আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য হবে বিজেপি। তার পর তাদের দিয়েই জয় বাংলা বলিয়ে ছাড়ূব। সোমবার, ধর্মতলার একুশে জুলাইয়ে মঞ্চ থেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন তিনি। একই সঙ্গে ভোটার নিস্টে কারচুপি রুখতে দিল্লি গিয়ে আন্দোলনের কথা জানান অভিষেক।
ধর্মতলা পৌঁছেই প্রথমে শহিদবেদীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অভিষেক (Abhishek Banerjee)। তার পরে বলতে উঠে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক একতিরে বিজেপি-ইডি-ইসি (BJP-ED-EC)-কে নিশানা করেন। তিনি বলেন, “২০২৪-এর ২১শে জুলাই আমরা বলেছিলাম ২৬শের লড়াই আছে, আপনারা প্রস্তুত হন। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রস্তুত হতে হবে। আপনারা দেখেছেন আজ থেকে ঠিক ১৬-১৭ মাস আগে ২০২৪-এ নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ব্রিগেড চলো ডাক দিয়েছিল। ১০ মার্চ এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমরা ব্রিগেডে সাংগঠনিক শক্তি দেখিয়ে দিয়েছিলাম।“ এর পরেই বাংলা বিরোধী তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক। বলেন, “বিজেপিকে প্রথম বাংলা বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেস বলেছে। সেদিন আমরা যে ডাক দিয়েছিলাম “জনতার গর্জন, বাংলা বিরোধী দল বিসর্জন“- সেটা একটা পলিটিক্যাল স্লোগান ছিল না, সেটা ছিল বিজেপির আসল চরিত্রের উন্মোচন।“ গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করে তিনি বলেন, “এই বিজেপি বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছিল, রবীন্দ্রনাথকে বামপন্থী প্রোডাক্ট বলেছিল আমাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি নিয়ে ব্যঙ্গ করেছিল যে বিজেপির নেতারা নির্বাচনের জিততে না পেরে গরিব মানুষকে ভাত দিয়ে মারার চেষ্টা করে বাংলার মানুষের টাকা আটকে রাখে সে বিজেপির একটাই পরিচয় তারা বাংলা বিরোধী। আজকে বাংলায় কথা বললে আপনাদের গায়ে এত জ্বালা কেন?“
অভিষেকের কথায়, “গত বছরের ২১ জুলাইকে এই বছর ছাপিয়ে গেছে। বিজেপি তৃণমূল সম্মুখ সমরে লড়াই করছে কিন্তু বিজেপি এবং তৃণমূলের পার্থক্য বিজেপির কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের মত একটা কর্মী ও বিজেপিতে নেই আর একশো বছরের তৈরি হবে না। আমাদের কর্মী এবং দলনেত্রী তৃণমূল কংগ্রেসের একমাত্র শক্তি।“
তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমি আগের বাড়ি ডায়মন্ডহারবারের সভা করে বলেছিলাম ৫০ পেরোতে বেরোতে পারবে না বিজেপি। আমি ভবিষ্যৎবাণী করি না কিন্তু যদি করি বাংলায় জিততে পারবে না বিজেপি। যেভাবে মানুষকে বাংলায় নিপীড়িত করেছে, নিজেদের ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। বিজেপি যে কয়েকটা বাংলা বিরোধী পড়ে রয়েছে তাদেরকে ঝেটিয়ে বিদায় করে বঙ্গোপসাগরের ফেলতে হবে তাদের।“
আরও পড়ুন- ২১ জুলাই যান নিয়ন্ত্রণে হাই কোর্টের Full Marks কলকাতা পুলিশকে
মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ভোটার লিস্টে কারচুপির অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, “আজ থেকে ৩২ বছর আগে ১৩ জন পরিচয়পত্রের দাবিতে নিজেদের প্রাণ দিয়ে মানুষের গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিল। দরকার হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুমতি নিয়ে দিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেস বৃহত্তর আন্দোলন করবে। ভোটার লিস্ট নিয়ে কারচুপি করতে দেব না।“
অভিষেকের কথায়, “আগে জয় শ্রীরাম বলতো। এখন ঠেলায় পড়ে জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা বলছে। ২০২৬-এর পর জয় বাংলা বলবে। যে বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে চেয়েছিল সেই বাংলার মানুষের পায়ে মাথা ঠুকে জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা বলতে হচ্ছে। এটাই বাংলার মানুষের যা আদিবাসীর জয়, শ্রমিকের জয়, কৃষকের জয়, জনজাতির জয়। বাংলার সৃষ্টির জয় ঐতিহ্যের জয়। যে দুর্গাপুজোর কমিটিগুলির পিছনে এজেন্সি লাগিয়ে বন্ধ করতে চেয়েছিলে পুজো সেই বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়েই আজকাল জয় শ্রীরামকে বর্জন করে জয় মা দুর্গা বলতে হচ্ছে।“