পেট্রোল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার অভিষেক এবং আরও কয়েকজন সাংসদ পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর কাছে লিখিতভাবে জানতে চান, পেট্রোল, ডিজেলের দাম কমাতে কেন্দ্র কি শুল্ক হ্রাস করবে? এই দুই পেট্রোপণ্যের উপর থেকে ভ্যাট এবং ডিলার্স কমিশন কি কমানো হবে? করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া মৃল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল দেশের মানুষ। এই দুই পেট্রোপণ্যের দাম কমাতে কেন্দ্র কি ভরতুকির পরিমাণ বাড়াবে অথবা কর কমাবে? পেট্রোপণ্যের দাম কমানোর বিষয়ে সরকার কী পরিকল্পনা নিয়েছে, তা বিস্তারিত জানানো হোক। এই মুহূর্তে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ফের কমেছে। তাহলে এর পরিপ্রেক্ষিতে পেট্রোল, ডিজেলের দাম কমাতে সরকার কী ধরনের পরিকল্পনা নিয়েছে বা নিতে চলেছে, তা জানানো হোক।
আরও পড়ুন : তৃতীয়বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার দিল্লিতে পা রাখলেন মমতা
তবে অভিষেকের করা এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়েছেন পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। দায় ঠেলেছেন তেল সংস্থাগুলির দিকে। মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি জানান, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পেট্রোল, ডিজেলের দাম নির্ধারণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। ২০১০-এর জুনের শেষ দিক থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে দেশের বাজারে পেট্রোপণ্যের দাম বাড়ে। আবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলে দেশের বাজারেও দাম কমে। মন্ত্রীর সাফাই, ব্যারল প্রতি লিটার পেট্রোলে কেন্দ্রীয় শুল্কের পরিমাণ ৩২.৯০ টাকা। যার মধ্যে এক্সাইজ ডিউটি ১.৪০ টাকা। সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস ১৮ টাকা। কৃষি ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস ২.৫০ টাকা এবং বিশেষ অতিরিক্ত শুল্ক ১১ টাকা। একইভাবে প্রতি লিটার ডিজেলে কেন্দ্রীয় শুল্কের পরিমাণ ৩১.৮০ টাকা। যার মধ্যে এক্সাইজ ডিউটি ১.৪০ টাকা। সড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস ১৮ টাকা। কৃষি ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সেস ২.৫০ টাকা এবং বিশেষ অতিরিক্ত শুল্ক ৮ টাকা। এর সঙ্গে পেট্রোল ও ডিজেলের উপর প্রতিটি রাজ্য আলাদাভাবে ভ্যাট আদায় করে থাকে।
আরও পড়ুন : #AbKiBaarDidiSarkar : চব্বিশে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ মমতাই
প্রসঙ্গত, ২০২০ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম তলানিতে চলে এলেও দেশের বাজারে তার কোনও প্রভাব পড়েনি। মহামারীর কারণে মানুষ যখন চরম সমস্যায় রয়েছেন, তখন কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার বারবার পেট্রোপণ্যের উপর শুল্ক চাপিয়ে গিয়েছে। ফলে দেশের বাজারে পেট্রোপণ্যের দাম লাগামছাড়া ভাবে বেড়েছে। পেট্রোল ইতিমধ্যেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। ডিজেলও ৯২ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার সেই আন্দোলনের ঢেউ পৌঁছে গেল সংসদেও। তেলের দাম কমানোর দাবিতে সরব হলেন দলের নেতা অভিষেক। কেন তেলের দাম বাড়ছে, তা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ জবাব চাইলেও স্পষ্টতই দিশাহীন সরকার। সাংসদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পুরনো কথাই আওড়েছেন মন্ত্রী।