প্রতিবেদন: ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে এবার আমেরিকার বিরুদ্ধে তোপ দাগল রাশিয়া। পুতিনের দেশের অভিযোগ, লোকসভা ভোটে ভারতে নাক গলানোর চেষ্টা করছে বাইডেনের দেশ। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে ‘শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল’। চলমান নির্বাচনী প্রচারে নরেন্দ্র মোদির ভাষণে প্রায়শই শোনা যাচ্ছে, তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এবার মোদির সুরে সুর মেলালো পুতিনের রাশিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ সরাসরি খারিজ করে মোদি সরকারের পাশে দাঁড়াল ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া। খালিস্তানপন্থী মৌলবাদী গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের মার্কিন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ওয়াশিংটন এখনও এই মামলায় ভারতীয় নাগরিকদের জড়িত থাকার কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ সরবরাহ করেনি।
আরও পড়ুন-মোদিরাজ্যে ছাপ্পাভোট, ধৃত ২ বিজেপি সমর্থক
ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন হস্তক্ষেপের অভিযোগ জানিয়ে রুশ সরকারি মুখপাত্র বলেন, আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, ওয়াশিংটন এখনও পান্নুনকে হত্যার পরিকল্পনায় ভারতীয় নাগরিকদের জড়িত থাকার কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দেয়নি। প্রমাণের অভাবে এই বিষয়ে জল্পনা-কল্পনা গ্রহণযোগ্য নয়। রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, মার্কিন ফেডারেল কমিশনের রিপোর্টে ভারতের ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। মোদি জমানায় ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগে আমেরিকা সরব হলেও তাৎপর্যপূর্ণভাবে তা খারিজ করে নয়াদিল্লির পাশেই দাঁড়িয়েছে মস্কো।
রুশ বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় ভারতকে অস্থিতিশীল করতে। এমনকী রাশিয়ার সরকারি মালিকানাধীন নিউজ নেটওয়ার্ক ‘আরটি নিউজ’ জানিয়েছে, রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মনে করেন ওয়াশিংটন ভারতের জাতীয় মানসিকতা এবং ইতিহাস বোঝে না এবং ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে চলেছে। রাশিয়ার মতে, মার্কিন প্রশাসন ভারতের বিকাশের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি জাতীয় মানসিকতা বুঝতে অপারগ এবং তাই তারা রাষ্ট্র হিসাবে ভারতকে অসম্মান করছে। ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (ইউএসসিআইআরএফ)-এর সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগে ভারতের সমালোচনার পরে ভারতের বিদেশমন্ত্রক ওই রিপোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল। মার্কিন কমিশন ভারতকে একটি ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসাবে ঘোষণা করেছিল। চলমান সাধারণ নির্বাচনের প্রেক্ষিতে সেই মার্কিন পর্যবেক্ষণ প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে মোদি সরকারকে। সেই অস্বস্তি কাটাতেই
এবার ভারতের দিকে বন্ধুর হাত বাড়িয়ে দিল রাশিয়া। উল্লেখ্য, ২০১৬ এবং ২০২০ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপন হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল খোদ রাশিয়ার বিরুদ্ধেই। এছাড়াও রাশিয়ায় অ্যালেক্সি নাভালনি-সহ কট্টর পুতিন বিরোধী নেতাদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য সরাসরি ক্রেমলিনকে দায়ী করে আমেরিকা। এবার মোদির পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকাকে জবাব দিল পুতিন প্রশাসন। সেইসঙ্গে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে কিয়েভের পাশে থাকা আমেরিকাকে তোপ দেগে ভারতকে বন্ধুত্বের বার্তা দিল রাশিয়া।