১ কোটি নাম বাদ? ছাব্বিশের ভোটে বাংলায় তৃণমূলের আসন-ভোট দুটোই বাড়বে: অভিষেকের চ্যালেঞ্জ বিজেপি-কে

Must read

বাংলায় না কি কমপক্ষে ১ কোটি ভোটারের নাম বাদ যাবে। আর SIR-এ সেই নাম বাদ গেলে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকবে না। সোমবার ডায়মন্ড হারবারে সেবাশ্রয় ২-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিজেপির এই দিবাস্বপ্ন নিয়ে তুলোধনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা স্থানীয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তিনি সাফ জানান, “আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, এসআইআর এর পরও ছাব্বিশের ভোটে বাংলায় তৃণমূলের আসন এবং ভোট সংখ্যা দুটোই বাড়বে।” এর পরেই মোদি সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (Abhishek Banerjee) বলেন, “আর সেটা হলে সাতদিনের মধ্যে বাংলার বকেয়া টাকা আপনি ছাড়বেন। সাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।”

এসআইআর নিয়ে তাড়াহুড়ো প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “আপনারা বলছেন ভোটার লিস্টে ম্যানিপুলেশন আছে। তার সঙ্গে এই তাড়াহুড়োর সম্পর্ক কী? এই ভোটার লিস্টেই তো আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন। তাছাড়া এসআইআরের উদ্দেশ্য কী? বেআইনি অনুপ্রবেশকারী তাড়ানো যদি প্রধান উদ্দেশ্য হয় তাহলে ত্রিপুরা, অরুণাচল প্রদেশ, নাগারাম, মিজোরাম, মণিপুর- সীমান্ত জেলা, যেখান দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটে সেখানে এসআইআর হচ্ছে না কেন?

আরও পড়ুন-ডায়মন্ড হারবারের মাটি কর্মভূমি: মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা-সহায়তায় সেবাশ্রয় ২ সূচনা অভিষেকের

এসআইআর শুরুর আগে থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, বড়-মেজো সব নেতারা দাবি করছেন- বাংলায় এক কোটি লোকের নাম বাদ যাবে। এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে পদ্মশিবিরকে ধুয়ে দেন অভিষেক। বলেন, “এরা এত পারদর্শী কীভাবে? হাইকোর্ট কবে, কী নির্দেশ দেবে তা আগে থেকে বলে দেয়। কমিশন কত নাম বাদ দেবে, সব আগে থেকে বলে দেয়। ইডি, সিবিআই, কমিশনের ভরসায় ভোট জিতবে ভেবেছে বিজেপি।“ নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে এক বন্ধনীতে রেখে তিনি বলেন, “বুথস্তরে সংগঠন নেই। বিজেপি ভাবছে এসআইআর এর মাধ্যমে কমিশনের ঘাড়ে ভর দিয়ে বাংলা দখল করবে। যাঁরা নিজেদের নেতা, কর্মীদের ধরে রাখতে পারে না, তারা নাকি বাংলা দখল করবে! আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, এসআইআর এর পরও ২৬ সালের ভোটে বাংলায় তৃণমূলের আসন এবং ভোট সংখ্যা দুটোই বাড়বে।” এর পরেই গর্জে উঠে অভিষেক বলেন, “যদি তৃণমূলের আসন কমে, তাহলে আমি যা শাস্তি দেবেন মাথা পেতে নেব। আর যদি বিজেপির আসান কমে তাহলে আমরা শাস্তি দেব না। সাতদিনের মধ্যে বাংলার বকেয়া টাকা আপনি ছাড়বেন। সাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ অ্যাকস্পেট করুন।”

এদিন ফের বাংলার বঞ্চনা প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে ‘বাংলা বিরোধী’ ‘জমিদারের দল’ বলেন অভিষেক। তথ্য দিয়ে জানান, কত টাকা রাজ্য থেকে জিএসটি বাবদ নিয়েও টাকা দেয়নি কেন্দ্র। বলেন, জিএসটি বাবদ গত সাত বছরে ২০১৭-১৮ সালে ৬৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ সালে ৮৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা, ২০১৯-২০ সালে ৮৪ হাজার ১৫ কোটি টাকা, কোভিডের সময় ২০২০-২১ সালে) ৮০ হাজার ৪ কোটি টাকা, ২০২১-২১ সালে ১ লক্ষ ১ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা, ২০২২-২৩ সালে ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৬২১ কোটি টাকা, ২০২৩-২৪ সালে ১ লক্ষ ২২ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা নিয়ে গিয়েছে কেন্দ্র। সাত বছরে বাংলার মাটি থেকে বাংলা বিরোধী জমিদারের সরকার ৬ লক্ষ ৫০ হাজার ১২৫ কোটি টাকা তুলেছে, তারপরও বাংলার প্রাপ্য ২ লক্ষ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। আদালত বলার পরও ১০০ দিনের টাকা দেয়নি। আসলে ওরা বাংলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। বাংলাকে গলা টিপে মারা, ভাতে মারা এটাই ওদের লক্ষ্য।

তৃণমূল সাংসদ বলেন, “বিগত কয়েকটি নির্বাচনে বাংলার মানুষ দেখেছেন বিজেপির ভাঁওতা প্রতিশ্রুতি। তাই একুশের মতো এবারেও ওদের বাংলা দখলের স্বপ্ন অধরায় থাকবে।”

শুক্রবার দিল্লিতে SIR নিয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (Election Commission) জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করেছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। তৃণমূলের (TMC) তরফে কমিশনের কাছে সেদিন যে পাঁচটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, ৭২ ঘণ্টা পরেও কমিশন যার জবাব দেয়নি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “কমিশনকে আমরা পাঁচটি প্রশ্ন দিয়েছিলাম। একটিরও উত্তর নেই। কারণ, ওরা জানে যে কাজটা করছে সেটা বেআইনি।” কমিশনের উত্তর না পেলে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন অভিষেক।

Latest article