বাসুদেব ভট্টাচার্য, জলপাইগুড়ি: বাংলার কাছে রাজনৈতিক লড়াইয়ে, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে পর্যুদস্ত হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিহিংসার পথ বেছে নিয়েছে। বারবার বাংলাভাগের চেষ্টা চালাচ্ছে। সেই চক্রান্ত ফাঁস করে দিয়েছে ‘লোকমত টাইমস’। জানিয়েছে, বাংলা ও বিহারকে বশে আনতে না পেরেই তারা ভাঙতে চাইছে। খবর জানাজানি হতেই, চারিদিকে নিন্দার ঝড়। মুখ খুলেছেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট মানুষেরাও। আজ প্রতিবাদী জলপাইগুড়ি জেলা।
ময়নাগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ সুস্মিতা পণ্ডিত বললেন, বাংলাভাগ করলে কী যে উপকার হবে, বুঝে পাচ্ছি না। কী চিন্তাভাবনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, বোধগম্য হচ্ছে না। যাঁরা এনিয়ে ভাবছেন, তা ঠিক হচ্ছে না। তাছাড়া গোটা বাংলা–সহ উত্তরবঙ্গে ব্যাপক উন্নয়ন (North Bengal Development) হয়েছে। স্কুল–কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। চা–বাগান অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দি কলেজও রাজ্য সরকার করে দিয়েছে। তাই বাংলাভাগের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ভুল। বাংলার মানুষ যথেষ্ট বুদ্ধিমান। তাঁরা কোনওভাবেই এই চক্রান্ত সফল হতে দেবেন না।”
আরও পড়ুন: সিএবি নির্বাচন: দাদা স্নেহাশিসকে সভাপতি করে সরে গেলেন সৌরভ
রাজনীতিক মহুয়া গোপের মতে, ‘‘বঙ্গভঙ্গ শুধুমাত্র রাজনৈতিক চক্রান্ত। বিজেপি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দিয়ে রাজ্যভাগে উসকানি দিচ্ছে। এই চক্রান্ত কোনওভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। যাদের নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করে, বাংলাভাগের চেষ্টা করছে, তাদের পাশে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বুঝিয়েছেন। তারপরই তাঁরা চক্রান্ত থেকে সরে এসেছেন। গত দশ বছর রাজ্য সরকার যেভাবে উন্নয়ন করেছে, সেই নিরিখে বাংলার মানুষই বাংলাভাগ রুখে দেবে। বিজেপি উসকানি দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট পার করতে চাইছে। বিধানসভায় হালে পানি না পেয়ে ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিশি নিয়েছে। তাদের ভাঁওতাবাজি মানুষ বুঝে গিয়েছে। তাই চক্রান্ত কোনওভাবেই সফল হবে না।”
lবিশিষ্ট নাট্যকর্মী অলোক দত্ত বললেন, ‘‘আমরা সবাই ভারতবাসী, পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য। এই রাজ্য যদি ভারত থেকে আলাদা হয়, খুব অন্যায় হবে। যাঁরা এই চিন্তাভাবনা করছেন, তাঁরা অশুভ চিন্তা করছেন। সোমবার দীপাবলি, এই উৎসবে ভূত তাড়ানো হয়। যাঁরা বাংলাভাগে উদ্যোগী, তাদের প্রতি আমার বার্তা, তাঁদের যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয়। আমি নাট্যকর্মী ও সমাজকর্মী হিসেবে এর সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছি।’’
শিক্ষারত্ন গোবিন্দ পাল জানালেন, ‘‘বাংলাভাগ কোনওভাবেই হবে না। সাধারণ মানুষই তা মানবে না। পশ্চিমবঙ্গবাসী মিলেমিশে থাকতে চাই। তাছাড়া বর্তমান রাজ্য সরকার উন্নয়নের (North Bengal Development) বন্যা বইয়ে দিয়েছে। উত্তরবঙ্গকে আলাদাভাবে দেখার ব্যাপারও নেই। রাজ্য সরকার উত্তরকন্যা তৈরি করেছে। আগে যে কাজে কলকাতা যেতে হত, এখন শিলিগুড়িতেই সেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার জন্য বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। ২০১১ সালের পরে আমূল বদলে গিয়েছে রাজ্যে৷”