প্রতিবেদন : আমরা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা কোনও প্ররোচনায় পা দেব না। আমরা এসবে নয়, উন্নয়নে বিশ্বাসী। কিন্তু এইসব ধানতলা, বানতলার ক্রিমিনালরা, তারা যদি হুমকি দেয়, বিনা প্ররোচনায় আমাদের কোনও কর্মীর গায়ে হাত দেয়, তাহলে পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, ধানতলার ক্রিমিনালরা যখন হুমকি দিতে আসবেন পকেটে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডটা নিয়ে আসবেন। মেরে হাত ভেঙে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। আমরা গন্ডগোল চাই না। কিন্তু বাম আমলের গুন্ডা, কোথাকার কঙ্কাল-কাণ্ডের মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ জেগে উঠছে, ধানতলা ধর্ষণের আসামি, খুনের মামলার আসামিরা এখানে বিজেপির মঞ্চে দাঁড়িয়ে আমাদের হুমকি দিয়ে যাবে, আক্রমণ করে যাবে, এসব চলবে না। বিনা কারণে তৃণমূলের কারও কেশাগ্র স্পর্শ করলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না। এই ভাষাতেই সোমবার রানাঘাটের প্রতিবাদী সভার মঞ্চ থেকে বিজেপির অপরাধীদের হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
আরও পড়ুন-আজ থেকে তিনদিন মকড্রিল, কাল মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক
কয়েকদিন আগেই বিজেপির সভা থেকে ধানতলা ধর্ষণ-কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে হুমকি দেন। এদিন রানাঘাটের মাটিতে দাঁড়িয়ে তারই জবাব দেন কুণাল। বলেন, আমরা গন্ডগোল চাই না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো ৬০-৭০টা প্রকল্পকে সামনে রেখে উন্নয়নের কাজ করছেন। আমরা উন্নয়ন দিয়েই বাংলা গড়ব, উন্নয়ন দিয়েই কুৎসার জবাব দেব। মানুষকেও বুঝতে হবে কোনটা শুভ শক্তি, আর কোনটা অশুভ শক্তি। কেউ বলবে বাংলা ভাগ করো, কেউ বলবে টাকা দিও না। আপনারা এসব প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সেনাপতি। আমাদের নেতারা অশান্তি চান না। আমরা এই বিজেপির থেকে হিন্দুত্ব শিখব নাকি? আমরা হিন্দুত্ব শিখব শ্রীরামকৃষ্ণের কাছ থেকে, স্বামী বিবেকানন্দের কাছ থেকে, মা-ঠাকুমার কাছ থেকে। ওদের আমরা হিন্দুত্বের এজেন্সি দিইনি। পুরনো বিজেপিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক লড়াই আছে। কিন্তু এই দলবদলু, যারা আপনাদের দলকে হ্যাইজ্যাক করেছে, তাদের আমাদের হাতে তুলে দিন। ওদের ব্যবস্থা আমরা করব। পঞ্চায়েত ভোট, তারপর ২৪-এর ভোট, আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আশীর্বাদ করুন, দেখবেন ২৪-এর ১৫ অগাস্ট লালকেল্লায় হাওয়াই চটি পরা একজন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা তুলছেন। কুণাল ছাড়াও এদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। নদিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি শ্রীচৈতন্য দেবকে স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের রেশন জালিয়াতি
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। জনগণের আদালতে এর বিচার হবে। শুভেন্দু অধিকারী, আপনি বাংলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ প্রথমে পঞ্চায়েত তারপর লোকসভায় তাদের রায় দিয়ে বুঝিয়ে দেবে। সেই সঙ্গে বাম-রামের জোট নিয়েও জনগণকে সতর্ক করে দেন তিনি। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ভারতীয় জঞ্জাল পার্টি মনুবাদে বিশ্বাস করে। মানুষে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না ওরা। ওরা যে ভাষায় কথা বলছে মানুষ তা নেবে না। আমরা তূণমূল কর্মীরা উন্নয়নে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষ ওদের সময়মতো তা বুঝিয়ে দেবে। এছাড়াও এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, সাংসদ আবির বিশ্বাস-সহ সব স্তরের জেলা নেতৃত্ব।