অসীম চট্টোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে পাথেয় করেই নিঃস্বার্থ সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন আদিবাসী তরুণী ইমানী মুর্মু। ছায়ার ঘোমটা মাথায় দেওয়া নয়নাভিরাম আদিবাসী গ্রাম ‘মোলডাঙা’। প্রায় একশো দরিদ্র পরিবারের বাস কাঁকসার এই অখ্যাত জনপদে। গ্রামের কচিকাঁচাদের সারস্বত ভুবনে বিনে পয়সার দিদিমণি ইমানী। তাদের নিয়েই সুখের বারোমাস্যা। গ্রামের প্রান্তিক পরিবারগুলির খুদেদের সিংহভাগই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। অনেকেই পড়ে পাশের গ্রাম মলানদিঘি প্রাথমিক স্কুলে।
আরও পড়ুন-পঞ্চায়েতে অনলাইনে বাড়ির নকশা
এ গ্রামের হাইস্কুলেও রয়েছে শিক্ষিকার অপ্রতুলতা। তাই উচ্চশিক্ষিতা ইমানী এই স্কুলেও দেন স্বেচ্ছাশ্রম। সারাদিন ধরেই চলে ছাত্র পড়ানোর কাজ। ক্লান্তদেহে বাড়িতে ফিরেও আবার খুলে দেন তাঁর ‘বিনে পয়সার পাঠশালা’। প্রায় ৩০-৩৫ জন আদিবাসী শিশু-কিশোরদের তিনি পরম যত্নে চেনান ইংরেজি, বাংলা বর্ণমালার হরফ। শেখান ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান। নিজের হাতে ধরে ধরে শেখান কীভাবে কষতে হয় লসাগু, গসাগু, ঐকিক নিয়মের অঙ্ক। শিশু বিভাগ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের অবারিত দ্বার এই ‘দিদিমণির পাঠশালা’। সরকারি স্কুলে স্থায়ী শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন ছিল চোখে। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসেনি।
আরও পড়ুন-বেআইনি পার্কিং রুখতে কঠোর পুলিশ
তাই সরকারি স্কুলের মাইনে করা শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন ঘরে তালা দিয়েছেন অনেককাল আগেই। তিনি বলেন, সবাই যদি পয়সার পিছনেই ছুটে বেড়ান, তাহলে এইসব বঞ্চিত, নিপীড়িত শিশুগুলোকে সাক্ষর করে তুলবে কে? জীবনের আদর্শ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু হলেন জীবনের ধ্রুবতারা। এই দুই সফল নারীর প্রেরণাকে পাথেয় করেই ‘আন্তর্জাতিক নারীদিবস’-এ নারীশক্তির আইকন হয়ে উঠেছেন লাজুক তরুণী ইমানী।