প্রতিবেদন: রেলের ব্যর্থতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার চরম পরিণতি। সেইসঙ্গে আর্থিক অনিয়ম কেমন করে জাঁকিয়ে বসেছে মোদির রেলে, মিলল তারও অকাট্য প্রমাণ। ২০২০ থেকে ২০২৩— তিন বছরের মধ্যে ভারতীয় রেলওয়ে মোট ৫৪৩ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বা ক্যাগ রিপোর্টে। গত সোমবার লোকসভায় পেশ করা হয়েছে এই উদ্বেগজনক রিপোর্ট, যেখানে রেলের অন্তত ২৫টি আর্থিক অনিয়মের ঘটনাকে দায়ী করা হয়েছে বিশাল অঙ্কের ক্ষতির জন্য। রিপোর্ট অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি রেল জ়োন ব্যর্থ হয়েছে রাজস্ব আদায়ে। বিশেষ করে উত্তর রেল ৫টি সরকার পোষিত স্কুলের কাছে জমির লাইসেন্স বাবদ ১৪৮.৬১ কোটি টাকা আদায় করতে পারেনি, যা ক্ষতির মধ্যে সবচেয়ে বড় অঙ্ক। জমির বাজারমূল্যের ৬ শতাংশ হিসাবে টাকা আদায়ের সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা কার্যকর হয়নি। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ-পশ্চিম, উত্তর-মধ্য, পূর্ব উপকূল, পূর্ব, উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য, পশ্চিম-মধ্য ও মধ্য রেলওয়ের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাছ থেকে জেলা খনিজ ফাউন্ডেশনের ৫৫.৫১ কোটি টাকা আদায়ে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে। এই তহবিল খনি এলাকা ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের স্বার্থে ব্যবহার করার কথা ছিল।
আরও পড়ুন-দেশে দারিদ্র্য হ্রাস নিয়ে সর্বশেষ তথ্য দিতেই পারল না কেন্দ্র!
এখানেই শেষ নয়, পূর্ব-মধ্য রেলের গাফিলতিতে আরও ৫০.৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির কথা বলা হয়েছে রিপোর্টে। অন্যদিকে, দক্ষিণ রেল এবং ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি বিশেষজ্ঞ মতামত ও পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত যাচাই ছাড়াই নীলগিরি মাউন্টেন রেলের জন্য ২৮টি মিটারগেজ কামরা তৈরি করেছে। এতে খরচ হয়েছে ২৭.৯১ কোটি টাকা, যার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ক্যাগ। দক্ষিণ-মধ্য রেল ২৩.১৬ কোটি টাকা খরচ করেছে এমন খাতে, যা যথাযথ পরিকল্পনা থাকলে এড়ানো যেত। মধ্য রেলওয়ে, ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের কাজে ১৫.৬২ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করেছে, যা নির্দেশ না মেনে ব্যয় করা হয়েছে বলে মন্তব্য ক্যাগ-এর। অর্থাৎ পদেপদে বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে নিয়ম-কানুনকে। সেইসঙ্গে প্রকটা হয়ে উঠেছে প্রশাসনিক ব্যর্থতাও।