কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা

আজকের মেয়েরা আসমুদ্রহিমাচল পায়ে-পায়ে পেরিয়ে যাচ্ছেন একাই। কয়েক যুগ আগেও যা ভাবাই যেত না। হিমালয়ের বরফঢাকা চূড়া থেকে শুরু করে কেরলের ব্যাক ওয়াটার— সর্বত্র তাঁদের অবাধ বিচরণ। মেয়েদের সোলো ট্রিপের রোমাঞ্চ নিয়ে লিখলেন কাকলি পাল বিশ্বাস

Must read

সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে মেয়েরা এখন দোকার চেয়ে একা-একা ঘুরতে যেতেই স্বচ্ছন্দ এবং একাকী ভ্রমণ করা মেয়েদের সংখ্যা পুরুষদের সমতুল এবং সংখ্যায় বেড়ে চলেছে। এ-যুগের নারীর একলা পায়ের তলায় সরষে। স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়িয়ে নিত্যনতুন জায়গা আবিষ্কার ও উপভোগ করা এবং নানারকম চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাওয়াটা এখন তাঁদের হবি। মেয়েদের সোলো ট্রিপ একটা সময় চাপের হলেও একাকী ভ্রমণ সামাজিক প্রত্যাশা ও বাঁধাধরা জীবন থেকে মুক্ত হয়ে মেয়েদেরকে স্বাধীনতা এবং নিজেকে জানার সুযোগ করে দেয়। তাঁদের মধ্যে তৈরি হয় আত্মবিশ্বাস। অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন এমন মহিলাদের জন্য দশটা সেরা একক ভ্রমণের গন্তব্যস্থানের কথা রইল এই পর্বে।

আরও পড়ুন-একা একা বিদেশে

স্পিতি ভ্যালি হিমাচলপ্রদেশ
স্পিতি ভ্যালি হিমালয় প্রদেশের এমন একটি জায়গা যেখানে গেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন ভরিয়ে দেবে। চোখ জুড়ানো এই ভ্যালি ছোট তিব্বত নামেই পরিচিত। আর এই জায়গাটি পাহাড়, নীল আকাশ এবং প্রাচীন মঠ দ্বারা বেষ্টিত একটি শীতল মরুভূমির উপত্যকা। এখানে গেলে যেমন ঝকঝকে তারা-ভরা রাতের আকাশ দেখা যায় ঠিক তেমনি চারপাশে পাহাড়, নির্মল নদীও মন ভরিয়ে দেবে। আর জায়গাটি অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর। ট্রেকিং থেকে শুরু করে রিভার রাফটিং, প্যারাগাইডিং-সহ আরও নানা ধরনের অ্যাডভেঞ্চার উপস্থিত এই ভ্যালিতে। এই স্পিতি ভ্যালিতে গেলে বাইরের জগৎ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ ভাবে একা করে প্রকৃতির মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া সম্ভব। একাকী ভ্রমণকারীরা স্পিতি উপত্যকায় কার্নিভাল-এর মতো স্থানীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করে ওই অঞ্চলের প্রাণবন্ত সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। এছাড়াও হোমস্টেতে থেকে স্থানীয় মানুষজনদের সঙ্গে মেলামেশার মাধ্যমে তাঁদের খাবারদাবার আর দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কে অনেক কিছু জানাতে পারা যায়।
যারা উঁচু বরফের মরুভূমি, অপরূপ চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য আর সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চার খুজঁছেন তাঁদের জন্য স্পিতি ভ্যালি আদর্শ জায়গা। প্রত্যন্ত গ্রাম, সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির মেলবন্ধনের জন্য স্পিতি ভ্যালি এক অসাধারণ জায়গা।
জয়পুর, রাজস্থান
১৭২৭ সালে অম্বরের রাজা দ্বিতীয় জয় সিং তৈরি করেছিলেন জয়পুর শহরটিকে। গোলাপি শহর নামে পরিচিত জয়পুর তার অপূর্ব সুন্দর ঐতিহাসিক প্রাসাদ এবং দুর্গের জন্য বিখ্যাত। শহরটি এমন সমস্ত মন্দিরে পরিপূর্ণ যা শতাব্দীর ভক্তি, শিল্প এবং ইতিহাসকে ধারণ করে। জয়পুরে বেড়াতে গেলে দেখতে হবে হাওয়া মহল। যেটা রাজপুত ও মুঘল স্থাপত্যের আদর্শ সংমিশ্রণ। মহলটি গোলাপি এবং লাল বেলে পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে। এছাড়াও দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে জলমহল, আমের দুর্গ, নাহারগড় দুর্গ। আর আছে জয়পুরের বাজার, যেখানে আছে অসাধারণ রাজস্থািন হস্তশিল্প, টেরাকোটার মৃৎশিল্প, কোটা ডোরিয়া শাড়ি, ইত্যাদি জিনিসপত্রের সম্ভার। এছাড়াও আছে এখানকার রূপা, কুন্দন এবং মিনাকারির গয়না বিখ্যাত। এখানকার লোকসঙ্গীত এবং নৃত্য পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এ ছাড়াও জয়পুরের স্থানীয় খাবার ডাল বাটি চুরমা, পিঁয়াজ কচোরি, ঘেওয়ার, গাত্তে কি সবজি এবং লাল মাস উল্লেখযোগ্য।
জয়পুর একাকী মহিলা ভ্রমণকারীদের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ একটি জায়গা, এখানে পিঙ্ক ক্যাব রয়েছে। এই ক্যাবগুলোর ড্রাইভার হন মহিলারা।
নিরাপদ, ইতিহাসে পরিপূর্ণ, দুর্গ বেষ্টিত এই গোলাপি শহর জয়পুরে মেয়েদের একাকী ভ্রমণের একটি স্বপ্নের গন্তব্য হতেই পারে।
কাসল, হিমাচল প্রদেশ
হিমালয়ের কোলে নিজেকে খুঁজে পেতে হলে চলে যেতে হবে হিমাচলের কাসলে। কুল্লু জেলার পার্বতী উপত্যকার পার্বতী নদীর তীরে অবস্থিত হিমাচলের এই জনপ্রিয় গ্রাম কাসোল। একাকী মহিলা ভ্রমণকারীদের জন্য এটি একটি স্বর্গরাজ্য। একধারে বয়ে চলেছে পার্বতী নদী এবং অন্যদিকে সবুজে মোড়া কাসোল। ভারতবর্ষের অফবিট ডেস্টিনেশনগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই কাসোল। ইজরায়েলের পর্যটকদের কাছে কাসোল প্রচণ্ড জনপ্রিয় একটা পর্যটন কেন্দ্র। এই পাহাড়ি গ্রামে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে ইজরায়েলের পর্যটক আসেন। আর এখানকার এলাকাবাসীদের মধ্যে ইজরায়েলের মানুষের সংখ্যা এতটাই বেশি যে একে ভারতের মিনি ইজরায়েল বলা হয়। পাইন বনে ঘেরা এই পাহাড়ি গ্রাম অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে স্বর্গ। পার্বতী পাস, সার পাস, ক্ষীর গঙ্গার মতো ট্রেকিং রুটগুলোর বেস ক্যাম্প হচ্ছে এই কাসোল। কাসোলের রেস্তোরাঁগুলোতে হিমাচলি খাবারের পাশাপাশি ইজরায়েলি খাবার পাওয়া যায়। এছাড়াও কাসোলের আশপাশে আরও কিছু গ্রাম রয়েছে। এই গ্রামগুলো যেমন সুন্দর তেমনি শান্ত এবং নিলিবিলি।

আরও পড়ুন-বিচারব্যবস্থার প্রতি তীব্র কটাক্ষ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

ভারকালা, কেরল
তিরুবনন্তপুরমের একদম শেষ সীমানায় অবস্থিত শান্ত স্নিগ্ধ ছোট্ট গ্রাম হল ভারকালা। মেয়েদের একাকী ভ্রমণের জন্য এটি একটি উপযুক্ত স্থান। একটি অত্যন্ত সুন্দর গ্রাম। এই গ্রামেই রয়েছে সুন্দর বেলাভূমি, কয়েক হাজার বছরের পুরনো বিষ্ণুমন্দির এবং শিবগিরি মঠ আশ্রম। ভারকালা থেকে ভারকালা বিচের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। এই বিচটি প্রাকৃতিক ঝরনার জন্য বিখ্যাত, এই ঝরনাটি ঔষধি এবং প্রতিষেধক গুণসম্পন্ন বলে গণ্য করা হয়। এই জলে স্নান করলে শরীর থেকে সমস্ত আলস্য ঝরে যায় বলে মনে করা হয়। একটু দূরেই বিচের ওপর ঝুঁকে থাকা পাহাড়ে ওপরে দু’হাজার বছরের প্রাচীন জনার্দন স্বামী মন্দির অবস্থিত। এছাড়াও এখানেও শিবগিরি মঠও রয়েছে। ভারকালায় অনেক আয়ুর্বেদিক ম্যাসাজ পার্লার আছে। আর সেই কারণে এই জায়গাটি ক্রমে একটি স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারমূলক পর্যটন কেন্দ্রের রূপ নিচ্ছে। তাই যাঁরা আরামদায়ক সমুদ্রসৈকত পছন্দ করেন তাঁদের জন্য ভারকালা হল দারুণ একটা একাকী ভ্রমণের জায়গা। ডাবের জলে চুমুক দিয়ে আয়ুর্বেদিক ম্যাসাজ করে অথবা বিখ্যাত ভারকালা বিচ থেকে সূর্যাস্ত উপভোগ করে ছুটির দিনগুলো ভালই কাটবে।
শিলং, মেঘালয়
শিলং হল পাহাড়, জলপ্রপাত হ্রদ দিয়ে ঘেরা একটি শৈলশহর। অসম্ভব সুন্দরী এই শিলংকে ‘স্কটল্যান্ড অফ দি ইস্ট’ নামেও ডাকা হয়। শিলংয়ের প্রেমে হাবুডুবু-খাওয়া ঔপনিবেশিক ইংরেজরা উত্তর-পূর্ব ভারতের শিলং মালভূমিকে প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড নামে চিহ্নিত করেছিল। শিলং-এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন-প্রাণ ছুঁয়ে যাবে। এখানে অবস্থিত উমিয়াম হ্রদ, যে হ্রদটি নৌকাবাইচ ও পিকনিকের জন্য জনপ্রিয়। এছাড়াও এলিফ্যান্টা ফলস, সুইট ফলস ইত্যাদি জলপ্রপাতগুলো প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। শিলংয়ে রয়েছে পাহাড়, সবুজ উপত্যকা এবং ঝলমলে জলপ্রপাত। যেগুলো পর্যটকদের মুগ্ধ করে। মেঘালয়ের রাজধানী শিলং ঘন পাইনবন দিয়ে ঘেরা। আর এতেই যেন শিলং-এর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি হয়েছে। শিলংয়ে রয়েছে উপনিবেশিক স্থাপত্য মনোমুগ্ধকর পুরনো ভবন এবং গির্জা, যেগুলোর সৌন্দর্য অপরিসীম। আর তাই শিলং-এর শীতল আবহাওয়া, প্রাণবন্ত সঙ্গীত ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন, স্থানীয় অধিবাসীদের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার সবকিছু একাকী ভ্রমণের জন্য একটি অসাধারণ গন্তব্য করে তুলেছে।
হাম্পি, কর্নাটক
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হল হাম্পি। এই হাম্পি তার প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ, অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং প্রাণবন্ত ইতিহাসের জন্য পরিচিত। সাধারণত মহিলা একক ভ্রমণকারীদের জন্য হাম্পি খুবই নিরাপদ একটি স্থান বলে মনে করা হয়। হাম্পির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, হনুমান মন্দির, বিজয় ভিট্টালা মন্দির, বিরূপাক্ষ মন্দির, হাম্পি বাজার, রানির স্নানাগার, হেমাকুটা পাহাড়ি মন্দির ইত্যাদি। ইতিহাস, পাহাড়ের ঢালুপথ এবং মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য এইসবের মধ্যে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে অবশ্যই কর্নাটকের এই গ্রামে যাওয়া দরকার।
উদয়পুর, রাজস্থান
বিশ্ব জুড়ে উদয়পুরকে হ্রদের শহর বলা হয়ে থাকে আবার একে প্রাচ্যের ভেনিস বলা হয়ে থাকে। ভারতবর্ষের সবথেকে সুন্দর শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে উদয়পুর। মেয়েদের একাকী ভ্রমণ করার জন্য উদয়পুর অত্যন্ত নিরাপদ একটি জায়গা। উদয়পুরে গেলে দেখা যাবে জগদীশ মন্দির। ইন্দো-আর্য স্থাপত্য শিল্পের অসাধারণ নিদর্শন হল এই মন্দিরটি। এ ছাড়াও উদয়পুরের সর্ববৃহৎ বাগান গুলাববাগ যেটি ১০০ একর জমির ওপর গঠিত। এই বাগানটিতে বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ গাছ রয়েছে। এছাড়াও লেক পিছোলা, সহেলিওকি বাড়ি, ফতেহ সাগর লেক, ভারতীয় লোককলা মণ্ডল এবং উদয়পুরের অন্যতম বিশেষ আকর্ষণ উদয়পুর সিটি প্যালেস যেটি মহারানা দ্বিতীয় উদয় সিং নির্মাণ শুরু করছিলেন। এই প্যালেসটিতে রাজস্থানি এবং মুঘল স্থাপত্যের যুগলবন্দি রয়েছে। একাকী ঘুরে বেড়ানোর জন্য উদয়পুর অত্যন্ত উপযুক্ত একটি জায়গা।

আরও পড়ুন-বিবস্ত্র করে গরুর গাড়িতে বেঁধে ঘোরানো হল ধর্ষণে অভিযুক্তকে

মুন্নার, কেরল
মুথিরাপুরা, নল্লাথান্নি এবং কুন্ডালা এই তিনটি পার্বত্য নদীর সঙ্গমস্থলে সমুদ্র থেকে ১৬০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত শৈলশহর মুন্নার। একসময় ইংরেজ সরকারের গ্রীষ্মকালীন রিসর্ট ছিল এই শৈলশহরটি। এইখানেই দেখতে পাওয়া যায় তৃণভূমিতে জন্মানো গাছ নীলাকুরিঞ্জি। এর ফুল প্রতি ১২ বছরে একবার পার্বত্য ভূমিকে নীল রঙে মুড়ে দেয়। মুন্নারে অবস্থিত দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আনামুদি। ট্রেক করার জন্য আনামুদি একটি আদর্শ স্থান। এছাড়াও মুন্নারে গেলে দেখা যেতে পারে ইরাভিকুলাম ন্যাশনাল পার্ক, যেখানে বিরল প্রজাতির নীলগিরি থার, দুষ্প্রাপ্য প্রজাপতি, বিভিন্ন ধরনের জন্তু এবং পাখি দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও মাততুপেট্টি, কেরলের প্রথম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প পিল্লভাসল, টপ স্টেশন, চা-মিউজিয়াম, চিন্নাকনাল, আনয়িরঙ্গাল ইত্যাদি। একাকী ভ্রমণের জন্য নিরাপদ এই শৈলশহরে ঘূর্ণায়মান চা-বাগান, জলপ্রপাত দেখতে এবং চোখের আরাম নেওয়ার জন্য আর তার সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা পেতে হলে অবশ্যই মুন্নার আসতেই হবে।
পণ্ডিচেরি
একাকী আরামদায়ক এবং সংস্কৃতিভাবে সমৃদ্ধ ভ্রমণের জন্য পণ্ডিচেরি একটি আদর্শ জায়গা। ফরাসি উপনিবেশিক স্থাপত্য শান্ত সৈকত এবং বোহেমিয়াম পরিবেশের কারণে এই শহরটি ভারতীয় এবং ইউরোপীয় প্রভাবের এক অনন্য মিশ্রণ প্রদান করে। একাকী মহিলা-ভ্রমণকারীরা মনোমুগ্ধকর রাস্তাগুলি ঘুরে দেখতে পারেন আধ্যাত্মিক প্রশান্তি পেতে অরবিন্দ আশ্রম পরিদর্শন করতে পারেন সুস্বাদু ফরাসি খাবার উপভোগ করতে পারেন এবং রৌদ্র-ভেজা স্নিগ্ধ সমুদ্র সৈকতে আরাম করতে পারেন। একাকী ভ্রমণকারীরা ফরাসি ও তামিল সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মিশ্রণ উপভোগ করতে পণ্ডিচেরির খাবার, গ্রামীণ জীবন, পুরাতন রেসিপি, রান্নার ডেমো, বুনন কর্মশালা, ভাস্কর, শিল্পসঙ্গীত, স্থানীয় খেলা পেটাঙ্ক, পুতুলের প্রদর্শনী এবং কর্মশালার সঙ্গে হাতে তৈরি কাগজের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা এবং আরও অনেক কিছু দেখার সুযোগ করে নিতে পারেন। এছাড়াও পণ্ডিচেরিতে রয়েছে ১৭শো শতাব্দীর কিছু হিন্দু মন্দির এবং ১৮শো বা ১৯শো শতাব্দীর গির্জা। এছাড়াও পণ্ডিতচেরিতে রয়েছে ঋষি অরবিন্দের আশ্রম। এটাও পর্যটকদের কাছে সমান জনপ্রিয়।
হৃষীকেশ, উত্তরাখণ্ড
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত হৃষীকেশ একটি আধ্যাত্মিক আশ্রয়স্থল। একাকী মহিলা ভ্রমণকারীদের জন্য এটি একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। যাঁরা নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় একাকী কাটাতে চান অর্থাৎ প্রশান্তি এবং আত্ম আবিষ্কার-এর সন্ধান করে তাঁদের জন্য হৃষীকেশ অত্যন্ত উত্তম একটি জায়গা। ষাটের দশকের শেষের দিকে বিটলস মহর্ষি মহেশ যোগীর আশ্রম পরিদর্শন করার পর থেকেই হৃষীকেশ আধ্যাত্মিক সাধকদের কাছে এক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আজ এটি ‘বিশ্বের যোগ রাজধানী’ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে, যেখানে অসংখ্য আশ্রম এবং সকল ধরনের যোগ ও ধ্যানের ক্লাস রয়েছে। গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত অপূর্ব পরিবেশ, বনভূমিতে ঘেরা, ধ্যান এবং মন প্রসারের জন্য সহায়ক। এখানে একাকী ভ্রমণ করলে মন শরীর এবং আত্মা পুনর্জীবিত হয়। শহরটি মনোরম সৌন্দর্য এবং গঙ্গা নদীর জন্যও বিখ্যাত। হৃষীকেশে এলে নদীতে নৌকাভ্রমণ এবং ট্রেকিং-এর মতো দুঃসাহসিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

Latest article