প্রতিবেদন : বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য (Abhijit Ganguly- Bikash Bhattacharya) এবার শহরের এক অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে। এক মঞ্চে দু’জনের উপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহল এবং আইনজীবী মহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। মূল কারণ, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একাধিক মামলা চলছে এবং বহু মামলার আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। এই ধরনের অনুষ্ঠান সাধারণভাবে বিচারপতিরা এড়িয়ে চলেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের মাথায় থাকে এক, সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেন বাধা না হয়ে দাঁড়ায় এবং দুই, সাধারণ মানুষ যাতে বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারেন। এই কারণেই দিন কয়েক আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বাংলার ডিএ মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। শুধু এই উদাহরণটিই নয়, বহু ক্ষেত্রেই বিচারপতিরা বিতর্ক এড়াতে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের পথ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন-ভুলে গেলেন কমরেড সেদিনের কথা
অনুষ্ঠানটি নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly- Bikash Bhattacharya) মন্তব্য আরও তাৎপর্যপূর্ণ। দু’জনের একই মঞ্চে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোনও মানুষই রাজনীতির বাইরে নন। ফলে তিনিও যে এর বাইরে নন, সেটা এই মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার। বাম রাজনীতির সঙ্গে তাঁর যে একটা আবেগের সম্পর্ক আছে তা আইনজীবী মহলে কান পাতলেই শোনা যায়। সেই কারণে দু’জনের এক মঞ্চ থাকা নিয়ে বিতর্ক শুরু। যে সংস্থার আমন্ত্রণে তিনি এসেছিলেন, সেই সংস্থার সহ-সভাপতি আবার বিকাশ ভট্টাচার্য। বিচারপতি অবশ্য দু’জনের এক মঞ্চে আসাকে কাকতলীয় বলে লঘু করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিকাশবাবু আসবেন কিনা না জেনেই বিচারপতি অনুষ্ঠানে এসেছেন এমন যুক্তি শুনে বিদগ্ধ মহলে ভ্রূকুঞ্চন। বিচারপতির দাবি, রায় দিতে গিয়ে তাঁর সামাজিক ন্যায়ের বিষয়টিই মাথায় থাকে। মানুষ দ্রুত বিচার না পেলে পার্টি অফিসে চলে যাবেন বলেও তাঁর মনে হয়। সম্প্রতি হাইকোর্টে বিচারপতি মান্থাকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এপ্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, বিচারব্যবস্থাকে সন্ত্রস্ত করা হচ্ছে। যদিও বিচারপতি মান্থার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে জনমানসে যে প্রশ্ন উঠেছে সেই বিতর্কের মধ্যে তিনি ঢুকতে চাননি। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, বিচারপতি এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা অটুট রয়েছে। এখনও দুই ব্যক্তি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়লে একজন অপরজনকে বলে, আদালতে বিচার চাইব। অর্থাৎ বিচারব্যবস্থার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান এবং ভরসা রয়েছে। সেই ভরসা অটুট থাকবে বলেই বিশ্বাস।