প্রতিবেদন : বাংলার বঞ্চনার কথা তুলে ধরে মঙ্গলবার সংসদে ঝড় তুলে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেটে বাংলার জন্য কোনও বরাদ্দ না করা ১০০ দিনের কাজ ও আবাসের টাকা নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যাচার করে যাওয়ায় তুলোধোনা করলেন অর্থমন্ত্রী-সহ বিজেপিকে। এদিন ফের তিনি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের জন্য প্রশ্ন রেখেছেন, ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে হারার পর কেন এখনও পর্যন্ত শ্বেতপত্র প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার জানাল না বাংলাকে তারা ঠিক কত টাকা দিয়েছে? তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, এখন লোকসভায় তৃণমূলের ২৯ জন সাংসদ। আমরা তো ভেবেছিলাম অর্থমন্ত্রী শ্বেতপত্র তৈরি করে রাখবেন। কিন্তু উনি তো নিয়ম করে লোকসভা ও রাজ্যসভায় মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। বাংলার ১.৭২ লক্ষ কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। ‘কাগজ ঝুট নেহি বোলতা’ সাফ কথা অভিষেকের।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
আসলে মঙ্গলবার কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যে বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগের সত্যতা প্রকাশ হয়ে গেল। প্রমাণিত হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন ধরে বাংলার বঞ্চনা নিয়ে যে অভিযোগ করছিলেন তা যথার্থ। ১০০ দিনের কাজের খাতে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে কেন্দ্র যে বাংলাকে একটা টাকাও দেয়নি মঙ্গলবার লোকসভায় তা স্বীকার করে নিল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ানের কথায় হাটে হাঁড়ি ভেঙে গেল। বিজেপির মিথ্যাচারের ভাণ্ডার ফুটো হয়ে গেল। মঙ্গলবার লোকসভার প্রশ্নোত্তরপর্বে মঙ্গলবার এ-নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের আরও কয়েকজন সিনিয়র সাংসদ। উত্তরে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী স্বীকার করে নেন, দেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাকেই মনরেগা বা ১০০ দিনের কাজের খাতে ২০২১ থেকে কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। অভিষেক প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলার ১২ জন বিজেপি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা কি কখনও বাংলার বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন? সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, শুধু মুখে বললেই তো হবে না আপনি শ্বেতপত্রটা প্রকাশ করছেন না কেন? আপনারা যাঁরা মিডিয়ার বন্ধু, তাঁরা গিয়ে খালি বলুন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছে শ্বেতপত্রটা প্রকাশ করুন। আমি কিছু বলছি? আমি তো বলছি যে শ্বেতপত্রটা প্রকাশ করতে। বাংলা কত টাকা খরচা করেছে। বাংলার মানুষের জন্য। যেখানে বাংলায় তৃণমূল ভোট পাইনি। এবং আলিপুরদুয়ারে আমরা হেরেছি। জলপাইগুড়িতে আমরা হেরেছি। আপনি আমাকে দেখান না, আপনার ক্যামেরা নিয়ে খুঁজে একটা গ্রামে গিয়ে একজন মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাননি বলুন। একজন মহিলা বার করুন তো আপনি পুরুলিয়ায়, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে। যে বলবে আমি তৃণমূলকে ভোট দিইনি কিন্তু আমি কন্যাশ্রী পাইনি। বলতে পারবে? এই দ্বিচারিতার রাজনীতি আমরা করি না। সুতরাং যারা বলছে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আজকে দুধ কা দুধ পানি কা পানি হয়ে গিয়েছে।