মহাকাশের এক অনন্ত বিস্ময় হল ব্ল্যাক হোল (Black Hole)। ব্ল্যাক হোলের গঠন ও চরিত্র নিখুঁত ভাবে জানতে সারা পৃথিবীজুড়ে এই মুহূর্তে কাজ চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। প্রতিনিয়ত তাদের হাতে আসছে নিত্যনতুন তথ্য। বিজ্ঞানীরা আগেও দাবি করেছিলেন ব্ল্যাক হোল মহাকাশে বিপুল সুনামি তৈরি করে ফেলতে পারে। এবার এক অতিকায় কৃষ্ণগহ্বরের পাশে বিশাল জলাশয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেল। ১২০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে সেই জলাশয় ঘিরে তৈরি হয়েছে কৌতূহল।
আরও পড়ুন-উর্দি পরে করা যাবে না ‘রিল’, বিজ্ঞপ্তি লালবাজারের
জানা গিয়েছে, এটি একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের পাশে অবস্থিত। APM 08279+5255 নামের ওই কৃষ্ণগহ্বর সূর্যের চেয়ে ২ হাজার কোটি বড়। সেখান থেকে আলো পৃথিবীতে পৌঁছতে ১২০০ কোটি বছর লাগে। নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির এক বিজ্ঞানী, ম্যাট ব্র্যাডফোর্ডের নেতৃত্বে একটি দল এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অনেকদিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছে। ব্র্যাডফোর্ড মনে করছেন জল মহাবিশ্ব জুড়েই বিস্তৃত আছে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়েও সেখানে জল ছিল। এই জল সরবরাহের মাত্রা অপরিসীম, যা পৃথিবীর সমস্ত মহাসাগরের আয়তনের আনুমানিক ১৪০ ট্রিলিয়ন গুণ। এই বিশাল জলাধারটি একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের কাছে অবস্থিত, যা আমাদের সূর্যের চেয়ে প্রায় ২০ বিলিয়ন গুণ বেশি।
ব্র্যাডফোর্ডের বিজ্ঞানীদের দল, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি পৃথক গোষ্ঠীর সাথে, APM 08279+5255 এবং এর কেন্দ্রীয় ব্ল্যাক হোল, যা আশেপাশের বস্তুকে টেনে নিয়ে যায় সেই নিয়ে নিজেদের কাজ করছেন। ব্ল্যাক হোল পদার্থের আশেপাশের গ্যাস এবং ধুলোকে উত্তপ্ত করে, অণুতে ভরা এমন একটি অঞ্চল তৈরি করে যা আগে কখনও এত দূর থেকে সনাক্ত করা যায়নি। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই বিশেষ কোয়াসারের চারপাশের পরিবেশে জলীয় বাষ্প আবিষ্কার করেছেন। বাষ্প শত শত আলোকবর্ষ জুড়ে একটি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। এক আলোকবর্ষের সমান অর্থাৎ প্রায় ছয় ট্রিলিয়ন মাইল। যদিও এখানে উপস্থিত গ্যাসটি পৃথিবীর মান অনুসারে পাতলা। তবে আমাদের মিল্কিওয়ের অনুরূপ অঞ্চলের তুলনায় এটি অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ এবং ঘন। মাইনাস ৬৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার সাথে, গ্যাসটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তুলনায় প্রায় ৩০০ ট্রিলিয়ন গুণ কম ঘন। তা সত্ত্বেও, এটি সাধারণ ছায়াপথগুলিতে পাওয়া গ্যাসের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গরম এবং শতগুণ বেশি ঘন। এই ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি এই অঞ্চলটিকে একটি অনন্য আবিষ্কার করে তুলেছে।