আলিপুর চিড়িয়াখানা (alipore zoo) থেকে প্রাণী গায়েব হয়েছে—এই অভিযোগে গত কয়েক মাস ধরে চলেছে প্রবল বিতর্ক। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে রাজ্যের বন দফতরের তদন্তে স্পষ্ট হলো, চিড়িয়াখানা থেকে একটিও প্রাণী নিখোঁজ হয়নি। আসল সমস্যা তৈরি হয়েছিল কেন্দ্রীয় রিপোর্টে তথ্যের গরমিলের কারণে।
বন দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হিসাব সঠিকই ছিল। কিন্তু কেন্দ্রের প্রকাশিত রিপোর্টে সংখ্যার অমিল ধরা পড়ে। রাজ্যের তরফে সংশোধনের আবেদন জানানো হলেও কোনও সাড়া মেলেনি। এই বিভ্রান্তিই প্রাণী গায়েব হওয়ার জল্পনা তৈরি করেছিল।
আরও পড়ুন- তাপপ্রবাহকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রাজ্যের, ক্ষতিপূরণ পাবেন মৃতদের পরিবার
ঘটনার সূত্রপাত হয় কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া এক জনস্বার্থ মামলার পর। অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে চিড়িয়াখানায় ৬৭২টি প্রাণী ছিল, যা ২০২৪-২৫ সালে নেমে এসেছে ৩৫১-এ। অর্থাৎ, ৩২১টি প্রাণী গায়েব। আরও অভিযোগ করা হয়, গত তিন দশক ধরে এই ধারা চলেছে এবং অন্তত গত দশ বছরের হিসাব আদালতের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা দরকার। অভিযোগ ওঠার পরেই চিড়িয়াখানার ডিরেক্টরকে সরিয়ে আভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে রাজ্য। সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তবে তিনি এ নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি।
তদন্ত কমিটির এক আধিকারিকের দাবি, চিড়িয়াখানা (alipore zoo) থেকে প্রাণী সরানোর প্রশ্নই ওঠে না। দেশের এক চিড়িয়াখানা থেকে অন্য চিড়িয়াখানায় প্রাণী আনতে বা পাঠাতে হলে কেন্দ্রীয় জু অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার অনুমতি বাধ্যতামূলক। ফলে সরকারি অনুমোদন ছাড়া প্রাণী অন্যত্র যাওয়া অসম্ভব।
তবে তদন্ত শুধু তথ্যগত গরমিল চিহ্নিত করেই থেমে থাকেনি। আলিপুর চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কাজে বেশ কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে। ভবিষ্যতে বিভ্রান্তি এড়াতে নজরদারি ও তথ্য সংরক্ষণ আরও শক্ত করার সুপারিশও করেছে কমিটি। বন দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, এই রিপোর্টে স্বস্তি এসেছে। তবে সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত মন্তব্য করতে নারাজ রাজ্য।