জিনা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো (Durga puja) ইউনেস্কোর হেরিটেজ মুকুট পরে প্রকৃত অর্থেই আন্তর্জাতিক। প্রতি বছরই শারদোৎসব বাংলা তথা দেশ ছাড়িয়ে এখন বিদেশের নানা প্রান্তে বঙ্গীয় মনন ও জীবনে খুশির দোলা দিয়ে যায়। আনন্দ দ্বিগুণ হয় যখন কলকাতার প্রতিমা পৌঁছে যায় সুদূর ক্যালিফোর্নিয়ায়, কিংবা মন ভাল করা খবর হয়ে শিরোনামে উঠে আসে আসানসোলের আদিবাসী মহিলাদের হস্তশিল্পের পসরা নিয়ে মার্কিন মুলুকে পাড়ির উদ্যোগ। এবারই যেমন আটলান্টার দুর্গাপুজোর মণ্ডপ সেজে উঠছে আসানসোলের বিভিন্ন এলাকার আদিবাসী মহিলাদের হস্তশিল্প-শৈলীতে।
আরও পড়ুন-চালু নতুন অ্যাপ, বাংলাদেশে এবার বাড়ছে পুজোর অনুদান
পুজো (Durga puja) মানে শুধুই চারদিনের আনন্দ নয়, বরং বছরের বাকি সব ক’টা দিন প্রাণভরে বাঁচার রসদ সংগ্রহ করে নেওয়া। অর্থনৈতিক উজ্জীবন। সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান। বাঙালিরা যেখানেই থাকুক তার শিকড়ের টান তীব্র হয়ে ওঠে দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে। কর্মসূত্রে বা প্রয়োজনে বাংলা ছেড়ে বিদেশে থাকা বঙ্গভাষীরা শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলার নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতিকে প্রবাসের মাটিতে তুলে ধরার আগ্রহ দেখান। এভাবেই চলতি বছর আসানসোলের আদিবাসীদের হাতে তৈরি দেওয়াল অঙ্কন, প্রতিমার সাজসজ্জা, চালচিত্র, গয়নার ডিজাইন পৌঁছে গিয়েছে সুদূর আটলান্টায়। খুশি শিল্পীরা। রীতিমতো উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে সব কাজ শেষ করেছেন। আসানসোলের ফুড এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির কর্ণধার চন্দ্রশেখর কুণ্ডু জানিয়েছেন, আমেরিকার আটলান্টা শহরে বসবাস করেন শান্তনু কর ও ইন্দ্রাণী কর। জন্মসূত্রে কলকাতার বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে আমেরিকা নিবাসী। গত চারবছর ধরে সেখানেই দুর্গাপুজো করছেন এই দম্পতি। এবারের থিম ‘প্রান্তিক নারীদের জন্য স্বনির্ভরতার অঙ্গীকার’। তাঁদের পুজো মণ্ডপ সেজে উঠবে আসানসোলের আদিবাসীদের হাতের তৈরি চালচিত্র ও গয়নার ডিজাইনে। তাঁদের এই কাজকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে তুলতে সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন চিত্রশিল্পী সুমিতকুমার গঙ্গোপাধ্যায় ও চন্দ্রিমা রায়চৌধুরী।
আদিবাসী মহিলাদের হাতে তৈরি এইসব জিনিস আমেরিকার আটলান্টা শহরে পাড়ি দেওয়ায় গর্বিত প্রান্তিক এলাকার শিল্পীরাও। তাঁরা বলছেন, শুধু একটু বেশি উপার্জনের আশা নয় বরং তাঁদের হাতে তৈরি সৃজনশীল কাজ বাংলার অহংকার হয়ে বিদেশের মাটিতে সবার মন জয় করবে এটাই পরম প্রাপ্তি।