহ ঝুলতে দেখেন। পুলিশে খবর দিলে তারা এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান। ছেলেকে পড়াশোনার জন্য কোটায় পাঠিয়ে এখন শোকস্তব্ধ পরিবার। জানান পাঠানো হয়েছিল পড়তে কিন্তু এখন তার মৃতদেহ নিতে ফিরে এসেছেন তারা। রাজস্থানের ডবল ইঞ্জিন সরকারকে নিশানা করে এদিন সেই ছাত্রের পরিবার জানান এটা সরকারের গালে থাপ্পড়।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে ৪ সন্তানকে হত্যা করে আত্মঘাতী মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি
এদিনের ঘটনার পর সেই ছাত্রের ঘর তল্লাশি করছিল পুলিশ। কিন্তু কোটার জহরনগরের কোচিং সেন্টারের হস্টেল থেকে কিছুই খুঁজে পায়নি পুলিশ। পাওয়া গিয়েছে একটি চিরকুট যেখানে লেখা ছিল ‘সরি’। দীর্ঘদিন ধরেই রাজস্থানে ভজনলাল শর্মার সরকার একের পর এক থাপ্পড় খেলেও কোন পরিবর্তন নেই। জানুয়ারি মাস থেকেই এই নিয়ে কোটার কোচিং ইন্সটিটিউটগুলিতে ন’নম্বর ছাত্রের মৃত্যু হল। তাঁদের মধ্যে ছ’জন জেইই এবং তিনজন নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গত বছর এখানে ১৭ জন পড়ুয়া আত্মঘাতী হন৷ তেইশে সেই সংখ্যা ছিল ২৬। কেন এভাবে বারংবার আত্মঘাতী হচ্ছেন পড়ুয়ারা তার কোন সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। কী করলে এমন অকাল-আত্মহনন ঠেকিয়ে রাখা যাবে সেই নিয়ে তর্ক-বিতর্কই সার, সমাধান নেই। হস্টেলের প্রতিটি রুমের ফ্যানে ‘অ্যান্টি-সুইসাইড ডিভাইস’ লাগানো রয়েছে।
আরও পড়ুন-টাকার লোভেই বাঘাযতীনে মাকে খুন ছেলের, চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে
জানা গিয়েছে তারপরেও হস্টেলে কেয়ারটেকার লোকেশ শর্মা হোস্টেলের পড়ুয়াদের কার্যকলাপের দিকে নজরদারি চালাতেন। সরকারি নিয়ম মেনে ‘গেটকিপার ট্রেনিং’-ও পাস করেছিলেন তিনি। এতকিছুর পরেও অদ্ভুত ভাবে নালন্দার হর্ষরাজ আত্মঘাতী হয়েছেন। শারীরিক কসরতের জন্য তিনি লোহার রড জোগাড় করে আনেন এবং তারপর রুমের বাইরে সেটাতে ঝুলে পড়েন। দু’বছর আগে অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১১ মে, উমেশ ভার্মা নামে ১৬ বছরের এক পড়ুয়া আত্মহত্যা করে। কুনহারিতে একটি হস্টেলের ঘরে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উমেশের দেহ উদ্ধার হয়। ১০ই মে থেকে একাধিকবার ফোন করেও ছেলেকে যোগাযোগ করতে পারেননি বাবা-মা। অবশেষে এক আত্মীয়কে হস্টেলে পাঠিয়ে ছেলের ঘরে ঢুকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উমেশের মা সেদিন বলছিলেন, ‘এরা সকলে মিলে ছেলেকে মেরে ফেলেছে।’ প্রশ্ন এখানেই, কে বা কারা এই পড়ুয়াদের মৃত্যুর জন্য দায়ী? আত্মহত্যা কোটায় কোনও নতুন ঘটনা নয়। প্রতিরোধের জন্য কোটা জুড়ে নানান হেল্পলাইন নম্বর লেখা ‘বিজ্ঞাপন’ থাকলেও একের পর এক ঘটনা সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।