নীল আকাশে পেঁজা তুলো মেঘ, দিকে দিকে কাশের সমারোহ আর শিউলি-সুরভিত দখিনা বাতাস; সবমিলিয়ে প্রকৃতিতে উৎসবের গন্ধ। ঢাকের কাঠিতে বেজে উঠেছে সুর, মা আসছেন। মা নাকি মেয়ে? এক বছর পর কৈলাস থেকে বাপের বাড়ি ফিরছেন দেবী পার্বতী। বাঙালির কাছে পার্বতী দেবী নন, তাদের ঘরের মেয়ে উমা। তাঁর মর্ত্যে আগমনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার ঘরে ঘরে উমাদের ফিরে আসার ছবি। এই উমা বধূ নন, যেন বাবা-মায়ের সেই আদুরে কুমারী কন্যা, যাকে ঘিরে সংসারে বেজে ওঠে উৎসবের সুর। শারদোৎসব মাতৃ আরাধনা ঠিকই, তবে এর সঙ্গে বেশি বেশি করে জড়িয়ে আছে কন্যা-কথা। মাতৃ আরাধনার আসলে কন্যা-বন্দনার কাহিনি ব্যক্ত করে।
আরও পড়ুন-কাঁচা সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান মহকুমাশাসকের
কন্যা-বন্দনার কথা বললে খুব স্বাভাবিকভাবে এসে যায় কুমারী পুজোর কথা। দুর্গাপুজোর অন্যতম অঙ্গ কুমারী পুজো। নবরাত্রিতে এই পুজো হয়। অনেকে বলে থাকেন কুমারী পুজো ছাড়া মায়ের আরাধনা সম্পূর্ণ হয় না। পুরাণ মতে, কোলাসুরের অত্যাচারে বিপর্যস্ত দেবতারা পরিত্রাণের কোনও পথ না পেয়ে শেষমেশ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। তিনি কন্যারূপে জন্মগ্রহণ করে কোলাসুরকে হত্যা করেছিলেন। সেই থেকে কুমারী পুজোর প্রচলন হয়। কুমারী পুজোয় এক থেকে ষোলো বছর বয়সি যে কোনও কুমারীকে পুজো করা যায়। এক থেকে ষোলো, বয়স অনুসারে এদের ভিন্ন ভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়; যথাক্রমে সন্ধ্যা, সরস্বতী, ত্রিধামূর্তি, কালিকা, সুভগা, উমা, মালিনী, কুব্জিকা, কালসন্দর্ভা, অপরাজিতা, রুদ্রাণী, ভৈরবী, মহালক্ষ্মী, পাঠনায়িকা, ক্ষেত্রজ্ঞা এবং অন্নদা বা অম্বিকা। হিন্দুশাস্ত্র মতে এই সব নাম জগৎমাতার স্বরূপের এক একটি গুণ প্রকাশ করে। অর্থাৎ কুমারী পুজোর মাধ্যমে আসলে জগৎমাতাকে আরাধনা করা হয়। উল্টে বলা যায় কুমারী কন্যাই হল জগৎমাতার স্বরূপ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যে কোনও কুমারীকে পুজো করা যায়। মেরুতন্ত্রে কুমারী পুজো সম্পর্কে বলা হয়েছে সর্বকামনা সিদ্ধিতে ব্রাহ্মণ কন্যা, যশ লাভ করতে হলে ক্ষত্রিয় কন্যা, ধনসম্পদের জন্য বৈশ্য কন্যা আর পুত্র লাভের জন্য শূদ্র কন্যার পুজো করা উচিত। মাতৃ আরাধনা যেহেতু সকলের মঙ্গলের কামনায় করা হয়, তার জন্য কুমারী পুজোয় সাধারণত ব্রাহ্মণ কন্যাকেই বেছে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-পুজোর আগেই ভাঙা রাস্তা সারিয়ে দিচ্ছে জেলা পরিষদ, ছয় বছরেও ফ্লাইওভারের কাজ শেষ করছে না রেল
নারী কেবল ভোগ্যা নয়, সে পূজ্য— এই উদ্দেশ্যই ব্যক্ত হয় কুমারী পূজার মধ্য দিয়ে। এর দার্শনিক ব্যাখ্যা হল নারীতে পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন। শিবপুরাণ মতে পরমার্থ শব্দের অর্থ হল মহান সত্য। আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মহৎ সত্যের উপলব্ধি করা। তার জন্য প্রয়োজন নারী শক্তির আরাধনা। নারীই প্রকৃতি, নারীই স্রষ্টা। তার মধ্যে অনন্ত শক্তি নিহিত রয়েছে। সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয় যার দ্বারা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পরিচালিত হয়, সেই ত্রিবিধ শক্তি নিহিত রয়েছে কুমারী নারীর মধ্যে। অর্থাৎ নারীই এই সৃষ্টির ধারক, বাহক ও নিয়ন্তা। এই মহাবিশ্বের সবকিছু তাঁর দ্বারা পরিচালিত।
এই কথারই প্রতিধ্বনি শোনা যায় দেবীসূক্ততে। সাধারণভাবে চণ্ডীপাঠের আগে পাঠ করা হয় দেবীসূক্ত যার রচয়িতা ঋষি অম্ভৃণের কন্যা মন্ত্রদ্রষ্টা নারী ঋষি অম্ভৃণি ওরফে বাক্। অনেকের ধারণা এই সূক্ত থেকে শক্তির আরাধনা। বাক্ উপলব্ধি করেছিলেন তিনি নিজের মধ্যে দেবতা, চরাচর বিশ্বকে ধারণ করে আছেন। দেবীসূক্তর প্রথম শ্লোকে বলা হয়েছে—
অহং রুদ্রেভির্ব্বসুভিশ্চরাম্যহমাদিত্যৈরুত বিশ্বদেবৈঃ
অহং মিত্রাবরুণোভা বিভর্ম্যহমিন্দ্রাগ্নী অহমশ্বিনোভা।
‘অর্থাৎ, আমিই রুদ্র, বসু, আদিত্য এবং বিশ্বদেবতারূপে বিচরণ করি। মিত্র ও বরুণের আমিই ধাত্রী। ইন্দ্র, অগ্নি এবং অশ্বিনীকুমার দু’জনকে আমিই ধারণ করে থাকি।’ আট শ্লোকের এই সূক্তের নির্যাস হল, নারীই এই মহাবিশ্বের আধার। তার ইচ্ছেতেই সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। মুনি, ঋষি, শাস্ত্রকারদের মতে কুমারী নারীর মধ্যে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অসীম শক্তি বীজ অবস্থায় নিহিত থাকে। তাই দেবী দুর্গার আরাধনায় কুমারী পুজো একটি বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
আরও পড়ুন-বন্যা ত্রাণে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ দিলেন গুপ্তিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা
শুধু কুমারী পুজো বলি কেন?
শরৎকালে এই যে দেবী দুর্গার আরাধনা বা মাতৃবন্দনা এ কি আসলে কুমারী বন্দনা? দুর্গা পুজোর প্রকৃত সময় বসন্তকাল। শরৎকালে দুর্গা পুজো নিয়ে যে কাহিনি প্রচলিত আছে তা হল রামের অকালবোধন। দক্ষিণায়ন দেবদেবীদের ঘুমের সময়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধারের জন্য রাম দক্ষিণায়নের সময় দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন। অর্থাৎ দেবীর অকালবোধন করেছিলেন। সেই থেকে শরৎকালে দুর্গা পুজোর প্রচলন হয়। তবে বাল্মীকির রামায়ণে রামের দুর্গার অকালবোধনের কাহিনি নেই। কৃত্তিবাস ওঝা পদ্যে রামায়ণ অনুবাদ করার সময় রামের অকালবোধনের কাহিনি সংযোজন করেছিলেন। বৃহদ্ধর্ম পুরাণ ও কলিকা পুরাণের সামান্য রদবদল করে তিনি এই কাজটি করেছিলেন। এই দুই পুরাণ মতে রাবণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেবী দুর্গা যাতে রামের সহায় হন তার জন্য ব্রহ্মা দেবী দুর্গার স্তব করেন। দেবী কুমারী কন্যার বেশে তাঁর সামনে হাজির হয়ে বেল গাছের নিচে তাঁর বোধন করার কথা বলেন। দেবীর কথামতো ব্রহ্মা-সহ অন্য দেবতারা মর্ত্যে আসেন এবং একটি বেলগাছের শাখার সবুজ পাতার মধ্যে এক কুমারী কন্যাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেন। ব্রহ্মা বুঝতে পারেন ইনিই দেবী দুর্গা। তিনি স্তব করে সেই কন্যার ঘুম ভাঙান। অর্থাৎ দেবীর অকালবোধন করেন। এই হল অকালবোধনের প্রকৃত সত্য। দুর্গা পুজোর যে বোধন মন্ত্র তাতেও এই সত্য প্রতিভাত হয়েছে।
‘‘ওঁ ঐং রাবণস্য বধার্থায় রামস্যানুগ্রহায় চ।
অকালে ব্রহ্মণা বোধো দেব্যস্তয়ি কৃতঃ পুরা।।
অহমপ্যাশ্বিন ষষ্ঠ্যাং সায়াহ্নে বোধয়ামি বৈ।’’
অর্থাৎ, ‘হে দেবী, রাবণবধে রামকে অনুগ্রহ করার জন্য ব্রহ্মা তোমার অকালবোধন করেছিলেন, আমিও সেইভাবে আশ্বিন মাসের ষষ্ঠী তিথিতে সন্ধ্যায় তোমার বোধন করছি।’ এখান থেকে পরিষ্কার শরৎকালে ব্রহ্মা দেবীর যে অকালবোধন করেছিলেন তা ছিল দুর্গার কুমারী রূপের আরাধনা। সুতরাং, মাতৃ আরাধনার মধ্যে আসলে নিহিত রয়েছে কুমারীবন্দনা অর্থাৎ মহাবিশ্বের সেই অসীম শক্তির আরাধনা।
রাম-রাবণের যুদ্ধ, মহিষাসুর বধ কিংবা কোলাসুরের কাহিনি আসলে শুভ-অশুভের সংঘাত, ন্যায়-অন্যায়ের লড়াই। সৃষ্টির আদিকাল থেকে চলে আসছে এই সংঘাত যা এখনও বিরাজমান। সুর-অসুর আমাদের মধ্যেই রয়েছে। পুরাণের ব্যাখ্যাকে যদি আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করি তাহলে একথা বলতে হয় সমাজের মধ্যে ঘটে চলা অশুভ, আশুরিক শক্তিকে দমন করার জন্য নারীশক্তির জাগরণ দরকার। সেটা সম্ভব হবে তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা প্রদানের মাধ্যমে। পুরাকালে মুনি, ঋষি, শাস্ত্রকাররা কুমারী নারীকে প্রকৃতি জ্ঞানে পুজো করতেন। মহাভারতের অর্জুনও যুদ্ধে সাফল্যলাভের জন্য কুমারী পুজো করেছিলেন। যুগে যুগে মহাপুরুষেরা নারীকে যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান প্রদর্শনের কথা বলে গেছেন। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, বিবেকানন্দ, রামমোহন, বিদ্যাসাগর, জ্যোতিবারাও ফুলে, নেতাজি প্রমুখ নারীশক্তির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন এবং নিজের নিজের মতাদর্শে তাঁরা তাঁদের আরাধনা করেছেন।
আরও পড়ুন-আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার দিন ঘোষণা! রেকর্ড সংখ্যায় ভিড়ের সম্ভাবনা
প্রাচীন বৈদিক যুগে সমাজে নারীদের সম্মানের স্থান ছিল। তারপর একটু একটু করে তাদের মর্যাদা হ্রাস পেতে থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় অবহেলা, লাঞ্ছনা, বঞ্চনার শিকার হন তাঁরা। দুই-তিন শতক পিছিয়ে গেলে সমাজে নারীদের যে ছবি আমরা দেখতে পাই তা অবর্ণনীয়। তাদের দুর্বল, বুদ্ধিহীন ভেবে অবহেলা করা হয়েছে। নানান অন্ধ আচার আর কুসংস্কারের বেড়াজালে আটকে তাদের চরম অবমাননাকর জীবন কাটাতে বাধ্য করা হয়েছে। (এরপর ১৯ পাতায়)
কিন্তু তথ্য ঘাঁটলে দেখতে পাব নারীরা মোটেও দুর্বল কিংবা বুদ্ধিহীন নয়। বরং অনেকক্ষেত্রে তাঁরা পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের দেশের ইতিহাসে চোখ রাখলে সুগন্ধাদেবী, দিদ্দা, কর্ণাবতী, দুর্গাবতী, চেন্নাম্মা, তারাবাই, আব্বাক্কা, লক্ষ্মীবাই, উদাদেবী, কিত্তুর চেন্নাম্মা প্রমুখ নারীর কথা যাঁরা কেবল রাজ্য শাসন করেননি, শাসক হিসেবে যথেষ্ট দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। এক নারীর হত্যা কীভাবে একটি সমাজে কয়েক যুগের অজ্ঞানতার অন্ধকার ডেকে আনে তা জানতে পারি চতুর্থ শতকের বিখ্যাত গ্রিক বৈজ্ঞানিক, গণিতজ্ঞ, দার্শনিক হাইপেশিয়ার জীবন পড়লে। আমাদের দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে অসংখ্য নারীদের অবদান রয়েছে। তাদের কেউ কেউ ইতিহাসে স্থান পেয়েছেন, অনেকে হারিয়ে গেছেন বিস্মৃতির অন্তরালে, আবার অসংখ্য নারী আছেন যাঁদের কথা আমরা জানতেই পারিনি!
সময়ের অগ্রগতিতে নারীদের সেই অবর্ণনীয় অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আজকের সময়ে সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারীদের গর্বিত পদচারণা। পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করছেন তাঁরা। অতীতের যন্ত্রণাময়, অবমাননাকর জীবনের মুক্তি ঘটেছে তাঁদের। কিন্তু সত্যিই কি তাই? নারীরা কি আজ পুরোপুরি স্বাধীন? তাঁদের সমানাধিকার নিয়ে কি কোনও প্রশ্নচিহ্ন নেই? তাঁদের চাওয়া-পাওয়া, ইচ্ছে-অনিচ্ছে কি মর্যাদা পায়? নিজের মতো করে জীবন কাটানোর পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করেছেন তারা? বাস্তব এটাই আজও নারীরা সমাজে অবহিলেতি। শোষণ, বঞ্চনা, নির্য়াতন আজও তাঁদের নিত্যসঙ্গী। তাঁদের সমানাধিকারে আজও বিরাট প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। পদে পদে তাঁরা বৈষম্যের শিকার। অনেকক্ষেত্রে তাঁদের চাওয়া-পাওয়া, ইচ্ছে-অনিচ্ছের মূল্য দেয় না আজকের সমাজ। সমানাধিকরারের প্রশ্নে আজও তাঁরা পুরুষদের থেকে অনেক পিছিয়ে। তাঁদের দমিয়ে রাখার প্রবণতা আজও প্রবলভাবে বিদ্যমান। মনু সংহিতায় বলা হয়েছে…
যত্র নার্য্যস্ত পূজ্যন্তে তত্র দেবতাঃ
যত্রেতাস্তু এ পূজ্যন্তে সর্বাস্তুত্রাফলাঃ ক্রিয়াঃ।।
আরও পড়ুন-হরিয়ানায় শেষ দিনের প্রচারে মরিয়া সব পক্ষ
অর্থাৎ, যেখানে নারী পূজিতা হন সেখানে দেবতা বিরাজ করেন। যেখানে নারীরা সম্মান পান না সেখানে সব কাজ নিষ্ফল।
তাই নারীর যথার্থ মর্যাদায় আমাদের নজর দেওয়া দরকার। সেই মহান উদ্দেশ্য সাধনে শিশুকন্যা দিবসের সূচনা হয়েছে। ভারতবর্ষে ২৪ জানুয়ারি দিনটি জাতীয় শিশুকন্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়। আর সারা বিশ্বে ১১ অক্টোবর দিনটি আন্তর্জাতিক শিশুকন্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়। এর উদ্দেশ্য হল, মেয়েদের জীবনের রোজকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ছোট থেকেই তাঁদের সচেতন করা। তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, তাঁদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা। তাঁদের পুষ্টির ওপর জোর দেওয়া, আইনি সহায়তা প্রদান করা। পাশাপাশি নানান বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। সর্বোপরি তাঁদের ক্ষমতায়ন অর্থাৎ তাঁদের হাতে ক্ষমতা প্রদান করা। আজকের সময়ে সমাজের প্রায় সবক্ষেত্রেই নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন নারী। দেশের রাষ্ট্রপতি, অর্থমন্ত্রী একজন নারী। এরকম অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীরা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। সমাজের সর্বক্ষেত্রে তাঁদের যোগদান যত বেশি হবে ততই তাঁদের অন্ধকারময় জীবনের মুক্তি ঘটবে। শিশুকন্যা দিবস উদযাপন, প্রকারান্তরে কন্যাবোধন। বোধন কথার অর্থ জাগরণ। এই জাগরণ আমাদের চেতনার। নারীদের নিয়ে আমাদের মধ্যেকার ভ্রান্ত ধারণার অমানিশা থেকে জাগরণ। এই দিনটি পালনের মাধ্যমে শিশুকন্যাদের যেমন তাঁদের অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন করা হয়, পাশাপাশি সমাজকেও বার্তা দেওয়া হয় যাতে করে তাঁরা যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা অন্ধ, ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে চেতনার নতুন আলোয় আলোকিত হয়ে নারীকে বন্দনা করে।
পরিশেষে বলার, মাতৃ-আরাধনা, কন্যাবন্দনা কিংবা শিশুকন্যা দিবস পালন, এগুলির প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধিত হচ্ছে কি? আজও সমাজে নারীরা বৈষম্য, বঞ্চনা, লাঞ্ছনা, নির্যাতনের শিকার। তাই মাতৃ আরাধনা হোক কিংবা কন্যাদিবস পালন, নারীজাতির প্রতি আমাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। সেটাই হবে প্রকৃত কন্যাবন্দনা।