নির্বাচন কমিশন উত্তরের ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকারকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার। তবে, সেই অভাব পূরণ করে দেবে রাজ্য প্রশাসন। শুক্রবার, বার্নিশের সভা থেকে বিরাট ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঝড়ে বিধ্বস্ত মানুষের অ্যাকাউন্টে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঢুকবে। তিনি সাফ জানিয়ে, “নির্বাচন কমিশন চাইলে আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তবে আমরা আপনাদের আর্থিক সহায়তা দেব।“
এদিন ঝড়ে বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সভা করেন অভিষেক। সেখান থেকে তিনি ঘোষণা করেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিটি ঝড় বিধ্বস্ত মানুষের অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাঠাব। নির্বাচন কমিশন চাইলে আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তবে আমরা আপনাকে আর্থিক সহায়তা দেব।“ বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “অন্যদিকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র আবাসের জন্য আপনার তহবিল বন্ধ করে দিয়েছে।“
বাংলায় ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে গোহারা হেরে আবাস ও ১০০দিনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বঞ্চিত জবকার্ড হোল্ডারদের ১০০দিনের কাজের টাকা দিয়েছেন। আবাসের টাকাও দেবেন। ইতিমধ্যেই বাংলার বাড়ি প্রকল্পে টাকা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য বাজেটে পাশ হয়েছে। এদিন দুপুরে দিনহাটা ও আলিপুরদুয়ারে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার সভা থেকে মমতা জানান, যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে প্রশাসনের মাধ্যমে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। যাঁরা ২০ হাজার পেয়েছেন, প্রশাসন আবার ৪০ দেবে। মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার প্রশাসন পৌঁছে দেবে। আপনারা কাজ শুরু করুন।“ এরপরেই বার্নিশের সভা থেকে অভিষেক ঘোষণা করেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিটি ঝড় বিধ্বস্ত মানুষের অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাঠাবে রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ধূপগুড়ি মহকুমার পর এবার জোড়া সেতু করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অভিষেকের
মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা, “গরিব লোকেদের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমায় যদি কেস দাও আমি গর্ব বোধ করব। গর্বিত হব।“ অভিষেক (Abhishek Banerjee) এদিন বলেন, “নির্বাচন কমিশন চাইলে আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তবে আমরা আপনাকে আর্থিক সহায়তা দেব।“
মিনি টর্নেডোয় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দুর্যোগের রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। পরদিন হাসপাতালে গিয়ে আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ান অভিষেক। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত মানুষের বাড়ি তৈরির অনুমতি চেয়ে রাজ্য প্রশাসনের তরফে নির্বাচন কমিশনে আর্জি জানানো হয়। কিন্তু সেই আবেদন না মেনে, পুরনো নিয়মে অল্প ক্ষতিগ্রস্তদের ৫হাজার ও বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানায় কমিশন। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন তোলেন, বাড়ি তৈরি করতে গেলে ২০হাজার টাকায় কী হয়! এরপরেই তিনি জানান, ধাপে ধাপে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অধীন ১লাখ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
বাংলায় প্রচারে এসে নির্বাচনী আচরণ বিধির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, ইডির উদ্ধার করা টাকা তিনি মানুষের মধ্যে দেবেন- সেই বেলায় বিধি ভঙ্গ হয় না! তাছাড়া প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দুর্গত মানুষকে সাহায্যই একমাত্র লক্ষ্য। বাংলার বাড়ি প্রকল্প রাজ্যে সরকারের কোনও নতুন ঘোষণা নয়। গত রাজ্য বাজেটেই সেটা পাশ হয়েছে। সেই প্রকল্পেই ঝড়ে বিপর্যস্ত মানুষকে সাহায্য করবে রাজ্য প্রশাসন। এখানে বিধি ভঙ্গের প্রশ্ন ওঠা উচিত নয় বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।