ডায়মন্ড হারবারের মাটি কর্মভূমি: মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা-সহায়তায় সেবাশ্রয় ২ সূচনা অভিষেকের

Must read

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে সেবাশ্রয়-২ (Sebaashray 2_Abhishek Banerjee) কর্মসূচির সূচনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে মহেশতলা বিধানসভার নিউল্যান্ড মাঠে সেবাশ্রয় ২ ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন তিনি। ঘুরে দেখলেন বিভিন্ন শিবির। শ্রদ্ধা জানালেন মহাপুরুষদের। কথা বললেন চিকিৎসকদের সঙ্গে। খুটিয়ে দেখলেন চিকিৎসা ব্যবস্থা। রোগীর পাশাপাশি চিকিৎসকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, এ বিষয়েও কথা বললেন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক (Sebaashray 2_Abhishek Banerjee) বলেন, “আমার জন্মভূমি কালীঘাট বা দক্ষিণ কলকাতা হতে পারে, কিন্তু আমার কর্মভূমি এই ডায়মন্ড হারবারের মাটি। ঈশ্বর যদি মৃত্যুর পরে কোনওভাবে বিলীন না করে দেন, তাহলে বারবার আমি এই মাটিতেই ফেরত আসার কথা ভাবব। মানুষ আমাকে যে ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ করেছেন, আমি এই মাটির কাছে চিরকৃতজ্ঞ ।”

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিবিরগুলি খোলা থাকবে। সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন সকলেই। আগে সেবাশ্রয় ৭৫ দিনে ১২ লক্ষ মানুষকে পরিষেবা দিয়েছে। আজ এ কথাও বলেন অভিষেক। ১ ডিসেম্বর থেকে ২২ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত চলবে সেবাশ্রয় ২। সাধারণ মানুষের সেবা এবং রআ্ত-দুঃস্থ মানুষের আশ্রয়- এই আদর্শকে পাথেয় করেই দ্বিতীয়বারের সেবাশ্রয় ফিরেছে।

আরও পড়ুন-৪০ জনের মৃত্যু, সংসদে জবাব চাইলেই ‘নাটক’! মোদিকে পাল্টা প্রশ্ন অভিষেকের

সাধারণ জ্বর-সর্দি থেকে শুরু করে ইসিজি, এক্স-রে, ডেন্টাল, কার্ডিওলোজি এবং চোখের চিকিৎসার মতো অত্যাধুনিক পরিষেবা মিলবে এই মডেল ক্যাম্পগুলিতে । রেডিয়েশনের ঝুঁকি এড়াতে এক্স-রে বিভাগকে এবার সম্পূর্ণ আলাদা করা হয়েছে এবং ১০-১২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সবসময় উপস্থিত থাকছেন ।

ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের বিশ্বাস, আস্থা ও ভরসার নির্ভরযোগ্য সেবাস্থল হয়ে উঠেছিল সেবাশ্রয়। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কথা দিয়েছিলেন আবারও সেবাশ্রয় ফিরে, সেবাশ্রয় ২ ফিরেছে। সেবাশ্রয় পরিষেবায় বহু মানুষ সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন। এবার দ্বিতীয় ধাপেও সুবিধা পাবেন। প্রথম দিন মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান ছিল দেখার মতো।

প্রথম পর্যায়ের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “আগেরবার সেবাশ্রয়ে যাঁদের পাওয়ারের সমস্যা ছিল, এরকম প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে আমরা বিনামূল্যে চশমা তৈরি করে দিয়েছি। তাঁদের একজনকে চশমা নিতে ক্যাম্পে আসতে হয়নি, আমাদের প্রতিনিধিরা বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়ে এসেছেন। এটাই ডায়ম ন্ডহারবার মডেল ।”

তিনি আরও জানান, শুধু ডায়মন্ড হারবার নয়, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ি এমনকী কোচবিহার থেকে আসা রোগীদেরও এই শিবির থেকে ফেরানো হয়নি। বজবজের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে জটিল অস্ত্রোপচার করিয়ে সুস্থ করে তবেই বাড়ি পাঠানো হয়েছে ।

​সাংসদ হিসেবে নিজের দায়িত্ববোধের কথা মনে করিয়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, “আমাদের সীমাবদ্ধ সামর্থ্য অনুযায়ী যখনই বোধ করতে পেরেছি যে কারও কোনও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি । এটাই তো একটা জনপ্রতিনিধির কাজ।” আগামী ২ মাস ধরে চলা এই কর্মসূচিতে ডায়মন্ড হারবারের লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী অভিষেক।

এদিন মহেশতলার ‘সেবাশ্রয় ২’ শিবিরে সকাল সকাল অসুস্থ ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন এক মহিলা। সাংসদ অভিষেককে কাছে পেয়ে বললেন, বছরের পর বছর তাঁর ছেলেকে গুরুতর অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করতে দেখার যন্ত্রণার কথা। সাংসদ আশ্বাস দেন—তাঁর ছেলেকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে সবরকমের প্রচেষ্টা করবে টিম সেবাশ্রয়। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকের তিনি নির্দেশ দেন যাতে যুবককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখা হয়।

Latest article