পূর্ব মেদিনীপুরে ভাঙল প্রায় ৬০০ কাঁচা বাড়ি, ৫০০ গাছ, ক্ষতি ধান-সবজির, ডানার থাবা থেকে রক্ষা পেল দিঘা

অল্পের জন্য দানার হাত থেকে রক্ষা পেল দিঘা। দিনভর সমুদ্রের গর্জন থাকলেও ঢেউ গার্ডওয়াল টপকাতে পারল না।

Must read

সংবাদদাতা, দিঘা : অল্পের জন্য দানার হাত থেকে রক্ষা পেল দিঘা। দিনভর সমুদ্রের গর্জন থাকলেও ঢেউ গার্ডওয়াল টপকাতে পারল না। শুক্রবার সকাল থেকেও দিনভর মেঘাচ্ছন্ন আকাশ সৈকত এলাকায়। বৃষ্টি ছাড়া ঝড়ের কোনও প্রভাব পড়ল না দিঘায়। তবে হাওয়ার প্রবল গতিবেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলের একাধিক ব্লক। শুক্রবারও দিনভর বৃষ্টি হওয়ায় পর্যটকদের সমুদ্র চত্বরে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি পুলিশের তরফ থেকে। জেলায় সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয় হলদিয়া ও তমলুক মহকুমায়। এই সমস্ত এলাকার বিভিন্ন এলাকায় অতিবৃষ্টিতে জমে গিয়েছে জল। ক্ষতি হয়েছে চাষের।

আরও পড়ুন-জগন্নাথ মন্দির ঠিক আছে কিনা জেলাশাসকের কাছে জেনে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী

জেলা প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে নবান্নের নির্দেশে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, রামনগর ১, রামনগর ২, দেশপ্রাণ, নন্দীগ্রাম ১, নন্দীগ্রাম ২, পূর্ব ও পশ্চিম পাঁশকুড়া-সহ বেশ কটি ব্লকে আংশিক পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে হলদিয়া মহকুমায়। আবহাওয়া দফতরের বিকেল পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, হলদিয়াতে বৃষ্টি হয়েছে ৮০ মিমি, কাঁথিতে ২৯মিমি এবং দিঘায় ৩৭.৫ মিমি। জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ সব মিলিয়ে ৭০ মিমি। জল জমে গিয়েছে একাধিক জায়গায়। গত কয়েকদিন আগে বন্যার কবলে পড়ূ পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই সমস্ত এলাকাতেও ফের বৃষ্টি হওয়ায় জল জমেছে একাধিক গ্রামে। শুক্রবার দুপুরে সব জেলার জেলা প্রশাসনকে নিয়ে বৈঠক থেকে পাঁশকুড়াকে বিশেষভাবে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা প্রশাসন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জেলায় গাছ ভেঙে পড়েছে ৪০০-৫০০টি। সেগুলো শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই সরানো হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে একই পরিমাণ গাছ লাগানো হবে বন দফতরের তরফে। জেলায় প্রায় ৭১টি বিদ্যুতের পোস্ট ভেঙে পড়েছে। ৩০ কিলোমিটারের মতো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে নষ্ট হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে যাবে বলে জানান জেলাশাসক।

আরও পড়ুন-বিধানসভা ভোটে জেলার সব আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন অনুব্রত

জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে ভেঙে পড়া কাঁচা বাড়ির সংখ্যা ৫০০-৬০০টি। চাষেও ব্যাপক পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত জেলা। আমন ধানে প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমির ধান শুয়ে গিয়েছে। জেলায় ১৫০০ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রাথমিকভাবে এই তথ্য পাওয়া গেলেও আগামী চার দিন ধরে প্রতিটি ব্লকের বিডিওরা ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট নিয়ে পর্যালোচনা করে সেই রিপোর্ট পাঠাবেন হবে নবান্নে। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় জেলার যাবতীয় ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়‌ শুক্রবার। দুপুরে জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘা, কাঁথি, রামনগরের মত এলাকাগুলিকে নজরে রাখার পরামর্শ দেন। ৪৮ ঘন্টা না কাটা পর্যন্ত জেলায় সমস্ত এনবিআরএফ ও এসডিআরএফ মোতায়েন রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

Latest article