প্রতিবেদন : এ একেবারে কলতলার ঝগড়া! তাও আবার দুই বিজেপি নেতার মধ্যে। দ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে প্রকাশ্যে মিডিয়াতে যেভাবে দু’জনে দু’জনকে আঁচড়েছেন তাতে এটা প্রমাণিত যে বিজেপি দলটার ভিতরে আসলে কোন পর্যায়ের ঘুন ধরেছে। এখানেই শেষ নয়। তথাগত রায়ও বঙ্গ বিজেপির নেতাদের ধুইয়ে দিয়েছেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপির এখানকার নেতারা কতটা অপদার্থ।
আরও পড়ুন-মামলার তদন্তে প্রভাব বিস্তার বিচারপতি অমৃতা সিনহার, রিপোর্ট চাইল সুপ্রিম কোর্ট
মঙ্গলবার বর্ধমানের কালনায় বিজেপিরই বিজয়া সম্মিলনীতে গিয়ে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের মুখে কার্যত চুন–কালি লেপে দিয়েছেন অনুপম৷ তিনি বলেন, এখন বঙ্গ বিজেপির পদ পাওয়া মানে গোলাম হয়ে যাওয়া৷ সবাই চাকর হতে ভালবাসে না৷ ঘরশত্রু বিভীষণদের ঝাঁটা মেরে বের করতে হবে৷ এর পাল্টা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, কেউ কেউ বিজেপি দলটার সংস্কৃতি বুঝে উঠতে পারেনি। তাই কখনও অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে মাছ- ভাত খেতে হয়। কিছু বলার থাকলে দলে বললেই হত। আর যারা রক্ত-ঘাম দিয়ে দল করেছে এরা তাদের বুঝবে না। পাল্টা অনুপম বলেন, যিনি এসব বলছেন তিনি ১২ মাস ঠান্ডা ঘরে বসে থাকা টিয়াপাখি। অন্যের শেখানো বুলি বলেন।
আরও পড়ুন-বেণু এল ঘরে
বিজেপির পুরনো নেতা-কর্মী যাঁরা বসে গিয়েছেন তাঁদের পাশে থেকেছি আমি। উনি নন। বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে নিয়ে অনুপমের বক্তব্যের পাল্টা শমীকের প্রতিক্রিয়া, বিজেপি এসব কথা বরদাস্ত করে না। যা শুনে অনুপম বলেছেন, উনি বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা করেননি। শান্তিনিকেতনের মানুষ নন। তাই রবীন্দ্রনাথ ও বিশ্বভারতীকে কেন্দ্র করে এখানকার আবেগ বুঝবেন না। আর ওনার সংস্কৃতি বুঝতে হলে সেই অনন্যা চক্রবর্তীকে জিজ্ঞেস করতে হবে যিনি ওনার বিরুদ্ধে কী কী যেন অভিযোগ এনেছিলেন! যদিও অনুপমের এই কথার পাল্টা জবাব দেননি শমীক। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার দিনভর বাংলা দেখল এক্কেবারে কলতলার ঝগড়া কাকে বলে।
আরও পড়ুন-রাজ্যপালরা কি ভুলে গেলেন তাঁরা আদৌ নির্বাচিত নন? কড়া ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের
এখানেই শেষ নয়৷ অনুপমের বক্তব্য, কিছু জায়গায় কিছু পদাধিকারী আছেন যাঁরা সকাল ছ’টার পর বিজেপি করেন৷ দলের দুর্নীতিবাজ নেতাদের একরকম হুঁশিয়ারি দিয়ে অনুপম বলেন, আমাদের মধ্যে যাতে কোনও চোর না থাকে সেটাই লোকসভা নির্বাচনের আগে নিশ্চিত করতে হবে৷ তা না হলে ৩৫টি আসন পাওয়ার কথা স্বপ্নেই থেকে যাবে৷
আরও পড়ুন-ফের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে শীর্ষ আদালতের স্থগিতাদেশ
তথাগত রায় বিজেপিকে বিঁধে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র ৬ মাস বাকি৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাংলার বিজেপির নেতারা একটি এমন কোনও ইস্যু দাঁড় করাতে পারেননি যেটা নিয়ে তাঁরা ভোটের প্রচারে যেতে পারেন৷ অত্যন্ত দুঃখের৷ এখানেই শেষ নয়, তথাগত আরও লিখেছেন, তাঁরা শুধু ব্যস্ত পার্টির পদগুলি নিয়ে৷ আসলে তাঁরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত৷ অন্যদের নিয়ে ভাবার সময় কোথায়? এটা নতুন নয়৷ এর আগেও বহুবার তথাগত বঙ্গ বিজেপি নেতাদের মুণ্ডপাত করেছেন৷ মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে তৃণমূল কংগ্রেসের ধরনা মঞ্চে গিয়ে হাজির হন দলবদলু অনুপম হাজরা৷ বিশ্বভারতীর উপাচার্যের নানা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ সেখানে গিয়েও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে তুলোধোনা করেছেন৷ যদিও তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনাকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছে না।