সংবাদদাতা, কাটোয়া : চৈত্র মাসের কৃষ্ণা একাদশী তিথিতে পড়শি বাংলাদেশ থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বৈষ্ণব ভক্তরা পায়ে পায়ে এসে মেলেন কাটোয়ায় ভাগীরথী তীরে অগ্রদ্বীপে। চৈতন্যদেবের অন্যতম পার্ষদ পদকর্তা গোবিন্দ ঘোষ ঠাকুরের তিরোভাব তিথি উপলক্ষে বসে ৪৫০ বছরের প্রাচীন গোপীনাথের বা ঘোষ ঠাকুরের মেলা।
আরও পড়ুন-কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতি সরব হলেন ছাত্র-যুবরা
এই তিথিতে এখানকার মন্দিরের গোপীনাথ ওরফে কৃষ্ণ তাঁর পরম ভক্ত গোবিন্দ ঘোষ ঠাকুরের শ্রাদ্ধ পালন ও পিণ্ডদান করেন। কৃষ্ণের হাত থেকে বাঁশি নিয়ে রাজবেশ খুলে পরানো হয় গুরুদশার বেশ, কাছা। লোকসমাগমের নিরিখে রাজ্যে গঙ্গাসাগরের পরেই এটি দ্বিতীয় বৃহৎ মেলা। ৫ লাখ লোকের মেলায় বসে কীর্তন ও বাউলের শতাধিক আখড়া। এবারের মেলায় পুজো দিতে এসে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, ‘‘প্রত্যেক বছরই আসি। রাতভর কীর্তন-বাউল শুনি।’’
আরও পড়ুন-ফিরল বুলবুলি, ইরফান, ছন্দে বগটুই
কাটোয়ার প্রাচীন ইতিহাস গবেষক রণদেব মুখোপাধ্যায়ের কথায়, গোবিন্দ ঘোষ তাঁর একমাত্র সন্তান গোপীনাথকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েন। মাথায় ঘোরে তাঁর মৃত্যু হলে কে মুখাগ্নি বা শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করবে? দুশ্চিন্তার মধ্যেই শ্রীকৃষ্ণর স্বপ্নাদেশ পান, তাঁর শ্রাদ্ধ করবেন কৃষ্ণ নিজেই। আশ্বস্ত হয়ে কৃষ্ণমূর্তি গড়ে নিত্যপুজো শুরু করেন। তাঁর প্রয়াণের পর আনুমানিক ১৫৮১ সাল থেকে ভক্তরা কৃষ্ণবিগ্রহকে কাছা পরিয়ে শ্রাদ্ধকর্ম করান। করোনা পরিস্থিতিতে ২ বছর মেলা হয়নি। এবার তাই উপচে পড়া ভিড়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে হাজারের কাছাকাছি পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। পারাপারের জন্য রয়েছে নৌকা, ভেসেল।