প্রতিবেদন : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, উপনির্বাচন কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে ঝড় তুলছে প্রতিদিন। এদিন আবারও বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে পর প্রচার সারেন। ছিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
যেমন শান্তিপুর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে গিয়ে বলেন, ‘নতুন শান্তিপুর গড়ব। আমার উপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখুন আপনারা। উন্নয়ন আমার কাছ থেকে বুঝে নেবেন। আমাকে কথা দিন, আমাদের প্রার্থীকে জেতাবেন। আগামী দিন শান্তিপুর উন্নয়ন নিয়ে নদিয়া জেলাকে পথ দেখাবে।’’ জানান, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি হচ্ছে। স্টেডিয়াম সংস্কারে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। শান্তিপুর কালনা-ভাগীরথী নদীতে সেতুর আগামী বছর নভেম্বরে উদ্বোধন হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। অর্থাৎ নতুনভাবে তৈরি হবে শান্তিপুর। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদধন্য ব্রজকিশোর গোস্বামীকে জেতাতে হবে। অভিষেকের দাবি, ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জয়লাভ করবেন ব্রজকিশোর।” বিজেপির জগন্নাথ সরকারের তীব্র সমালোচনা করে অভিষেক বলেন, ‘‘সাংসদপদে থেকে মন্ত্রী হবেন, নিজেকে গুছিয়ে নেবেন। তাই বিধায়কপদ ছেড়ে সাংসদপদ আঁকড়ে থেকেছেন। মানুষ যোগ্য জবাব দেবেন ভোটে। উনি শান্তিপুরের মানুষের সম্মানহানি করেছেন। মানুষের আবেগকে অপমান করেছেন। শুধু বাংলা নয় দেশকে পথ দেখাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ বিজেপিকে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘‘বিজেপি নামক ভাইরাসের ভ্যাকসিন হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
আরও পড়ুন : ভ্যাকসিন ছাড়া অযোধ্যা পাহাড়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ
খড়দহে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘শোভনদা আমার রাজনৈতিক গুরু। তাঁর নেতৃত্বে ও আহ্বানে আশুতোষ কলেজে ছাত্র পরিষদে যোগ দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলাম। শোভনদার সততা, নিষ্ঠা, তাঁর কাজ দিয়ে আমাদের সকলকে আগলে রাখতেন। এখনও তাই রাখেন। শোভনদা যেখানে দাঁড়িয়েছেন, জিতেছেন। তাই বলি, উনি খড়দহ থেকেও ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতবেন।’’ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে নির্বাচনী প্রচারে এসে এভাবেই প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিজেপিকে একহাত নিয়ে বলেন, ‘২০২১-এর নির্বাচনের আগে বিজেপির অপপ্রচার, টাকা ঢালা, বিজ্ঞাপন, চাটার্ড প্লেনে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলার অলিগলিতে ঘোরাঘুরি করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা রটিয়েছেন। আমি বলেছিলাম, ওঁদের তো অলিতে-গলিতে ঘোরা হবে না। তাই ঘুরে যান। ফল কী হল, সবাই দেখলেন। এই চার উপনির্বাচনেও সবক’টিতে জয় পাব। ওরা চেয়েছিল ধর্মের নামে, জাতপাতের নামে বাংলাকে দ্বিখণ্ডিত করতে। বাংলার মানুষ যোগ্য জবাব দিয়ে দিয়েছে।’ রহড়াবাজারের এই সভায় ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক প্রমুখ।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সুব্রত মণ্ডলকে দেখে উন্নয়নের প্রহর গুনছেন মানুষ। আসলে এলাকার আম জনতা সব সময় পাশে পেয়েছেন তাঁকে। মানুষও তাঁকে সমর্থন জানাচ্ছেন। মঙ্গলবার সুব্রতর প্রচারে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সওকত মোল্লা। তিনি বলেন, ,আপনারা ভূমিপুত্র সুব্রত মণ্ডলকে জেতান। আপনারা আগামী ৩০ তারিখ একদিনের জন্য ভোট দিন। আগামী পাঁচ বছর আপনাদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্ব আমাদের।’ প্রচারে ঝড় তুলে সকালে নদীর ঘাট, পাড়া প্রচার আর বিকেলে বড় জনসভা দিয়ে শেষ হয় গোসাবা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত মণ্ডলের মঙ্গলবারের প্রচার। নদী আর জঙ্গলে ঘেরা এই গোসাবা দ্বীপ। ১৬টি পঞ্চায়েত এলাকা ছড়িয়ে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে। গত কয়েকদিন ধরে প্রতিটি দ্বীপে পৌঁছে গিয়েছেন প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল। এদিন সকালে রাঙাবেলিয়া জেটিঘাটে পৌঁছন প্রার্থী। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা এই জেলার বিধায়ক সওকত মোল্লা। প্রার্থী আসার খবর আগে থেকেই ছিল এলাকাবাসীর কাছে। তাই মহিলারা গাছে ফোটা জবা, টগরের মালা নিয়ে হাজির ছিলেন। অনেকের কাছে ছিল মঙ্গলশঙ্খ। প্রার্থী লঞ্চ থেকে জেটিতে নামার সঙ্গে সঙ্গে মায়েরা শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে প্রার্থীকে বরণ করে নেন।
উদয়ন গুহর প্রচারে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদিকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন , ‘মানুষের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। একটা ভোটও আপনারা অপাত্রে দেবেন না। উন্নয়নের সাক্ষী থাকতে আপনারা এগিয়ে আসুন। বিজেপিকে জবাব দিন।’’ মঙ্গলবার দিনহাটার নিগমনগর মেলার মাঠে প্রচার সভায় কোভিড বিধি মেনে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পাশাপাশি প্রচারে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে বিজেপি। কারণ একের পর এক মিথ্যাচার করে মানুষের থেকে তারা ক্রমশ সরে গিয়েছে। স্বভাবতই দিনহাটার উপনির্বাচনে বিজেপির প্রচারে কোনও ঝাঁজ নেই।