পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ৫৫ দিন পার, মোদি সরকারকে ৫ প্রশ্ন অভিষেকের

Must read

একের পর এক ঘটনার চাপে কি ধামাচাপ পড়ে যাচ্ছে ভারতের উপর পাক সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি? মন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পহেলগাঁও (pahalgam attack) হামলার দগদগে স্মৃতি? না কি মোদি সরকারের নীরবতা অসহিষ্ণু করছে ১৪০ কোটি ভারতীয়কে? ভারতীয়দের যে পাঁচ প্রশ্নের উত্তর এখনও দিতে অক্ষম নরেন্দ্র মোদি, ভারতের বার্তা নিয়ে বিদেশ সফর সেরে এসে সেই পাঁচ প্রশ্ন আবার তুলে ধরলেন তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

সময়, কাজ ও ফলাফলের খতিয়ান তুলে ধরে অভিষেকের প্রশ্ন, পহেলগাঁও (pahalgam attack) হামলার ৫৫ দিন অতিক্রান্ত। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এটা গভীর চিন্তার যে কোনও প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম, বিরোধী সদস্য এমনকি বিচার বিভাগও এগিয়ে আসেনি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ভারত সরকারের প্রতি তুলে ধরে। তবে দেশের মঙ্গল কামনাকারী ও একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমার দায়িত্ব ভারত সরকারের কাছে এই পাঁচ প্রশ্ন তুলে ধরা

নিরাপত্তায় ঘাটতি এবং নাগরিক হত্যা
কীভাবে সীমান্ত দিয়ে চার সন্ত্রাসবাদী ভারতের ঢুকলো, হামলা চালানো এবং ২৬ জন নিরীহ নাগরিককে হত্যা করল। জাতীয় নিরাপত্তায় এই বিরাট ফাঁক রাখার দায়ভার নেবে কে?

গোয়েন্দা ব্যর্থতা এবং আইবি প্রধানের মেয়াদ বৃদ্ধি
যদি একে গোয়েন্দা ব্যর্থতা ধরা হয় তবে এক বছর মেয়াদ কেন বৃদ্ধি হল ইনটেলিজেন্স ব্যুরো প্রধানের, তাও হামলার একমাস পরে। কেন তাকে দায়ী না করে পুরস্কৃত করা হল? কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল? যদি সরকার বিরোধীদলের নেতা (যেখানে আমিও অন্তর্ভুক্ত), সাংবাদিক, এমনকি বিচারকদের বিরুদ্ধে পেগাসাস স্পাইওয়ার ব্যবহার করতে পারে সহজেই, তাহলে সন্ত্রাসবাদী জাল ও সন্দেহভাজনদের জন্য সেই একই পদ্ধতি কেন ব্যবহার হয় না, প্রশ্ন অভিষেকের।

আরও পড়ুন-মিলল না অনুমতি! মাঝ আকাশ থেকেই জার্মানি ফিরল বিমান

সন্ত্রাসবাদীদের বর্তমান পরিস্থিতি
কোথায় গেল ধর্মের ভিত্তিতে হামলা চালানো সেই চার সন্ত্রাসবাদী? তারা জীবিত না মৃত? যদি তাদের মেরে ফেলা হয়ে থাকে তবে সরকার কোনও স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া কেন দিচ্ছে না। আর যদি তা না হয় তাহলে কেন এই নীরবতা?

পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং যুদ্ধ বিরতির সঙ্গে সমঝোতা
ভারত কবে পুনর্দখল করবে পাক অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর? কেন সরকার মার্কিন রাষ্ট্রপতির দাবি – যুদ্ধ বিরতির জন্য তাঁর বাণিজ্যের দাওয়াই-কে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া দিয়ে খন্ডন করেনি। অথচ যেখানে স্পষ্ট গোটা দেশ ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক রং নির্বিশেষে ন্যায়ের জয়কে উদযাপন এবং ভারতীয় সেনার বীরত্ব ও বলিদানকে প্রণাম জানিয়েছে সেখানে কেন ১৪০ কোটি ভারতীয়র আবেগকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া হল। কিসের প্রয়োজনে এই সমঝোতা?

আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং ভন্ডামি
ভারত থেকে পহেলগাম পরবর্তী পরিস্থিতিতে ৩৩ টি দেশে গত এক মাসে যাওয়া হয়েছে। কতজন ভারতের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

নিজেকে বিশ্বযুদ্ধ দাবি করা মোদিকে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, যদি আমরা প্রকৃত অর্থেই বিশ্বগুরু হই এবং বিশ্বের প্রকৃত চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতি হই, তবে পহেলগাম হামলার একেবারে পরেই আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক কেন দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ এবং আর্থিক সহযোগিতায় পাকিস্তানকে এক বিলিয়ন ডলার ও ৪০ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা কর? কিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদ চালানো একটি দেশ বিশ্বের নজরদারি এড়িয়ে গেল শুধু নয়, পুরস্কৃত হল?

তার থেকেও আশ্চর্যজনক, কিভাবে পাকিস্তানকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাউন্টার টেরোরিজম কমিটির ভাইস চেয়ার পদ দেওয়া হল এক মাসের মধ্যেই।

সবশেষে অভিষেক যোগ করেন, গত ১০ বছরে বৈদেশিক সম্পর্কের খাতে ২০ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকরা স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং ফলাফল দাবি করে। নীরবতা বা মুখ ঘুরিয়ে থাকা নয়। গোটা দেশ উত্তর দাবি করছে।

Latest article