ডায়মন্ড হারবার মডেল নিয়ে যারা ঠাট্টা করত তাঁদের যোগ্য জবাব

Must read

আমি যখন ডায়মন্ড হারবারে কাজ শুরু করেছিলাম তখন অনেকে ডায়মন্ড হারবার মডেল নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছিল। তাঁদের যোগ্য জবাব দিলেন ডায়মন্ড হারবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek banerjee)। সোদপুরের জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটলের উদ্বোধনে গিয়ে তিনি বলেন, আমি ১০ বছরে ডায়মন্ড হারবারে ৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার কাজ করেছি। বিজেপি-সিপিআইএম-এর কোন নেতা এলে পরিসংখ্যা হাতে তুলে দেব। চ্যালেঞ্জ করছি। শুধু একঘণ্টা সময় লাগবে।

তাঁর (abhishek banerjee) কথায়,” ২ জানুয়ারি থেকে সেবাশ্রয় শুরু হয়েছিল। এই কর্মসূচি চলেছিল ৭৫ দিন। ৩০০ টি ক্যাম্প হয়েছিল। ডায়মন্ড হারবারের ৭টি বিধানসভায় এই ক্যাম্প হয়েছিল। ৭৫ দিন অসাধ্যকে সাধন করে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষকে পরিষেবা দিতে সফল হয়েছিলাম। সেই উদ্যোগে জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটল সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। ”

অভিষেক জানান,”রাজ্যসরকার বিগত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে। ৩৪ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল রাজ্যটাকে তারা রসাতলে পাঠিয়েছে। নতুন মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে শুরু করে প্রায় ১ লক্ষ বেড বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৪ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার গত ১৪ বছরে রাজ্যে হয়েছে। ১৪ হাজার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র হয়েছে বাংলাজুড়ে। এরসঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তো রয়েছে। ৫ লক্ষ টাকা যাতে কভারেজ পায় সেই ব্যবস্থা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সুবিধা রাজ্যের ১০ কোটি মানুষ পেয়েছেন। ”

সিপিআইএম-কে তুলোধনা করে অভিষেক বলেন, আমি আগেও বলেছি আপনারা তথ্য পরিসংখ্যান নিয়ে বলুন আপনাদের সরকার ৩৪ বছরে কী করেছে। আর তৃণমূল সরকার ১৪ বছরে কী করে তাহলে সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

তাঁর আরও সংযোজন,”কেউ কেউ চায় বাংলার টাকা আটকে দিয়ে বাংলাকে ভাতে মারতে। আমাদের সরকার শেষদিন থাকা পর্যন্ত কেউ ভাতে মারতে পারবে না। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ক’পয়সা দিয়েছে কেন্দ্র সরকার? স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলুন শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে, পরিসংখ্যান নিয়ে অন্য রাজ্যে কতটাকা দেওয়া হচ্ছে আর বাংলায় কতটাকা দেওয়া হচ্ছে তা প্রকাশ করুক কেন্দ্র।”

আরও পড়ুন- গুজবে কান দেবেন না, মুর্শিদাবাদ হিংসায় বার্তা ডিজি-র, কতটা হাত বিজেপির এজেন্সির, তদন্ত দাবি তৃণমূলের

তিনি জানান, “২০২৪ সালে আমি যখন শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রকল্প শুরু করি তখন বিভিন্ন ট্যাক্স অথরিটিকে দিয়ে আমায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। আবার আমি যখন সেবাশ্রয় শুরু করি ১২ লক্ষ মানুষকে বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে তখনও বিভিন্ন ট্যাক্স অথরিটিকে দিয়ে আমায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। ৫,৬,৭ বছর ধরে আমি ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আমি লড়াই করছি। লোয়ার কোর্ট থেকে হাই কোর্ট, হাই কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট। তোমার সিবিআই আমার কাঁচকলা করেছে, আর আগামী দিনে আমার কাঁচকলা করবে। আমি মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য এসেছি। মানুষকে পরিষেবা দেব। কেউ কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখাও মানুষের ক্ষমতা কী আগামী দিন ল্যাজে গোবরে বুঝিয়ে দেব।”

তিনি আরও বলেন,”শুধু তাই নয়, কোভিড মহামারির সময় ১০ দিনে ডক্টর্স অন হুইল পরিষেবা দিয়ে ১২ শতাংশ পজিটিভিটি রেট ২ শতাংশে নামিয়ে এনেছিলাম। কোভিড মাহামারি প্রথম ঢেউয়ের সময় কল্পতরু করে প্রায় ৪ লক্ষ পরিবারের বাড়িতে আমাদের প্রায় ১০ হাজার ভলেন্টিয়ার বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করেছিল। যাতে কেন্দ্রীয় সরকারের অপরিকল্পত লকডাউনের জন্য যাতে কাউকে অভুক্ত থাকতে না হয়। এইটাই ডায়মন্ড হারবার মডেল। গত নির্বাচনে সব রেকর্ড ভেঙে মানুষ আমাকে ৭ লক্ষ ১০ হাজার ভোটে জিতিয়েছিলেন।”

তিনি জানান, “যারা ৭৫ দিন ধরে সেবাশ্রয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁদের সকলে আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। শুধু ১২ লক্ষ নয় বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১৮ হাজারের বেশি রোগী এসেছিলেন, তাঁদের পরিষেবার ব্যবস্থা আমরা করেছি। কিছু নিউরোলজিক্যাল কেস আছে যাদের আমরা দক্ষিণ ভারতে ব্যাঙ্গালোরে পাঠিয়েছি। যাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছি। আমি নিজে চিঠি লিখে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট করিয়েছি। আজ আমি সর্বস্তরের জনপ্রনিধিদের অনুরোধ করব, আপনার পরিধির মধ্যে মানুষের পাশে দাঁড়ান। শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। “

Latest article