নয়াদিল্লি : দীর্ঘ ৩১ বছর পর জেল থেকে মুক্তি৷ দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী হত্যা মামলার (Rajib Gandhi Murder Case) অন্যতম দোষী এজি পেরারিভালানের (AG Perarivalan Released)। বুধবার নজিরবিহীন রায় দিল শীর্ষ আদালত৷ সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে পেরারিভালানকে মুক্তির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীকে যখন খুন করা হয়েছিল সেসময় পেরারির বয়স ছিল ১৯ বছর। রাজীব গান্ধীকে খুনের অন্যতম চক্রী ছিল শ্রীনিবাসন। জঙ্গি সংগঠন লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ইলামের সদস্য ছিল সে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীবকে খুন করতে যে বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল তাতে ছিল ৯ ভোল্টের দুটি ব্যাটারি। ওই দুটি ব্যাটারি কিনে শ্রীনিবাসনকে দিয়েছিল পেরারিভালান। প্রাথমিক তদন্তের পরই পুলিশ গ্রেফতার করে পেরারিভালানকে। রাজীব হত্যা মামলায় ১৯৯৮ সালে সন্ত্রাস দমন আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। পেরারিভালান ওই শাস্তির বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন করে। তবে ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্টও মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখে। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে পেরারিভালানের জামিন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত। এরপরে মুক্তির জন্য আবেদন জানায় পেরারি। প্রথমে এই আবেদনের বিরোধিতা করেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। পেরারিভালানের মুক্তির বিষয়টি তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল অবশ্য রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের উপরে ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েক মাস সময় কেটে গেলেও এবিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি কোবিন্দ। রাষ্ট্রপতির এই নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সর্বোচ্চ আদালত। এই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানায়, তামিলনাড়ু সরকার চায় রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্তদের ১৬১ ধারায় ক্ষমা করে দিতে। রাজ্যপাল রাজ্যের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য। তাই রাষ্ট্রপতির মতামতের জন্য অপেক্ষা করা নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়। এর পরেই এদিন পেরারিভালানকে (AG Perarivalan Released) মুক্তির নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। শীর্ষ আদালতের এই রায় রাজীব হত্যা মামলায় আরও ছয় অপরাধীর মুক্তির পথ খুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ১ জুন থেকে চলবে ভারত-বাংলাদেশ ট্রেন