প্রতিবেদন : তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর সবথেকে বেশি আক্রমণ-অত্যাচার করেছে বিজেপি। ওরা জিতলে এবার আদিবাসী জনজাতি গোষ্ঠী-সহ তফসিলি জাতি-উপজাতিদের সব অধিকার চলে যাবে। বিজেপি সংবিধান পাল্টে দিতে চাইছে। সংবিধান পাল্টে সংরক্ষণ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে চায় বিজেপি। মঙ্গলবার দলীয় প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর সমর্থনে পুরুলিয়ায় বাঘমুন্ডির জনসভা থেকে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিজেপি নিজের সংকল্পপত্রে বলেছে, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আসবে (ইউনিফর্ম সিভিল কোড)। এই আইন কার্যকর হলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আদিবাসী-কুর্মি-তফসিলি জাতি-উপজাতিভুক্ত সম্প্রদায়ের মায়েরা- দিদিরা-ভাইয়েরা। অভিষেকের সংযোজন, আমরা আমাদের সংস্কৃতি, আচার-আচরণ পালন করি, আমরা যেভাবে আমাদের ধর্মকে পালন করতে চাই আমরা সেই সংস্কৃতি ধর্ম মেনে পালন করতে পারব না। এই কালা আইনের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (Abhishek Banerjee) উপস্থিত জনতাকে বলেন, ভারতবর্ষের সকলের জন্য একই ধরনের আচার-আচরণ-ব্যবহার, পুজো করার নিয়ম, সব একইভাবে তৈরি করবে মোদি সরকার। আমাদের নিজস্ব কোনও অধিকার থাকবে না। আদিবাসীদের বন-জমি-জঙ্গলের অধিকার সব চলে যাবে এই আইনের বলে। ২০১৯-এ প্রধানমন্ত্রী কুর্মিদের তফসিলি উপজাতিভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও রাখেননি।
বাঘমুন্ডির পর এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে জুন মালিয়ার সমর্থনে জনসভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই সভা থেকে বিজেপির বিদায়ী সাংসদ দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। বলেন, দিলীপ ঘোষকে কেন এখানে প্রার্থী করল না বিজেপি? কারণ যে ভাষায় তিনি কথা বলেছেন ও গত পাঁচ বছরে বিন্দুমাত্র কাজ করেননি তাই হারবে জেনেই বিজেপি তাঁকে দুর্গাপুর- বর্ধমানে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন- পিয়ালির জেল হেফাজত, চক্রীদের শাস্তি চাই : নেত্রী
পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধেও একগুচ্ছ অভিযোগ এনে তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন অভিষেক। তাঁর কথায়, করোনার সময় পলাতক ছিলেন সাংসদ। তিনি ১২ মাসের মধ্যে থাকে দশ মাস থাকেন রাঁচিতে। এখন তিনি এসে ভোট ভিক্ষে করছেন মানুষের কাছে। উনি ভোট চাইতে এলে দুটি কথা জিজ্ঞেস করবেন, বিজেপি যেভাবে গরিব মানুষের ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করেছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা বন্ধ করেছে, এ বিষয়ে তাঁর অবস্থান কী? এবং ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে তাঁর অবস্থান কী? যদি বলেন তিনি এই কালাকানুন সমর্থন করেন না তবে বলবেন সাংবাদিকদের সে কথা পরিষ্কার করে জানাতে। পুরুলিয়ার সভা থেকেই অভিষেক বলেন, শান্তিরাম মাহাতো জেতার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে প্রতিটি বিধানসভায় একটি করে সাংসদ কার্যালয় তৈরি করা হবে। সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন সেখানে সমস্ত পরিষেবা পাবেন সাধারণ মানুষ। সার্টিফিকেট সই করাতে আর ঝাড়খণ্ডে যেতে হবে না।
এদিন দাঁতনের সভা থেকে অভিষেক বলেন শুভেন্দু অধিকারী সাগরেদের নাম অগ্নিমিত্রা পাল। শুভেন্দু অধিকারী সন্দেশখালি কান্ডের ষড়যন্ত্রী। আর তার সাগরেদ কয়েক মাস আগে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন সন্দেশখালি নন্দীগ্রামে পরিণত করতে যা করার দরকার করতে হবে। এইতো বিজেপির চরিত্র। এদের একটি ফটো দেবেন না। অভিষেকের দুটি জনসভাই ছিল জনসমুদ্র।