মণীশ কীর্তনিয়া: ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসকে সামনে রেখে এই প্রথম ছাত্রদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবির করতে চলেছে টিএমসিপি নেতৃত্ব। ৩ অগাস্ট মালদায় হবে প্রথম প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানে উত্তরবঙ্গের সমস্ত কলেজ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে ৩টি প্রশিক্ষণ শিবির হবে। মালদা ছাড়াও আরও দুটি শিবির হবে পশ্চিম মেদিনীপুর ও বর্ধমানে। জানা যাচ্ছে, যে জেলায় প্রশিক্ষণ শিবির হবে সেই জেলা তো বটেই, আশপাশের জেলাগুলি থেকেও ছাত্র-ছাত্রীরা আসবেন এই প্রশিক্ষণ শিবিরে। আর সবক’টি শিবিরে বক্তব্য রাখবেন টিএমসিপির শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়াও দলের বিভিন্ন সিনিয়র নেতৃত্ব। যেমন মালদায় বক্তব্য রাখবেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের মেয়র গৌতম দেব। পশ্চিম মেদিনীপুর ও বর্ধমানে থাকার কথা সাংসদ পার্থ ভৌমিক, আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাংশু ভট্টাচার্য-সহ আরও কয়েকজনের।
আরও পড়ুন-উদাসীন কেন্দ্র বিপন্ন কপিল মুনির আশ্রম
চলতি মাসের ২৩ তারিখে তৃণমূল ভবনে ২৮ অগাস্টের প্রস্তুতি বৈঠক করেন টিএমসিপি নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য-সহ বাকিরাও। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলে থাকেন দলে যাঁরা নতুন আসছেন অথবা ছাত্র-যুবরা যাঁরা নতুন রাজনীতিতে পা রাখছেন তাঁরা যেন দলের ইতিহাস সম্পর্কে অবগত থাকেন। এই ভাবনা মাথায় রেখেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দশকের পর দশক ধরে একের পর এক লড়াই আন্দোলনের ইতিহাস এই প্রশিক্ষণ শিবিরে ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে তুলে ধরা হবে। আবার একই সঙ্গে ছাত্র রাজনীতিকে মাথায় রেখে আগামীতে কোন পথে পা বাড়াতে হবে তারও একটা ধারণা তৈরি করে দেওয়া হবে এই শিবিরে। এই ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন এর আগে কখনও হয়নি। কারণ ছাত্র-যুবদের মধ্যে থেকেই উঠে আসবে আগামী দিনের নেতা বা নেত্রীরা। একই সঙ্গে ঠিক হয়েছে প্রতিষ্ঠাদিবসের প্রস্তুতি হিসেবে এখন থেকেই জেলায় জেলায় কলেজগুলিতে ইউনিট মিটিং, গেট মিটিং-সহ একাধিক সভা করা হবে। তবে গতবছর যেমন প্রতিষ্ঠাদিবসে একটি থিম তৈরি করেছিলেন ছাত্র নেতৃত্ব, এবারেও থিম থাকবে। তবে তা কী হবে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
২৮ অগাস্টকে কেন্দ্র করে আবেগ রয়েছে তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের মধ্যে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বর্তমানে দলের অধিকাংশ নেতা-নেত্রী ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। তাঁদের অনেকেই রাজ্যের মন্ত্রী অথবা সংগঠনে শীর্ষপদে রয়েছেন। এই ২৮ অগাস্ট থেকেই উঠে এসেছেন জয়া দত্ত, দেবাংশু ভট্টাচার্যের মতো ছাত্র-যুব নেতৃত্ব। পরবর্তী সময়ে টিএমসিপি পেয়েছে তৃণাঙ্কুর, প্রান্তিক, রাজন্যা, কোহিনুরদের মতো ছাত্র-যুবদের। প্রতি বছর মেয়ো রোডে প্রতিষ্ঠাদিবসের সভায় উপস্থিত থাকেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব এবং অবশ্যই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। ২১ জুলাইয়ের মতো ছাত্রদের এই মঞ্চ থেকে তিনি বার্তা দেন আগামী দিনে কোন পথে চলবে তারা। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখে কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে সেই দিশা দিয়ে থাকেন তিনি। তাই একুশে জুলাইয়ের পর এবার জোরকদমে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।