প্রতিবেদন : বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের কাজ নিয়ে ফের প্রশ্ন তোলার একদিন পরেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে কড়া ভাষায় জবাব দিলেন রাজ্যের সদ্যপ্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর নবনিযুক্ত প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। একদিন আগে বিজয়া সম্মেলনে শিল্প সম্মেলনকে সফল করতে সবরকমের সহায়তার আশ্বাস দেওয়ার পর রাতারাতি ১৮০ ডিগ্রি অবস্থান বদলে সম্মেলনের কার্যকারিতা নিয়ে রাজ্যপাল প্রশ্ন তোলায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অমিত মিত্র। সোমবার রাজ্য সরকারের আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে অনুরোধ করেন শিল্প সম্মেলন সফল করতে বিদেশে প্রচারের জন্য রোড শোয়ে অংশ নিতে। সবরকম সহায়তার আশ্বাস দেন রাজ্যপাল নিজেও। সেকথা উল্লেখ করেই এদিন রাজ্যপালকে তীব্র কটাক্ষ করেন অমিত মিত্র।
আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ শুরু মন্ত্রী পুলকের গ্রাম হয়ে উঠবে শহর
বুধবার পাল্টা টুইট করে অমিতবাবু রাজ্যপালের ভোল বদলকে উপন্যাসের ‘ডঃ জ্যাকিল ও মিস্টার হাইডের’ চরিত্রের সঙ্গে তুলনা করেন। পাশাপাশি একই ইস্যুতে গত বছর রাজ্যপালের দেওয়া একই মর্মের একটি চিঠি এবং তার জবাবে দেওয়া তাঁর পাল্টা চিঠিও টুইট করেন তিনি। ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর রাজ্যপালকে দেওয়া সেই চিঠিতে তত্কালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র প্রধানমন্ত্রীর উক্তি মনে করিয়ে লেখেন, যেসব রাজ্য শিল্প সম্মেলন আয়োজন করে তাদের বাহবা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্য সম্মেলন তার উদ্ভাবনী বৈশিষ্টের জন্য দেশ ও বিদেশে বাহবা কুড়িয়েছে। বাণিজ্য সম্মেলনের খতিয়ান তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে ১২,৩২,৬০৩ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। ২০১৫–২০১৮ সালের মধ্যে যে প্রস্তাব এসেছে তার ৫০.২৭ শতাংশ কার্যকর হওয়ার পথে এগোচ্ছে। ২০১৯ সালের সম্মেলনের আসা প্রস্তাবের মধ্যে ৭১,৬৪৬ কোটি টাকার প্রস্তাব কার্যকর হওয়ার পথে। রাজ্য সরকারের আর্থিক নীতি ও বাণিজ্য সম্মেলনের যৌথ অবদানের ফলে ২০১০–১১ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গে জিডিপি-র পরিমাণ ৪.৬ লক্ষ কোটি থেকে ২০১৯–২০ সালে ১২.৫ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। উলেখ্য, অতিমারির আবহে দু বছর স্থগিত থাকার পর আগামী বছর রাজ্যে ফের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। আগামী বছর ২০-২১ এপ্রিল এই দু’দিন বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে নিউ টাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে। সম্মেলন আয়োজনের জন্য একটি নির্দিষ্ট কমিটিও তৈরি করা হয়েছে।