প্রতিবেদন : কংগ্রেস ও সিপিএম বিজেপির বি টিম হয়ে বাংলায় কাজ করছে। এরা বিজেপির দোসর। একটি ভোটও দেবেন না। বুধবার রঘুনাথগঞ্জের সভা থেকে দুই দলের বিরুদ্ধে এভাবেই তোপ দাগলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বুধবার দলীয় প্রার্থী খলিলুর রহমানের সমর্থনে রঘুনাথগঞ্জে বিশাল জনসভায় এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক চাঁচাছোলা ভাষায় কংগ্রেস-সিপিএমকে তুলোধোনা করেছেন। এই সভার পর জলঙ্গিতে রোড-শো করেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)।
ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের ঘোঁট : ২০২৩-এর জুন মাস থেকে আমরা চেয়েছিলাম কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের জোট হোক। একদিকে যখন রাহুল গান্ধী-সোনিয়া গান্ধী দিল্লি-মহারাষ্ট্র-বিহারে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে বলছেন আগামী দিন বিজেপিকে উৎখাত করতে আমাদের তৃণমূলকে প্রয়োজন— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজন। তখন এরাজ্যে কংগ্রেসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী মহঃ সেলিমের সঙ্গে সভা করে ধূপগুড়িতে তৃণমূল কংগ্রেস-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমার বাপান্ত করছে। এতে কার হাত শক্তিশালী করছে কংগ্রেস-সিপিএম? প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক। মহঃ সেলিমকে তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, এই পরিযায়ী নেতা একবার দাঁড়ায় রায়গঞ্জে, একবার দাঁড়ায় উত্তর কলকাতায়, একবার দাঁড়ায় মুর্শিদাবাদে। ভোট কেটে বিজেপির সুবিধে করতেই মাঠে নামে। এরপরই অভিষেক উপস্থিত জনসমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আবেদন করেন, গতবার খলিলুর রহমান সাহেবকে আড়াই লক্ষের বেশি ভোটে জিতিয়েছিলেন। কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থী প্রায় তিন লাখ ভোট কেটে বিজেপির সুযোগ করে দিতে চেয়েছিল। এবার যেন তা না হয়। এবার ৫ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে খলিলুর রহমানকে জেতাতে হবে।
অধীরদের সেটিং : সিপিএম কংগ্রেসকে তুলোধোনা করে অভিষেক বলেন, (জলঙ্গীর রোড শো শেষে)দিল্লিতে রাহুল গান্ধী কে তিনি ডাকছে অথচ এখানে অধীর চৌধুরী বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ইডিসিবিআই একবারও তাকে ডাকছে না। বিমান বোস সুজন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাদের এজেন্সি ডাকছে না। তবেই বুঝে দেখুন সেটিং কাদের সঙ্গে।
বিজেপিকে উঠিয়ে দেবো : ইডির ভয় দেখিয়ে তাপস রায় কে নিয়ে গিয়ে প্রার্থী করেছে বিজেপি, এমনিতে তো প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। আমি তার আট চল্লিশ ঘন্টার মধ্যে একজন ওদের একজন বিধায়ককে দলে নিয়েছি। আরো অন্তত দশ জন লাইনে আছে। ঠিক সময় দরজা খুলবো। দলটাকে আমি বাংলা থেকে উঠিয়ে দেবো কথা দিয়ে যাচ্ছি। জলঙ্গিতে রোড শো শেষে বিস্ফোরক মন্তব্য অভিষেকের
নেত্রী ঠিক ছিলেন : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব্বই দশকে বলেছিলেন সিপিএমকে বাংলা থেকে উৎখাত করতে হলে লড়াই করতে হবে। তাই তিনি কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন। লড়াই করেছেন, সিপিএমকে উৎখাত করেছেন বাংলা থেকে। আর আজ সেই কংগ্রেস সিপিএমের লালঝান্ডা নিয়ে উত্তরীয় পরে মিছিল করছে। কাস্তে হাতুড়ির সঙ্গে মিশে গিয়ে একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করছে।
আরও পড়ুন- সিএএ রুখব আমরাই নেত্রীর চ্যালেঞ্জ রাজনাথকে
কং-বাম-বিজেপি সেটিং : যিনি বারবার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার বিরুদ্ধে লড়ুন। আপনি চ্যালেঞ্জ করতেই পারেন কিন্তু আপনি চ্যালেঞ্জ করলে কাদের হাত শক্তিশালী হচ্ছে? বিজেপির। আপনি তো একবারও বলছেন না শুভেন্দু অধিকারী আমার বিরুদ্ধে লড়ুক। বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দিতে হলে কাকে ভোট দেবেন? বাংলা-বিরোধীদের উচিত শিক্ষা দিতে হলে কাকে ভোট দেবেন? লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেতে হলে কাকে ভোট দেবেন? আগামী দিনে যাতে দিল্লির বুকে একটা গণতান্ত্রিক সংবেদনশীল ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল সরকার তৈরি হয় তার জন্য কাকে ভোট দেবেন? খলিলুর রহমান এক নম্বর বোতাম। তাকে ভোট দিয়ে তৃণমূলের হাত শক্তিশালী করে দুই নম্বরি নেতাগুলোর জামানত বাজেয়াপ্ত করে বাংলাকে রক্ষা করার শপথ নিতে হবে— বলেন অভিষেক।
কী না করেছে : অনেক চেষ্টা করেছে— কী না করেছে আমাকে দেখুন। চার বছর ধরে বিচারব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়েছে। যিনি রায় দিয়েছেন তিনি এখন বিজেপিতে। আগে চোর চুরি করে জেলে যেত। আর বিচারক বিচারব্যবস্থায় থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে রায় দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেয়। আমার বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই লাগিয়েছে। আমার পরিবারকে ডেকেছে। আমাকে ডেকেছে দিল্লিতে। কাউকে ছাড়েনি। আমি যাতে মিটিং না করতে পারি তাই আমার হেলিকপ্টার পর্যন্ত রেইড করেছে। তোপ অভিষেকের।
মারার চক্রান্ত : অভিষেক বলেন দু’দিন আগে আমাকে প্রাণে মারার পরিকল্পনা করেছিল। কলকাতা পুলিশ হাতেনাতে ধরেছে। আমি আমার প্রাণ নিয়ে চিন্তিত নই মানুষের যদি আস্থা ভরসা ভালবাসা থাকে পৃথিবীর কোনও শক্তি নেই আমাকে স্পর্শ করতে পারে। এই বিশ্বাস আমি রাখি।