প্রতিবেদন : অভিজ্ঞতা এবং সিনিয়রিটিতে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ্যতম। ইন্ডিয়া জোটে নেতৃত্ব তিনি দিতেই পারেন। তবে, এ-বিষয়ে ইন্ডিয়া জোট তো আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। বক্তা, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দিল্লিতে সংসদভবনে ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্ব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেন, অভিজ্ঞতার নিরিখে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ধারে ও ভারে আশেপাশে কোনও নেতাই নেই। তাঁর সংযোজন, ইন্ডিয়া জোটের নেতারা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন৷ উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সব থেকে বর্ষীয়সী নেত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ওঁর তৃতীয় দফার কার্যকাল চলছে৷ উনি চারবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন৷ ওঁর নেতৃত্বদানের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়া প্রয়োজন৷ এই প্রেক্ষিতেই অভিষেক সাফ জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস আঞ্চলিক দল হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের দলনেত্রীকে ইন্ডিয়া জোটের নেত্রী করার দাবিকে ছোট করে দেখার কোনও অর্থ নেই৷ কোনও দলকে ছোট করে দেখা উচিত নয়৷ তৃণমূল কংগ্রেসই ইন্ডিয়া জোটের একমাত্র দল, যারা কংগ্রেস এবং বিজেপি— দুটি দলকেই হারিয়েছে৷ এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতা ও শক্তি৷ আঞ্চলিক দলগুলিকে ছোট করে দেখার কোনও অর্থ নেই৷ কংগ্রেস ও বিজেপি বারবার একই ভুল করে৷ আমরা এখানে এসেছি জনগণের ভোটে৷ আমাদের সংখ্যাটা ২৯ হলেও জনগণকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। এক দেশ-এক ভোট নীতির প্রয়োগ সম্ভাবনার ইস্যুতেও সোমবার মোদি সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, দেশের ১৪০ কোটি মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে মোদি সরকার৷ জনগণকে বিভ্রান্ত করছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ যারা বাংলায় আট দফায় ভোট করায়, তারা সারা দেশে কীভাবে একদফায় ভোট করাবে! আমার ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে তিন দফায় ভোট হয়েছে৷ এরা সারা দেশে কোনওভাবেই একদফায় ভোট করতে পারে না৷ এটা পুরোপুরি হাস্যকর৷ তাঁর সংযোজন, কেন্দ্রীয় সরকার বারবার বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে৷ ২ বছর পর-পর যদি দেশের মানুষ ভোটদান করার সুযোগ পায়, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার চাপে থাকে৷ মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে সংবিধান পাল্টে এক দেশ এক ভোট নীতি প্রয়োগ করার ভাবনা সমর্থনযোগ্য নয়৷ দেশবাসীর পাঁচ বছরে বারবার ভোটদানের অধিকার কেড়ে নিয়ে একবার ভোট দেওয়ার কথা বলছে এরা, এটা হয় না৷ মানুষের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতা থাকবে না৷ মানুষ পৌরসভা, পঞ্চায়েত, বিধানসভা, লোকসভায় ভোট দান করার অধিকার পায়৷ সেই অধিকার খর্ব করে এরা ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছে৷ সংবিধান পাল্টে দিতে চাইছে৷ আমরা যতদিন আছি, ততদিন এটা হতে দেব না৷ ওরা যতই চেষ্টা করুক না কেন৷
বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে লাগাতার অত্যাচারের ঘটনা নিয়েও এদিন মোদি সরকারকে তীব্র নিশানা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর দাবি, বিদেশ সচিব বাংলাদেশ থেকে দিল্লিতে ফিরে আসার পরেও সংসদে সরকার এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি৷ অবিলম্বে সরকারকে সংসদে বিবৃতি দিতে হবে বলেও দাবি তোলেন তিনি৷ সরকার যদি সংসদে বাংলাদেশ নিয়ে কোনও বিবৃতি না দেয়, তাহলে গোটা দেশের মানুষকে আবারও বিভ্রান্ত করা হবে— দাবি জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ একইসঙ্গে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়েও এদিন নিজের ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরেছেন অভিষেক। তাঁর দাবি, যাঁরা বলছেন ইভিএম হ্যাক করা সম্ভব, তাঁরা প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রমাণ তুলে ধরুন৷ ইভিএমের কার্যকারিতার বিপক্ষে কোনও কিছু বলার আছে বলে তিনি মনে করেন না।
আরও পড়ুন: ডিম-দুধ-মাংস উৎপাদনে বাংলাই সেরা! কেন্দ্রের স্বীকৃতিতে খুশি মুখ্যমন্ত্রী