প্রতিবেদন : স্বার্থে আঘাত লাগতেই গৌড়বঙ্গ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রাজ্যপাল। প্রসঙ্গত, এই দুই অন্তর্বর্তী উপাচার্যই আচার্যের নিয়োজিত। কিন্তু সেদিকে সুবিধে করতে না পেরে এবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে অপসারণের জন্য অনুরোধ করে ট্যুইট করলেন রাজ্যপাল। আর এতেই যে তিনি সাংবিধানিক পদে থেকেও অসাংবিধানিক কাজ করছেন সেই বিষয়টিই ফের স্পষ্ট হল। নিজের রং দেখাতে শুরু করলেন বোস। এই নিয়ে কার্যত রাজ্যপালকে পাল্টা জবাব দিয়ে তাঁর এক্তিয়ার মনে করিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
আরও পড়ুন-যাঁরা ভোট দেননি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদেরও বোঝাতে হবে : অভিষেক
পাশাপাশি এই বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার সম্মেলনের দিন থেকে গাত্রদাহ শুরু হয়েছে রাজ্যপালের। এরপরেই নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকরী উপাচার্য রজতকিশোর দেকে সরিয়ে দেন তিনি। কিন্তু উচ্চশিক্ষা দফতর তাঁকে সেই পদে পুনর্বহাল করে। অপরদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এই সবকিছু মিলিয়েই রাজ্যের কাছে গো-হারান হেরেছেন রাজ্যপাল। নিজের সেই রাগ মেটাতে এবার শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে তাঁকে অপসারণের প্রস্তাব এনেছেন। তবে রাজ্যপালের এমন সুপারিশের সত্যতা নিয়ে ট্যুইটে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন ব্রাত্য বসু।
ট্যুইট করে শিক্ষামন্ত্রী লেখেন, রাষ্ট্রপতির কাছে আমি রাজ্যপালের অপসারণের সুপারিশ করলে যা হবে সেটা যতটা হাস্যকর হবে, এটা ততটাই হাস্যকর। আমি বিধিভঙ্গ করলে কোনও রাজনৈতিক দলের সেটা কমিশনের নজরে আনার কথা, তার পর পদক্ষেপ করার কথা কমিশনের। এই ধরনের অভিযোগ করে উনি (রাজ্যপাল) সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করেছেন এবং নিজের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে এনেছেন। সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে, মন্ত্রীর নিয়োগ বা অপসারণ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। উনি (রাজ্যপাল) শুধু নিজের আসল রং দেখাননি, নিজের সাংবিধানিক সীমাও ছাড়িয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
ব্রাত্যর প্রশ্ন, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হয়ে থাকলে বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করবে। তারা কেউ অভিযোগ করছে না। আমি একা ছিলাম না, আরও অনেক মন্ত্রী ছিলেন ওখানে। শুধু আমার ব্যাপারেই বেছে বেছে এমন সুপারিশ কেন?
ব্রাত্য বসুর কথায়, কাকে মন্ত্রী সভায় রাখা হবে, কাকে না রাখা হবে, তা মুখ্যমন্ত্রীর উপর নির্ভর করে। উনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে সুপারিশ করতে পারেন। ওই সম্মেলনে গিয়ে কোনও ভুল করিনি। আবারও ওই ধরনের একটি সম্মেলন করব। রাজ্যপালের নিযুক্ত উপাচার্যই সম্মেলনের অনুমতি দিয়েছিলেন, তাই বেআইনি কিছু ঘটলেও উপাচার্যের দায়িত্ব বলে জানান তিনি।
এদিকে, যেহেতু এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুযায়ী নতুন করে উপাচার্য নিয়োগের অনুমতি নেই আচার্যের তাই তাঁকে আবার পুনর্বহাল করেছে উচ্চ শিক্ষা দফতর।
এদিন ওয়েবকুপার তরফে সহসভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল ও সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, নির্বাচন বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না দেখার দায় রাজ্যপালের না কমিশনের?