মোদির বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পে বরাদ্দের ৮০ শতাংশই খরচ বিজ্ঞাপনে

সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট বলছে, শুরুর পর থেকে প্রতি বছরই বিজ্ঞাপনী খরচ ধাপে ধাপে বেড়েছে। তুলনায় কমেছে মূল কাজের খরচ।

Must read

প্রতিবেদন : ক্ষমতায় এসে অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প চালু করেছিলেন। তার জন্য তাক লাগানো প্রচার চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সময় বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, এই প্রকল্প চালু করতে গিয়ে যত প্রচার করা হয়েছে আদতে কাজ হয়েছে তার নামমাত্র।

আরও পড়ুন-দলের বিরুদ্ধেই সরব গোয়ার বিজেপি বিধায়ক

আসল কাজের চেয়ে প্রচারই হয়েছে বেশি। বিরোধীদের অভিযোগ যে এতটুকুও অতিরঞ্জিত নয় তার প্রমাণ মিলল খোদ মোদি সরকারের পেশ করা রিপোর্টেই। নারী কল্যাণ বিষয়ক সংসদীয় কমিটি ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সংসদে পেশ হওয়া নারী কল্যাণ কমিটির রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পে প্রথম তিন বছরে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল তার ৮০ শতাংশই খরচ হয়েছে বিজ্ঞাপনী প্রচারে। সরকারি বিজ্ঞাপনের প্রচারের খরচ মেটানোর পর বাকি মাত্র ২০ শতাংশ টাকা যাদের জন্য ওই প্রকল্প, তাদের পিছনে খরচ হয়েছে। যে সংসদীয় বিষয়ক কমিটি ওই রিপোর্ট দিয়েছে তার শীর্ষে আছেন বিজেপিরই সাংসদ হিনা গাভিট।

আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রীর ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক

ওই কমিটির রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পে ৪৪৬ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল মোদি সরকার। বরাদ্দকৃত টাকার ৭৮.৯১ শতাংশ টাকা ব্যয় করা হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতেই। প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ফলাও করে এই প্রকল্পটির ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন-বিরাট নিয়ে বিতর্কের আবহে সোজাসাপ্টা সৌরভ

বলেছিলেন, দেশে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এবং কন্যাভ্রূণ হত্যার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলাই উদ্দেশ্য। কিন্তু সংসদীয় কমিটির ওই রিপোর্টের পর সেই কাজ আদৌ কতটা হয়েছে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল। কারণ ওই কাজের জন্য বরাদ্দ অর্থের পাঁচ ভাগের চার ভাগই চলে গিয়েছে শুধু বিজ্ঞাপনী খরচ মেটাতে। পড়ে থাকা সামান্য অর্থ দিয়ে আর কী কাজ হবে?

সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট বলছে, শুরুর পর থেকে প্রতি বছরই বিজ্ঞাপনী খরচ ধাপে ধাপে বেড়েছে। তুলনায় কমেছে মূল কাজের খরচ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, নামমাত্র অর্থে কীভাবে এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে সরকার? যদিও সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দেয়নি কেন্দ্র। বিরোধীরা বারবারই অভিযোগ করেছেন, মোদি যত না কাজ করেন তার চেয়ে প্রচার করেন অনেক বেশি। তাঁর প্রচারের ঘনঘটায় আসল কাজ গুরুত্বহীন হয়ে যায়। এটা যে নেহাত বিরোধীদের অপপ্রচার নয় এবার কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই সংসদে সে কথা স্বীকার করে নিল।

Latest article