ধর্ষণ মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের মন্তব্য আপত্তিকর, ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

সাম্প্রতিককালে নানা আদালতে বিভিন্ন স্পর্শকাতর ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে বিচারব্যবস্থার একাংশকে।

Must read

প্রতিবেদন : সাম্প্রতিককালে নানা আদালতে বিভিন্ন স্পর্শকাতর ইস্যুতে বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে বিচারব্যবস্থার একাংশকে। উত্তরপ্রদেশের একটি ধর্ষণ মামলা নিয়েও সম্প্রতি অতি বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতি। মঙ্গলবার সেই মন্তব্যের উল্লেখ করে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে, বিচারপতিদের অসংবেদনশীল মন্তব্য থেকে বিরত থাকার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের এক ধর্ষণ মামলায় বিচারপতির মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত জানায়, ধর্ষণের মতো সংবেদনশীল বিষয়ে ‘‘মেয়েটি নিজেই বিপদ ডেকেছে’’—এই ধরনের মন্তব্য একেবারেই অনুচিত এবং বিচারপতির চেয়ারে বসে তা করা করা আরও বেশি উদ্বেগজনক। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সুপ্রিম কোর্ট এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে হাইকোর্টের ওই সংক্রান্ত মামলার পরিপ্রেক্ষিতে।

আরও পড়ুন-ক্ষমতা হারানোর পর ভাঙনের মুখে বিজেডি, নবীনকে চ্যালেঞ্জ দলের একাংশের

এর আগে গত ১৭ মার্চ এলাহাবাদ হাইকোর্টের এক আদেশকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। ওই আদেশে বিচারপতি রামমনোহর নারায়ণ মিশ্র বলেছিলেন, “শুধু স্তনে হাত দেওয়া” এবং “একজন কন্যাশিশুর পায়জামার দড়ি ছিঁড়ে ফেলা” ধর্ষণ বা ধর্ষণের প্রচেষ্টা হিসেবে গণ্য হয় না। হাইকোর্টের মতে, এটি যৌন নিপীড়নের পরিধিতে পড়ে, যার শাস্তি তুলনামূলকভাবে কম। সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই ওই আদেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। মঙ্গলবার শুনানিতে বিচারপতি বি আর গাভাই এবং এ জি মাসিহের বেঞ্চ আরও একটি মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলেছেন, যেখানে হাইকোর্ট এক ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জামিন দেয় এবং বলে, ‘‘মেয়েটি নিজেই বিপদ ডেকে এনেছে।’’ শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা এই মন্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে জানান, এই ধরনের কথাবার্তা বলতে গেলে সতর্ক থাকা উচিত, বিশেষত বিচারপতির মতো দায়িত্বশীল পদে বসে। সামান্য একটু মন্তব্যেও সুদূরপ্রসারী ভুল বার্তা যেতে পারে। বিচারপতি গাভাই বলেন, এই ধরনের মন্তব্য সমাজে কী বার্তা পাঠায়? আমরা শুধু একটি মামলাই নয়, অন্যান্য মামলাগুলিও খতিয়ে দেখব। সর্বোচ্চ আদালত আরও জানায়, এই বিষয়টি আগেই নথিভুক্ত স্বতঃপ্রণোদিত মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং পরবর্তী শুনানি চার সপ্তাহ পর হবে। উল্লেখ্য, ১৭ মার্চের মামলায় অভিযোগ ছিল, দুই ব্যক্তি এক ১১ বছর বয়সি কন্যাশিশুর স্তনে হাত দেয়, তার পায়জামার দড়ি ছিঁড়ে ফেলে এবং কালভার্টের নিচে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে। ধর্ষণের অভিযোগে ট্রায়াল কোর্ট থেকে জারি হওয়া সমন চ্যালেঞ্জ করে ওই দুই অভিযুক্ত হাইকোর্টে আবেদন করে। সুপ্রিম কোর্টের মতে, বিচার প্রক্রিয়ায় এমন মন্তব্য শুধুমাত্র ভুক্তভোগী নারীদের প্রতি অবিচার করে না, বরং পুরো বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

Latest article