কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রীর বাজেট মরীচিকা, বাংলা বিরোধী: সংসদে তুলোধনা অভিষেকের

এই সরকার রিভার্স রবিনহুড

Must read

প্রতিবেদন : কেন্দ্রীয় বাজেট বাংলা-বিরোধী। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ও অন্যায়ভাবে বাংলার উন্নয়নকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। বাংলার বঞ্চনায় লোকসভায় প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বাজেট-বিতর্কে অংশ নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, অন্যায়ের সামনে মাথা নত করবে না বাংলা। চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির— এই লাইন শোনা যায় তাঁর মুখে। অভিষেকের অভিযোগ, মোদি সরকারের এবারের বাজেটে ‘হাফ ফেডারিলিজম’ দেখানো হয়েছে৷ এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বিহারে বিজেপির ১২ জন সাংসদ, বাংলাতেও ১২ জন৷ তারপরেও বাংলার মানুষের সঙ্গে বঞ্চনা করা হয়েছে এবং বিহারমুখী বাজেটে নীতীশ কুমারের রাজ্যকে ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে, কারণ তারা বিজেপির জোটসঙ্গী, এটাই হাফ ফেডারিলজম, লোকসভায় সাফ জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷
উল্লেখ্য, অভিষেকের বক্তব্যের ঝাঁজের মুখে এদিন রীতিমতো ম্রিয়মাণ দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনকে৷ লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য খুব মন দিয়ে শোনেন নির্মলা৷ তাঁর সামনেই মোদি সরকারের বাজেটের সমালোচনা করতে গিয়ে অভিষেক রামায়ণের ‘সোনার হরিণ’ প্রসঙ্গ তুলে ধরেন৷ সোনার হরিণ দেখিয়ে কৌশলে সীতাকে অপহরণ করার সেই ছক মনে করিয়ে দেন অভিষেক। বাজেটে একাধিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই বাজেট করা হয়নি বলে দাবি করলেন। এই বাজেটে উল্লিখিত আয়কর ছাড় আসলে ভাঁওতা, সাফ জানান অভিষেক। এই বাজেটে কৃষকদের জন্য কিছুই নেই, মনে করিয়ে দেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন অভিযোগ করেন, এবার মোদি সরকারের বাজেট হল অর্ধসত্য, অর্ধ যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো, অর্ধ দায়বদ্ধতা, অর্ধ মন্ত্রী এবং অর্ধ প্রস্তুত উত্তরের বাজেট৷
একের পর এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে অভিষেক ব্যাখ্যা করেন, সাধারণ মানুষের সামনে আসলে একটি ‘ইলিউশন’ তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘রবিনহুড’-এর সঙ্গে তুলনা অভিষেকের। বলেছেন, ‘রিভার্স রবিনহুড’-এর মতো কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। গরিব মানুষের থেকে অর্থ নিয়ে ধনীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। তথ্য তুলে ধরে অভিষেকের দাবি, বাংলার জন্য উল্লেখযোগ্য একটিও আর্থিক প্যাকেজ বা বড় প্রকল্প ঘোষণা করা হয়নি। উল্টে বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা পাওনা। সেই বকেয়াও মেটানো হচ্ছে না। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আর্থিক অবরোধ। সুপরিকল্পিতভাবে বাংলার উন্নয়ন এবং আর্থিক বৃদ্ধি রুখে দেওয়া হচ্ছে।
অভিষেক এদিন লোকসভায় দাবি করেছেন, শুধু ১০০ দিনের কাজে ৭ হাজার কোটির বেশি বকেয়া রাজ্যের। বাংলার ৫৯ লক্ষ শ্রমিক বঞ্চিত। আবাস যোজনায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া। এতে ১৩ লক্ষ পরিবার বঞ্চিত। এরপর অভিষেক জানিয়ে দেন, কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও বাংলা এই কর্মপ্রার্থীদের কাজ দিচ্ছে, গৃহহীনদের বাড়ি দিচ্ছে। এই প্রসঙ্গেই অভিষেকের সাফ কথা, বাংলা মাথা নোয়াবে না। আমরা ভিক্ষা করব না। আমরা নতুন করে সম্পদ সৃষ্টি করব, বাংলা নিজের শক্তিতে উন্নতি করবে।
বিরোধী শিবিরের তরফে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

Latest article