উত্তর-পূর্বের একমাত্র বাংলাতেই SIR, পিছনের দরজা দিয়ে NRC-র চক্রান্ত! তীব্র আক্রমণ অভিষেকের

Must read

বাংলায় SIR ঘোষণার পরের দিনই সাংবাদিক বৈঠক করে একতিরে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ও মোদি সরকারকে নিশানা করলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। মঙ্গলবার, তৃণমূল ভবনে রীতিমতো মানচিত্র দেখিয়ে অভিষেক বুঝিয়ে দেন বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করা রাজ্যগুলির মধ্যে একমাত্র বাংলাতেই SIR করছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। এটাকে পিছনের দরজা দিয়ে NRC করার চক্রান্ত বলে তোপ দাগেন তৃণমূলের সর্ভভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এদিন ফের তিনি বলেন, স্পষ্ট বললেন, “এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম দায়, দায়িত্ব, কর্তব্য- প্রথমে লোকসভা ভেঙে দিয়ে আপনি ভোটে যান।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের হুঁশিয়ারি, “একজন বৈধ ভোটারের নামও যদি বাদ যায়, একলক্ষ মানুষ নিয়ে দিল্লিতে কমিশনের দফতর ঘেরাও করা হবে।”

এদিন সাংবাদিক বৈঠকে প্রথম থেকেই নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেন অভিষেক (abhishek banerjee)। তাঁর কথায়, “তাদের লক্ষ্য কোনও দিন SIR করে ভোটার লিস্ট ত্রুটিমুক্ত করা নয়। যদি তাই লক্ষ্য থাকত, এই ভোটার লিস্টের নিরিখেই ২০২৪ সালে আজ থেকে দেড় বছর আগে লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। যেখানে বাংলা-সহ দেশের ৫৪৩টি লোকসভা কেন্দ্রে সাংসদরা নির্বাচিত হয়েছেন। পরবর্তীকালে দেশের সরকার এসেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রথম দায়, দায়িত্ব, কর্তব্য- প্রথমে লোকসভা ভেঙে দিয়ে আপনি ভোটে যান। আমরা তো ভোট থেকে পালিয়ে যাচ্ছি না। এই ভোটার লিস্ট যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তাহলে এই ভোটার লিস্টে আমিও সাংসদ হয়েছি। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে, যাঁরা মন্ত্রিসভায় আছেন, তাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন এই ভোটার লিস্টের নিরিখে। তাঁদের মৌলিক দায়িত্ব ইস্তফা দিয়ে, তারপর আপনি SIR করুন না। কেউ তো বারণ করছে না।”

মোদি সরকারকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, “আগে মানুষ ভোট দিয়ে দেশের সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার কে ভোট দেবে তাদের সিলেক্ট করছে। আগে ভোটাররা ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করত। এখন দেশের সরকার পছন্দের মতো তার ভোটার বেছে নিচ্ছে। কে ভোটার লিস্টে থাকবে, আর কার নাম বাদ যাবে।”

আরও পড়ুন- ভগিনী নিবেদিতার জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা-স্মরণে মুখ্যমন্ত্রী

বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বলেন, “আগে যখন এসআইআর হয়েছিল তখন সময় লেগেছিল ২ বছর। এবার বলছে ২ মাসে হয়ে যাবে। কীভাবে? এত সময়ে কেন?” তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “ওদের লক্ষ্য কোনওভাবেই ভোটার লিস্ট ত্রুটিমুক্ত করা নয়। SIR হচ্ছে সাইলেন্ট ইনভিজিবল রিগিং অর্থাৎ চুপিচুপি ভোটে কারচুপি।”

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে অভিষেক করে বলেন, ”যে পাঁচটা রাজ্যে ভোট আছে, খুব কৌশলের সঙ্গে অসমকে বাদ দিয়েছে। কারণ বিজেপি ক্ষমতায় আছে। তাহলে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে SIR হবে না! তারা বলছে সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট আছে তাই অসমে হবে না। তাহলে এক দেশের গল্প দেন কেন?”

এর পরেই অনুপ্রবেশ নিয়ে মোদি সরকারকে নিশানা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য, ”আপনি বলছেন বাংলায় বাংলাদেশি-রোহিঙ্গা রয়েছে। বাংলাদেশের বর্ডার শেয়ার করছে পাঁচটা রাজ্য। এসআইআর হচ্ছে খালি বাংলায়। বাকি রাজ্য বাদ। বাংলার সঙ্গে সঙ্গে মেঘালয়-অসম-ত্রিপুরায় এসআইআর হচ্ছে না। আর মায়ানমার বাংলার সঙ্গে বর্ডার শেয়ার করে না। অথচ বলে রোহিঙ্গা ঢুকছে। মায়ানমারের সঙ্গে বর্ডার শেয়ার করছে মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যানঅড, অরুণাচল প্রদেশ। আর রোহিঙ্গারা এই রাজ্যগুলি থেকে করবে। অথচ এখানে SIR হচ্ছে না। তাহলে নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য কী? ওদের যদি বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোই উদ্দেশ্য হয় তাহলে ওই রাজ্যগুলোতেই এসআইআর হওয়া উচিত। তাহলে ওরা বাদ কেন? উত্তর দিতে হবে।”

হুঁশিয়ারি দিনে অভিষেক বলেন, ”আসলে ওদের উদ্দেশ্য বাংলাকে অপমান, বাংলা ভাষাকে বিদ্রুপ, বাঙালিকে বাংলাদেশি বেল দাগানো। আগেও বলেছি, একটা বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে বাংলার এক লক্ষ লোক গিয়ে কমিশনের অফিস ঘেরাও করবে। অমিত শাহের দিল্লিপুলিশ আটকে দেখাক।”

Latest article