দেবর্ষি মজুমদার, মাড়গ্রাম: রামপুরহাট থেকে অনতিদূরে বৃহৎ জনপদ মাড়গ্রাম (Margram- Durga Puja)। সেখানকার মাধবীতলা পাড়ায় সাতশো বছরের বেশি পুরনো রানি ভবানীর আমলের মজুমদার বাড়ির পুজোর বিশেষত্ব হল মা এখানে দশভুজার পরিবর্তে চতুর্ভুজা নবপত্রিকায় মায়ের ছিন্নমস্তা এঁকে সেই রূপেই শুরু হয় পুজো। বিশেষ রীতিতে সপ্তমী থেকে নবমী তিনদিন ভোগ হয়। অন্নভোগের সঙ্গে তেরো রকমের ভাজা, চোদ্দ রকমের তরকারি, মোচার বড়া ভাজা, মোচার বড়ার রসা, মুগডাল, আমসত্ত্ব দিয়ে পরমান্ন, চাটনি এলাচ, দারুচিনি দিয়ে লবঙ্গ গেঁথে এক খিলি পান ও এক গ্লাস জল এই হল ভোগের উপচার। মা টক ও বিউলির ডাল খান না। বংশধর ও পুজারি শ্রীমন্ত মজুমদার জানান, একবার পরখ করতে চার ঘণ্টা প্রেসার কুকারে দিয়েও সিদ্ধ হয়নি বিউলি ডাল। ভোগের পদে রাখা হয় না বিউলি ডাল। অষ্টমীর সন্ধিপুজোয় দুধ, সর, দই, মাখন, চাঁছি আর ক্ষীর দেওয়া হয়। দশমীতে মাকে দেওয়া হয় চিঁড়ে, খই, দই, ধান, ধুতরো ও সিদ্ধি। পুজোয় কোনও বলি হয় না। নবমীর দিন যজ্ঞ শেষে চালকুমড়ো বা কুষ্মাণ্ড উৎসর্গ হয় বলি ছাড়াই। নেই হাড়িকাঠ। সপ্তমী থেকে নবমী ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ১৪০০ মানুষ একসঙ্গে পাত পেড়ে খান। তবে জমিদার বাড়ির সে বৈভব আর নেই। তাই পুজো হয় গ্রামের মানুষের সাহায্যে। মুখ্যমন্ত্রীর আর্থিক অনুদান মিলছে তিন-চার বছর। শ্রীমন্তবাবু বলেন, অর্থাভাবে আজ পারিবারিক পুজো হয়েছে বারোয়ারি। জনশ্রুতি, প্রাচীন কামকোটি গ্রাম মাণ্ডব্য মুনির নাম অনুসারে হয় মাড়গ্রাম। মুনির অভিশাপে মাড়গ্রামে (Margram- Durga Puja) মাত্র এক ঘর ব্রাহ্মণের বাস। তাঁদেরই অষ্টম প্রজন্ম শ্রীমন্ত মজুমদার। বংশের অন্যরা অন্যত্র বাস করেন। তিনিই মায়ের পুজারি।
আরও পড়ুন-৬৫ ফুট দুর্গার ডাকের সাজ